—প্রতীকী চিত্র।
‘নির্মল ব্লক’ রায়না ২-য়ে মাঠে মাঠে শৌচকর্ম করতে গিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। অভিযোগ, সেই ‘অপরাধে’ তিন মাস রেশন তুলতে দেওয়া হয়নি ওই পরিবারকে। সোমবার রেশন চালুর দাবিতে স্থানীয় বিডিও এবং কাইতির পঞ্চায়েত প্রধানকে চিঠিও দিয়েছেন তাঁরা।
জানা যায়, ঘটনার সূত্রপাত কয়েকমাস আগে। বেজপাড়ার প্রৌঢ় দম্পতি সুনীল মণ্ডল ও সুমিত্রা মণ্ডলের ছেলে, হেমন্ত মণ্ডল মাঠে শৌচকর্ম করতে গেলে পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী গৌরাঙ্গ দাস আপত্তি জানান। দু’জনের মধ্যে হাতাহাতিও হয়। বিষয়টি থানা পর্যন্ত গড়ায়। হেমন্ত শর্তাধীন জামিন পান। অভিযোগ, এরপর থেকেই ওই পরিবারের রেশন বন্ধের ফতেয়া জারি করেন পঞ্চায়েত প্রধান তপতী দলুই।
যদিও চিঠিতে ওই দম্পতির দাবি, তাঁদের ছেলে জলবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ায় বারবার শৌচাগারে যেতে হচ্ছিল। বাড়ির অন্য লোক শৌচাগারে থাকায় বাধ্য হয়ে একদিন মাঠে ছুটেছিলেন তিনি। ছেলের ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়ে ভবিষ্যতে এ ধরণের ঘটনা ঘটবে না বলেও চিঠিতে জানিয়েছেন তাঁরা।
ঘটনায় ক্ষুব্ধ পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবু টুডু। তিনি বলেন, “গোটা জেলায় সচেতনতা প্রচার করে কয়েক হাজার শৌচাগার নির্মাণ হয়েছে। কিন্তু রেশন বন্ধ করার অধিকার কে দিল!” আজ, মঙ্গলবার বিডিও এবং পঞ্চায়েত প্রধানের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি নিষ্পত্তি করবেন বলেও তাঁর আশ্বাস। যদিও ওই প্রধান তপতী দলুইয়ের সাফ কথা, ওই পরিবারকে শৌচাগার ব্যবহারের নিশ্চয়তা দিয়ে মুচলেকা দিতে হবে। তা না দিলে রেশন বন্ধ থাকবে।
পূর্ব বর্ধমান এখনও ‘নির্মল জেলা’ ঘোষিত হয়নি। নির্মল বাংলা মিশনের লক্ষ্যমাত্রা মেনে শৌচাগার তৈরি সম্পূর্ণ হয়েছে বলে রাজ্যে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। এখনও যে সব পরিবার ‘শৌচাগারহীন’, তাঁদের একশো দিনের প্রকল্পে শৌচাগার তৈরি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে মাঠে-ঘাটে শৌচাগার বন্ধ করতেই পঞ্চায়েত এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মনে করছেন গ্রামের একাংশ। প্রধানেরও দাবি সেটাই।
বিডিও দীপ্যময় মজুমদার জানান, নির্মল মিশন বাংলা প্রকল্পে বাধা দেওয়ার জন্য রেশন বন্ধ করা হয়েছিল। চিঠি পেয়ে প্রধানকে রেশন চালু করার জন্য বলা হয়েছে।