নাবালিকা বোনকে বাবা জোর করে বিয়ে দিচ্ছে বলে থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন দিদি। তার ভিত্তিতেই বিয়ে রুখে ওই নাবালিকার বাবা ও হবু পাত্রকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার দু’জনকেই গলসির সরগ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার আদালতে তোলা হলে ১৪দিনের জেল হেফাজত হয় তাদের।
বছর বারোর ওই নাবালিকার দিদি পুলিশকে জানিয়েছেন, তাঁর বাবা ও মামা মিলে পঞ্জাবে কর্মরত এক যুবকের সঙ্গে বোনের বিয়ে ঠিক করেন। পাত্রের বাড়ি গলসি স্টেশনের কাছেই। ছেলেটির বয়সও ২১ পেরোয়নি। গোটা বিষয়টি জানার পরে তিনি ও তাঁর স্বামী মিলে নাবালিকা বোনের বিয়ে দিতে নিষেধ করেন বাবাকে। ছোট বয়সে বিয়ের খারাপ দিকগুলি বুঝিয়েও বলেন। কিন্তু তারপরেও বাবা তা মানতে চাননি বলে ওই নাবালিকার দিদির দাবি। এরপরেই থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘বাবাকে বারবার বুঝিয়ে বলেছিলাম বোনের এখনও বিয়ের বয়স হয়নি। চারিদিকে সরকারের তরফে এ নিয়ে প্রচার হচ্ছে। এখনই বিয়ে দিলে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা খারাপ ব্যবহার করতে পারে, নানারকম শারীরিক সমস্যা হতে পারে সে কথাও বলেছিলাম। এমনকী পুলিশ ধরে নিয়ে যাবে বলেও জানিয়েছিলাম। কিন্তু তারপরেও ভিন রাজ্যে থাকে এমন ছেলের সঙ্গে বিয়ে ঠিক করে বাবা ও মামা।’’
পুলিশের দাবি, অভিযোগে এ সবই জানিয়েছেন ওই নাবালিকার দিদি। অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে কম বয়সে বিয়ে দেওয়ার তোড়জোড় করা হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে। এরপরেই ওই নাবালিকার বাবাকে মেয়ের বিয়ে দিতে বারণ করে পুলিশ। কিন্তু তারপরেও সোমবার রাতে মেয়ের ব্যবস্থা করেন তিনি। এ কথা জানার পরেই তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। খোঁজ নিয়ে পাত্রটিকেও ধরা হয়। এ দিন বর্ধমান আদালতের এক বিচারকের কাছে গোপন জবানবন্দি দেয় ওই নাবালিকা। কাঁদতে কাঁদতে মেয়েটি বলে, “আমি বিয়ে করব না। বাবকে তো বলেইছিলাম।” কেন? উত্তর দেওয়ার আগেই মহিলা পুলিশকর্মীরা তাকে গাড়িতে তুলে নেন।। আর বছর পঞ্চান্নর বাবাটি বলেন, “আমরা গরিব মানুষ। এক বেলা খাই তো এক বেলা খেতে পাই না। মা মরা মেয়েটা কার কাছে থাকবে এই ভেবেই বিয়ে দিচ্ছিলাম। কিন্তু বড় মেয়ে যে জেল খাটাবে, তা আগে বুঝিনি।”