পাইপ ফেটে জল দূষণের আশঙ্কা

পেটের রোগে আক্রান্ত বহু

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বুধবার থেকেই খাঁ পাড়া, সদগোব পাড়া, বাঙালপাড়ার কিছু লোকের বমি, পায়খানা শুরু হয়। প্রথমে তেমন আমল না দিলেও বাড়তে থাকে আক্রান্তের সংখ্যা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পূর্বস্থলী শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৭ ০১:৫৯
Share:

স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আক্রান্তেরা। নিজস্ব চিত্র

পেটের রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি একই এলাকার প্রায় ৯০ জন। অসুস্থ অন্তত তিনশো জন। স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, জল দূষণ থেকেই আন্ত্রিক ছড়িয়েছে পূর্বস্থলীর পলাশপুলি এলাকায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শুক্রবার দুপুরে এখটি মেডিক্যাল টিম নিয়ে এলাকায় পৌঁছন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায়। পাঠানো হয়েছে পরিস্রুত জলও।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বুধবার থেকেই খাঁ পাড়া, সদগোব পাড়া, বাঙালপাড়ার কিছু লোকের বমি, পায়খানা শুরু হয়। প্রথমে তেমন আমল না দিলেও বাড়তে থাকে আক্রান্তের সংখ্যা। একই উপসর্গ নিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি হন ৪৫ জন। এ দিন পূর্বস্থলী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় চাহিদার তুলনায় শয্যা কম থাকায় একটি হলঘরের মেঝেয় রোগীদের শুইয়ে স্যালাইনের বোতল ঝুলিয়ে চলছে চিকিৎসা। সমস্ত ওয়ার্ডেই গিজগিজ করছে রোগী। পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্লকের অন্য এলাকা থেকেও নার্স আনা হয়েছে। চিকিৎসা করছেন কালনার এসিএমওএইচ চিত্তরঞ্জন দাস, বিএমওএইচ মৃণালকান্তি খাঁ। হাসপাতালে রোগীদের সামলে গ্রামেও ছুটছেন তাঁরা। এসিএমওএইচ বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাঁরা ভর্তি রয়েছেন তাঁদের অবস্থা স্থিতিশীল। অনেককে ছেড়েও দেওয়া হচ্ছে। আমাদের অনুমান জল দূষণ থেকেই রোগ ছড়িয়েছে।’’ তাঁর দাবি, ওই এলাকায় জল সরবরাহ হয় জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের একটি প্রকল্প থেকে। ওই জল পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। বিএমওএইচ জানান, গ্রামে ঘুরে ব্লিচিং ছড়ানোর পাশাপাশি ওষুধ বিলি করা হচ্ছে। জল ফুটিয়ে পান করার মতো স্বাস্থ্যবিধিও বাতলে দেওয়া হচ্ছে। মাইকে প্রচারেরও সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে তাঁর দাবি।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, যে প্রকল্প থেকে জল সরবরাহ হয় সেটি ১৯৭৮ সালে তৈরি। পাইপ লাইন, জলাধার বহু বছর সংস্কার হয়নি। অনেক সময় যানবাহনের চাপে পাইপ ফেটে যায়। স্বাস্থ্য দফতরের আশঙ্কা, ফাটা অংশ থেকে জল দূষণ হয়ে এমন বিপত্তি ঘটেছে। আপাতত ওই জলাধার থেকে সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে।

Advertisement

এ দিকে, জল সরবরাহ বন্ধ থাকায় সঙ্কট দেখা দিয়েছে কিছু এলাকায়। অনেকেই বাজার থেকে চড়া দরে জল কিনে খাচ্ছেন। পলাশপুলির পাড়াগুলিতে অপরিষ্কার নিকাশি নালাও চোখে পড়েছে। পূর্বস্থলীর পঞ্চায়েত প্রধান পঙ্কজ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জলের চাহিদা মেটাতে স্থানীয় স্কুলের আর্সেনিক মুক্ত পানীয় জলের নলকূপ ২৪ ঘণ্টা খুলে রাখা হয়েছে। পঞ্চায়েতের তরফে তিনটি ট্যাঙ্কে করে জল পাঠানো হয়েছে।’’

এলাকার প্রাক্তন বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘বছর দেড়েক আগে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে বিষয়টি জানানো হয়েছিল। ওই প্রকল্পের পাইপ লাইন বদলানো-সহ বেশ কিছু সংস্কারের জন্য টাকা বরাদ্দ হয়েছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন