পরিবহণে ‘বাধা’, শুরু উত্তোলন

জমিদাতা বিমল দত্ত, পীযূষ মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘খনির স্বার্থে কয়লা তুলতে বাধা দেওয়া হবে না। তবে নিয়োগপত্র হাতে না পাওয়া পর্যন্ত কয়লা পরিবহণ করতে দেওয়া হবে না।’’

Advertisement

সুশান্ত বণিক

কুলটি শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৯ ০৫:০২
Share:

টানা ছ’দিন বন্ধ থাকার পরে বুধবার অবশেষে কুলটির দামাগড়িয়া খোলামুখ খনিতে জোরকদমে শুরু হল কয়লা উত্তোলন। ছবি: পাপন চৌধুরী

জমিদাতাদের বিক্ষোভের জেরে টানা ছ’দিন বন্ধ ছিল কয়লা উত্তোলন ও পরিবহণ। এই পরিস্থিতিতে বিসিসিএলের কুলটির দামাগড়িয়া খোলামুখ খনিটি বন্ধের কথা জানিয়েছিলেন কর্তৃপক্ষ। শেষমেশ বুধবার বিক্ষোভ-অবস্থান তুলে নেওয়ায় ফের শুরু হল কয়লা উত্তোলন। তবে পরিবহণ চালু না হওয়ায় এখনও চিন্তা রয়েছে বলে খনি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।

Advertisement

গত বৃহস্পতিবার থেকে বিক্ষোভ শুরু করেছিলেন প্রায় তিরিশ জন জমিদাতা। তাঁদের অভিযোগ, দামাগড়িয়া খোলামুখ খনিটি সম্প্রসারণের জন্য দু’বছর আগে জমি অধিগ্রহণ করে বিসিসিএল। ওই সময়ের চুক্তি অনুযায়ী, জমির মূল্য-সহ দু’একর জমি পিছু এক জনকে চাকরিতে নিয়োগ করার কথা জানান খনি কর্তৃপক্ষের। জমিদাতাদের অভিযোগ, জমির মূল্য মিললেও চাকরি মেলেনি। কর্তৃপক্ষ তিন মাসের মধ্যে জমিদাতাদের দাবি মেটানোর আশ্বাস দেওয়ার পরে অনড় থাকেন জমিদাতারা।

এই পরিস্থিতিতে আর্থিক ক্ষতির কথা ভেবে খনি বন্ধ করার কথা জানায় বিসিসিএল। তার পরেই জমিদাতা ও খনিকর্তাদের বৈঠক হয়। খনির ম্যানেজার ধর্মেন্দ্র তিওয়ারি জানান, জমিদাতারা কয়লা উত্তোলনের প্রস্তাব দিয়ে আন্দোলন তুলে নিয়েছেন। তবে দাবি না মেটা পর্যন্ত কয়লা পরিবহণ করতে দেবেন না বলে জানিয়েছেন। ধর্মেন্দ্রবাবু বলেন, ‘‘চাকরিতে নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তিন মাসের মধ্যে তাঁদের দাবি পূরণ হবে।’’

Advertisement

তবে এই পরিস্থিতিতে বুধবার সকালে ওই কোলিয়ারিতে স্বাভাবিক কাজকর্ম শুরু হয়েছে। মাটি ও কয়লা কাটার যন্ত্র নামিয়ে জোরকদমে চলছে কয়লা উত্তোলন। শ্রমিকেরা জানান, কোনও রকম বাধা ছাড়াই কাজ করেছেন তাঁরা। জমিদাতা বিমল দত্ত, পীযূষ মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘খনির স্বার্থে কয়লা তুলতে বাধা দেওয়া হবে না। তবে নিয়োগপত্র হাতে না পাওয়া পর্যন্ত কয়লা পরিবহণ করতে দেওয়া হবে না।’’

কয়লা পরিবহণ শুরু না হওয়ায় সমস্যা হতে পারে বলে মনে করছেন খনি কর্তৃপক্ষ। মূলত তিনটি সমস্যা হতে পারে। প্রথমত, এই খনি থেকে গড়ে প্রতি দিন পাঁচ হাজার টন কয়লা তোলা হয়। সময়মতো সেই কয়লা সরবরাহ না করা গেলে তা রাখা হবে কোথায়, তা নিয়ে চিন্তা থাকছে। দ্বিতীয়ত, এখানে উত্তোলন করা কয়লার বেশির ভাগই দেশের নানা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে সরবরাহ করা হয়। ফলে সেখানে কয়লা না গেলে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তৃতীয়ত, শুধু কয়লা উত্তোলন করলেই হবে না। চুক্তি মতো বিভিন্ন সংস্থায় সময়ে কয়লা পাঠাতে না পারলে আর্থিক ক্ষতি তো হবেই। সেই সঙ্গে চুক্তি লঙ্ঘনের জন্য জরিমানা দিতে হবে। তবে ধর্মেন্দ্রবাবুর আশা, ‘‘উত্তোলন শুরু হয়েছে। পরিবহণের কাজ যাতে শুরু করা যায়, তার জন্য জমিদাতাদের বোঝাব। আশা করি সমস্যা মিটবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন