মমতা বন্দোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
পশ্চিম বর্ধমান ও পুরুলিয়া জেলাকে শিল্প-সম্পর্কে বাঁধতে চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার জামুড়িয়ার শ্রীপুর এরিয়া স্টেডিয়ামে প্রকল্প উদ্বোধন, শিলান্যাস ও পরিষেবা প্রদানের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘পানাগড় থেকে দুর্গাপুর হয়ে রঘুনাথপুর পর্যন্ত চলে যাবে ইন্ডাস্ট্রিয়াল করিডর।’’
মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছেন পশ্চিম বর্ধমানের শিল্পপতিরা। তবে তাঁদের আর্জি, পানাগড় থেকে দুর্গাপুর, আসানসোল হয়ে পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর পর্যন্ত ওই করিডরের সঙ্গে জুড়ে নেওয়া হোক বাঁকুড়া, বীরভূমকেও। তা হলে উপকৃত হবে চার জেলা।
মুখ্যমন্ত্রীর গত জেলা সফরের সময়ে শিল্পাঞ্চলের একাধিক বণিকসভা এই প্রস্তাব দিয়েছিল। এ বার তিনি নিজেই বিষয়টি উল্লেখ করায় খুশি শিল্পপতিরা। দক্ষিণবঙ্গের ন’টি জেলার সমন্বয়ে তৈরি একটি বণিক সংগঠনের সম্পাদক সুব্রত দত্ত বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আমাদের আবেদন মঞ্জুর করেছেন, এটা ভেবেই ভাল লাগছে। এর ফলে দক্ষিণবঙ্গের অর্থনীতিই উপকৃত হবে।’’
তবে শিল্প করিডরের সঙ্গে সঙ্গে এলাকার পরিকাঠামো তৈরির উপরেও সরকারকে জোর দিতে হবে বলে মনে করছেন রানিগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি সন্দীপ ভালোটিয়া। তিনি বলেন, ‘‘এর জন্য আসানসোল থেকে পুরুলিয়া যাওয়ার আরও একটি রাস্তা ও দামোদরের উপরে একটি সেতু তৈরি করা দরকার।’’ জামুড়িয়া চেম্বার অব কর্মাসের তরফে অজয় খেতান আবার মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘‘জামুড়িয়ার দরবারডাঙায় সেতুটি তৈরি হলে শিল্প করিডরের সঙ্গে বীরভূমকেও জুড়ে ফেলা যাবে।’’
বণিকসভার সদস্যেরা জানান, প্রায় ১০ বছর আগে তৎকালীন সরকার আসানসোল-দুর্গাপুরের সঙ্গে বাঁকুড়া-পুরুলিয়ার শিল্প করিডর তৈরির পরিকল্পনা নেয়। কিন্তু সেই কাজ এগোয়নি। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণা প্রসঙ্গে আসানসোলের প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরী বলেন, ‘‘এ সবই চমক দেওয়ার চেষ্টা।’’ কেন তা? বংশগোপালবাবুর ব্যাখ্যা, পানাগড়ের সঙ্গে আসানসোল-দুর্গাপুর হয়ে বাঁকুড়া-পুরুলিয়ায় বৃহৎ একটি শিল্প করিডর ও তালুক গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত আগেই নেওয়া হয়েছিল। তার জন্য আসানসোলের ইসমাইল হয়ে বার্নপুরের দামোদর নদ লাগোয়া কালাঝরিয়া পর্যন্ত নতুন একটি ৬০ ফুটের রাস্তা তৈরির জন্য জমিও অধিগ্রহণ করা হয়। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, কালাঝরিয়া থেকে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া পর্যন্ত নতুন সেতু তৈরি হবে। কিন্তু রাজ্যে পালাবদলের পরে সে সব কাজ বিশ বাঁও জলে চলে যায় বলে অভিযোগ বংশগোপালবাবুর। যদিও যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন বলেন, ‘‘এ সবই অপপ্রচার। প্রকাশ্যসভায় মুখ্যমন্ত্রী যখন ঘোষণা করেছেন, তখন শিল্প করিডর হবেই।