ক্ষোভ পরিকাঠামো নিয়ে

ষষ্ঠ সন্তান জন্ম দিতে এসে মৃত্যু

পরিকাঠামো না থাকায় প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার এমনই অভিযোগ উঠেছে রানিগঞ্জের আলুগড়িয়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বিরুদ্ধে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রানিগঞ্জ শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৭ ১৩:৩৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

পরিকাঠামো না থাকায় প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার এমনই অভিযোগ উঠেছে রানিগঞ্জের আলুগড়িয়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বিরুদ্ধে। স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের পাল্টা দাবি, ষষ্ঠ বার সন্তানসম্ভবা ছিলেন ওই মহিলা। সেই তথ্য লুকিয়ে প্রসূতিকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করিয়েছিলেন পরিবারের সদস্যরা। শুরুতেই সেই তথ্য জানালে উপযুক্ত পরিকাঠামো থাকা আসানসোল জেলা হাসপাতালে প্রসূতিকে স্থানান্তরিত করানো যেত।

Advertisement

রানিগঞ্জের হুসেনগরের বাসিন্দা, পেশায় টোটো চালক আফতাব আলম জানান, বৃহস্পতিবার তাঁর স্ত্রী সাবিনা খাতুনকে (৩৫) ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়। শুক্রবার সকাল সাড়ে ছটা নাগাদ সেখানেই একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন সাবিনা।

মৃতার পরিবারের লোক জন জানান, প্রসবের সময়ে রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ায় সাবিনাকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা সাবিনাকে মৃত বলে জানান। মৃতার ভাই ইসলাম খানের অভিযোগ, ‘‘স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিকাঠামো নেই বলেই এমনটা হয়েছে। আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে।’’ দেহটির ময়না-তদন্ত করা হয়েছে। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে রানিগঞ্জ থানা।

Advertisement

এই ঘটনার পরে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিকাঠামোহীনতার কথা মেনে নিয়েছেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। কিন্তু তার পরে বিএমওএইচ মনোজ শর্মার পাল্টা দাবি, ‘‘প্রসূতি ষষ্ঠ বার সন্তানসম্ভবা ছিলেন। শারীরিক ভাবেও উনি অত্যন্ত দুর্বল ছিলেন। প্রসবের পরে ‘পোস্ট পারটাম হেমারেজ’ হয়েছিল। এরপরে প্রসূতির শরীরে রক্ত ঢোকানোর পরে দরকারে অস্ত্রোপচার করতে হতে পারে। এ সবের পরিকাঠামো নেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।’’ এমনকী ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অস্ত্রোপচার করে প্রসবের ব্যবস্থাও নেই বলে জানা গিয়েছে।

ওই প্রসূতির প্রসবের সময়ে উপস্থিত ছিলেন চিকিৎসক রাজকুমার ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিস্তারিত জানেয়েছি।” পশ্চিম বর্ধমানের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস হালদারও প্রসূতির পরিবারের ‘সচেতনতা’র বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘প্রসূতিকে ভর্তি করানোর সময়ে পরিবারের লোক জন বলেন, উনি ‘দ্বিতীয়বার সন্তানসম্ভবা’। পরিবারের লোক জন প্রথমেই যদি জানাতেন, উনি ষষ্ঠ বারের প্রসূতি, তা হলে তাঁকে জেলা হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হতো। এমন দুঃখজনক পরিণতিও হয়তো আটকানো যেত।” তবে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পরিকাঠামো না থাকার বিষয়টি দেবাশিসবাবু মানতে চাননি। স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের দাবি প্রসঙ্গে মৃতার স্বামী আফতাব বলেন, ‘‘লজ্জায় বলতে পারিনি স্ত্রী ষষ্ঠ বার সন্তানসম্ভবা। সেটা বললে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তিও হয়তো করা হতো না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন