বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ছেলের মৃত্যু হয়েছিল। সেই ঘটনার মাস দেড়েক পরে এ বার সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরিতে সোশ্যাল মিডিয়ার দ্বারস্থ হলেন বাবা, দুর্গাপুরের শুভাশিস ঘোষ। সাড়া দিয়েছেন মানুষও। ফেসবুকে শুভাশিসবাবুর পোস্টের তলায় তাঁদের অনেকেরই আবেদন,
‘সাবধানতা দরকার।’
গত ২১ জুন সন্ধ্যায় বেনাচিতির গুরুদ্বার রোডে একটি বাড়ির তিনতলায় টিউশন পড়তে যায় সিটি সেন্টারের একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র দেবজ্যোতি ঘোষ। ঘরের বারান্দার খুব কাছ দিয়ে যাওয়া বিদ্যুতের উচ্চ পরিবাহী তারের সংস্পর্শে এসে মৃত্যু হয় তার।
এই ঘটনার পরে ১৯ জুলাই শুভাশিসবাবু আদালতে বিদ্যুৎ দফতর, কোচিং সেন্টারের পরিচালক ও বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে নানা বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন বলে জানান তাঁর আইনজীবী কল্লোল ঘোষ।
এই পোস্টই করেছেন শুভাশিসবাবু।
ছেলের মৃত্যু প্রসঙ্গ তুলে বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে নাগরিক-সচেতনতা গড়ে তুলতে ২১ জুলাই ফেসবুকে ইংরেজি ও বাংলায় দু’টি পোস্ট করেন শুভাশিসবাবু। সেখানেই সচেতনতামূলক কিছু বিষয় উঠে আসে। যে তিন তলার বাড়িতে দেবজ্যোতি পড়তে গিয়েছিল, সেখানে বারান্দার দিকে ‘সুরক্ষামূলক ঘেরাও’ দেওয়া ছিল না বলে জানিয়েছেন শুভাসিসবাবু। তা ছাড়া বিদ্যুতের তার যাতে মানুষের সংস্পর্শে না আসে, তার জন্যও ব্যবস্থা নেওয়া দরকার বলে, পোস্টে জানিয়েছেন তিনি।
বিদ্যুৎ দফতর জানায়, সব লাইনে বিশেষ ‘ইনসুলেটেড কেবল’ লাগানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যদিও দেবজ্যোতি যেখানে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়, শুক্রবার সেখানে কোনও উদ্যোগ নজরে পড়েনি।
পোস্টের শেষে শুভাশিসবাবুর আবেদন, ‘‘আমার ছেলের যা হয়েছে তা অন্য যে কোনো শিশুর ও হতে পারত। হয়ত সে শিশু হতো আপনারই কোনো আপনজন।’’ এই পোস্টটি শুক্রবার রাত পর্যন্ত শেয়ার করেছেন প্রায় ১৭০০ জন। চিত্রা ভট্টাচার্য নামে এক জন ‘কমেন্ট’ করেছেন, ‘এত বাচ্চা যেখানে রোজ আসে সেখানে অবশ্যই উপযুক্ত সাবধানতা নেওয়া উচিত ছিল।’
যদিও কোচিং সেন্টারের অন্যতম শিক্ষক রাহুল রায়ও এ দিন বলেছেন, ‘‘চরম মর্মান্তিক ঘটনা। এমন যেন আর কখনও কারও সঙ্গে না হয়।’’