বহু স্কুলেই বস্তাবন্দি বই, ক্ষুব্ধ কর্তা

বাবুরবাগের ওই স্কুল ছাড়াও আরও দুটি স্কুল পরিদর্শনের সময় বস্তাবন্দি বই উদ্ধার করেছিলেন খগেনবাবু। জেলা পরিদর্শক (মাধ্যমিক) দফতর সূত্রে জানা যায়, একের পর এক স্কুল থেকে বই উদ্ধার করার পরে ঘনিষ্ঠ মহলে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। দফতর থেকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলার বিভিন্ন স্কুল নির্দিষ্ট ফর্মে প্রকৃত পড়ুয়ার চেয়ে বেশি পড়ুয়া দেখিয়ে বই তুলে নিয়ে গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৭ ০১:২৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

স্কুল পরিদর্শনের সময় আচমকা ডাঁই করা বস্তায় চোখ চলে গিয়েছিল তাঁর। এগিয়ে বস্তায় হাত দিতেই ঢোক গিলতে শুরু করেন শিক্ষকেরা। দড়ি বাঁধা বস্তার মুখ খুলতেই বেরিয়ে পড়ে এক গাদা পাঠ্যবই। থম মেরে যান খোদ স্কুল পরিদর্শকই (মাধ্যমিক)।

Advertisement

তাহলে কী পড়ুয়াদের বই বিলি হয়নি? পঞ্চাম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত যেখানে বইয়ের টানাটানি পড়ে যায়, সেখানে বই নষ্ট করা কেন? জবাব নেই বর্ধমান শহরের বাবুরবাগের ওই হাইস্কুলের শিক্ষকদের কাছে। পরিদর্শক খগেন্দ্রনাথবাবু শুধু বলেন, ‘‘উদ্ধার হওয়া বইগুলি আগামী বছর পড়ুয়াদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।” পরে অবশ্য ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানান, সব পড়ুয়ার হাতে বই তুলে দেওয়ার পরে বাড়তি কিছু বই ছিল। সেগুলি বস্তাবন্দি করে রাখা হয়েছিল।

বাবুরবাগের ওই স্কুল ছাড়াও আরও দুটি স্কুল পরিদর্শনের সময় বস্তাবন্দি বই উদ্ধার করেছিলেন খগেনবাবু। জেলা পরিদর্শক (মাধ্যমিক) দফতর সূত্রে জানা যায়, একের পর এক স্কুল থেকে বই উদ্ধার করার পরে ঘনিষ্ঠ মহলে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। দফতর থেকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলার বিভিন্ন স্কুল নির্দিষ্ট ফর্মে প্রকৃত পড়ুয়ার চেয়ে বেশি পড়ুয়া দেখিয়ে বই তুলে নিয়ে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, বাবুরবাগের ওই স্কুলে খাতায়-কলমে পড়ুয়ার চেয়ে বাস্তবে পড়ুয়ার সংখ্যাও অনেক কম। ছাত্রের চেয়ে অনেক বেশি শিক্ষক রয়েছে বলেও পরিদর্শক দফতর থেকে জানানো হয়েছে। এক কর্তার কথায়, “ওই স্কুলে প্রকৃতপক্ষে ১২ জন শিক্ষক থাকা দরকার। সেই কথা মাথায় রেখে বাকি শিক্ষকদের অন্যত্র বদলি করে দেওয়ার জন্য শিক্ষা দফতরে আর্জি জানানো হবে।” ওই পরিদর্শনের পরে খগেন্দ্রনাথবাবু জেলার প্রতিটি সহকারী পরিদর্শক (এসআই) ও অবর পরিদর্শকের (এআই) কাছে বই উদ্ধার করার নির্দেশ পাঠিয়েছিলেন। তাতে জেলার বিভিন্ন স্কুল থেকে কয়েক’শো বই উদ্ধার করা হয়েছে।

Advertisement

প্রতি বছরই পাঠ্যপুস্তকের অভাবে জেলার বহু স্কুলে সমস্যায় পড়েন শিক্ষকেরা। কম বই থাকায় পরীক্ষাও পিছিয়ে দিতে হয়েছে স্কুলে, এমন ঘটনাও ঘটেছে। সেখানে এ ভাবে স্কুলের ভিতর বই ফেলে রাখার ঘটনায় ক্ষুব্ধ রাষ্ট্রীয় মিশন সাক্ষরতা অভিযানের কর্তারাও। কমিটির সরকারি প্রতিনিধি রথীন মল্লিক বলেন, “অতিরিক্ত পড়ুয়া দেখিয়ে এ ভাবে পাঠ্যপুস্তক স্কুলে রাখার মানেটা কী? বিভিন্ন কর্মশালায় এ নিয়ে স্কুলগুলিকে সতর্ক করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন