—প্রতীকী চিত্র।
ডিএসপি-র জমি দখল করে দোকানঘর নির্মাণের অভিযোগকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার রাতে বোমাবাজিতে উত্তপ্ত হল দুর্গাপুরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের আমড়াই গ্রামের দুর্গামন্দির লাগোয়া এলাকা। গুলিও চলে বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে ডিসি (পূর্ব) অভিষেক মোদীর নেতৃত্বে কমব্যাট ফোর্স পৌঁছয়। বুধবার সকালেও এলাকায় পুলিশি টহল চলে। তবে গুলি চলার কথা মানতে চায়নি পুলিশ।
লোকসভা ভোটের আগে এই ঘটনায় রাজনীতির রং লেগেছে। সিপিএম এবং বিজেপি-র দাবি, স্থানীয় তৃণমূল নেতারা টাকার বিনিময়ে দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের (ডিএসপি) জমি দখল করে নির্মাণের ব্যবস্থা করে দেন। সেই অর্থের বখরা নিয়েই তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে গোলমাল বাধে। তৃণমূলের পাল্টা দাবি, বিজেপি এবং সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ভোটের আগে এলাকা অশান্ত করতে চাইছে। এর মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কোনও বিষয় নেই।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, আমড়াই মোড়ের কাছে ডিএসপি-র ফাঁকা জমি পড়ে রয়েছে। তারই একাংশে স্থানীয় তৃণমূল কর্মী শেখ সফিক দোকান নির্মাণ করছিলেন। অভিযোগ, তাতে বাধা দেন কয়েকজন। মঙ্গলবার রাতে সফিকের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হয়। চলে যাওয়ার সময়ে দুষ্কৃতীরা শূন্যে গুলিও ছোড়ে বলে অভিযোগ সফিকের। তাঁর দাবি, প্রথমে ফোনে তাঁকে কাজ বন্ধ করতে বলা হয়। রাজি না হওয়ায় কয়েকজন দোকানের সামনে তৃণমূলের পতাকা লাগিয়ে দেয়। তিনি কাজ বন্ধ না করায় বোমা ছোড়া হয় বলে তাঁর দাবি।
তৃণমূল সূত্রের দাবি, ইদানীং ওই এলাকায় দলের দুই নেতার মধ্যে গোলমাল চলছে। সফিক এক নেতার ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। ওই দুই গোষ্ঠীর মধ্যেই অশান্তি বাধে বলে স্থানীয় সূত্রের দাবি। আহত হয়ে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি হন শেখ সামিনুর নামে এক গ্রামবাসী। পুলিশ ও কমব্যাট ফোর্স গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। গ্রামে পুলিশ পিকেট বসানো হয়।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এলাকায় যান পুরসভার মেয়র পারিষদ তথা তৃণমূল নেতা প্রভাত চট্টোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, ‘‘ভোটের আগে এলাকার শান্তি নষ্ট করতে বিজেপি এবং সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে।’’ বিজেপি নেতা অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার তৃণমূল নজর ঘোরাতে আমাদের বিরুদ্ধে আঙুল তুলছে। মানুষ সব জানেন।’’ সিপিএম নেতা পঙ্কজ রায়সরকারও দাবি করেন, ‘‘বখরা নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ঝামেলার জেরে বোমাবাজি ও গুলি চলেছে।’’ প্রভাতবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বলে এখানে কিছু নেই। আমরা চাই, ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিক পুলিশ।’’