বর্ধমানে কাঞ্চন উৎসবের উদ্বোধনে মাধুরী দীক্ষিত। শনিবার। নিজস্ব চিত্র
উদ্বোধনে নাচ-গানে কাঞ্চন উৎসব মাতিয়ে দিলেন মাধুরী দীক্ষিত। বর্ধমান শহরের কাঞ্চননগরে ১১তম বর্ষের এই উৎসব শুরু হল শনিবার। উদ্বোধন করেন মাধুরী। ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, স্বপন দেবনাথ, তপন দাসগুপ্ত, অসীমা পাত্রেরা। উৎসবের বিভিন্ন দিনে আসার কথা বলিউডের শিল্পী সোনম পুরি, অঙ্কিত তিওয়ারি, মিকা সিংহদের।
উৎসব উপলক্ষে ‘কাঞ্চন উৎসব কমিটি’ বৃদ্ধাশ্রম তৈরি করছে। পাঁচতলার বৃদ্ধাশ্রমে একশো জন নিঃসহায় থাকবেন। উৎসব কমিটি জানায়, সে জন্য কারও কাছে অর্থ নেওয়া হবে না। মেলা ও বিভিন্ন পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরে বৃদ্ধাশ্রমের উদ্বোধন হবে। এ ছাড়াও কাঞ্চননগরে ঢোকার আগে রথতলায় তৈরি হয়েছে একটি গেট। কাঞ্চননগরের পথে আঁজিরবাগান ও উদয়পল্লি এলাকায় শ’দুয়েক ত্রিফলা আলো বসিয়েছে পুরসভা।
রথতলা থেকে উৎসবের মাঠ কঙ্কালেশ্বরী কালীতলা পর্যন্ত মূল রাস্তার দু’পাশে বাড়িগুলির দেওয়ােল নীল-সাদা রঙ করেছে উৎসব কমিটি। বাসিন্দারা জানান, আগে রাস্তা চওড়া করার জন্য তাঁরা জায়গা দিয়েছিলেন। অনেকে পাঁচিল ভেঙেও জায়গা দেন। এখন সেখানে রাস্তা চওড়ার পাশাপাশি গাছ লাগিয়ে সৌন্দর্যায়ন হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা পবিত্র গঙ্গোপাধ্যায়, দেবু চন্দ্রেরা জানান, বর্ধমানের ইতিহাস অনুযায়ী, রাজ পরিবার শুরু হয়েছিল কাঞ্চননগর থেকে। দামোদরের বন্যার জন্যে তাঁরা উঠে যান রাজবাটিতে। তখন থেকেই বর্ধমান শহরের প্রসার ঘটতে শুরু করে। ছুরি-কাঁচির জন্য কাঞ্চননগরের নাম ছিল। কিন্তু তাঁদের দাবি, এক সময়ে এলাকা জৌলুসহীন হয়ে পড়েছিল। কাঞ্চন উৎসবের জন্যই জেলায় কাঞ্চননগরের নাম ফের উঠে এসেছে। তাঁদের আরও দাবি, সৌন্দর্যয়ানের কারণেই নীল-সাদা রং করার ক্ষেত্রে কেউ আপত্তি জানাননি। শুধু রং নয়, অনেক বাড়ির পাঁচিলও তৈরি করে দিয়েছে উৎসব কমিটি।
এই উৎসবের সভাপতি তথা বিদায়ী কাউন্সিলর খোকন দাস বলেন, “এলাকার মূল রাস্তার দু’ধারে শ’তিনেক বাড়ির দেওয়ালে নীল-সাদা রং করা হয়েছে। তার আগে বাড়ির মালিকদের অনুমতি নিয়েছি। সে জন্য আমাদের প্রায় ১০ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে।’’ তিনি জানান, কাঞ্চন উৎসবকে সামনে রেখে কাঞ্চননগরের গৌরব ফিরিয়ে আনাই তাঁদের লক্ষ্য। মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর দেড়শোতম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ প্যাভিলিয়ন করা হয়েছে উৎসবে। রয়েছে ফুল ও রঙিন মাছের প্রদর্শনীও। এ দিন উদ্বোধনে প্রচুর মানুষ উৎসবে ভিড় জমিয়েছিলেন।