দুর্গাপুরে গণেশ পুজোর চাঁদা না দেওয়ায় মার, গুলি

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি গুরুনানক রোডে একটি নতুন ক্লাব তৈরি হয়েছে। ক্লাবের অদূরেই ডি-সেক্টর মার্কেট। সেখানেই দোকান রয়েছে ক্যাটারিং ব্যবসায়ী অনিল চৌধুরী ও তাঁর ভাইপো ঋকের। পুজোর জন্য সম্প্রতি তাঁদের কাছে ক্লাবের কয়েক জন মোটা টাকা চাঁদা দাবি করে। অনিলবাবুরা জানান, চাহিদামতো চাঁদা দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৮ ০৬:০১
Share:

এই দোকানেই গোলমাল হয় বৃহস্পতিবার রাতে। নিজস্ব চিত্র

পাড়ার ক্লাবে পুজো হবে। সেই ক্লাবেরই সঙ্গে জড়িত এক ব্যবসায়ী, তাঁর ছেলে এবং ভাইয়ের ছেলে। অথচ, তাঁদের কাছ থেকেই গণেশ পুজোর জন্য চাঁদা চান ক্লাবের কয়েক জন। অভিযোগ, চাহিদামতো চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় ওই ব্যবসায়ীর ছেলেকে মারধর, দোকানে ভাঙচুর, এমনকি দোকান লক্ষ করে গুলি ছোড়া হয়। বৃহস্পতিবার রাতে দুর্গাপুরের ডিএসপি টাউনশিপের এ-জোনের গুরুনানক রোড লাগোয়া ডি-সেক্টর মার্কেট এলাকার ঘটনা।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি গুরুনানক রোডে একটি নতুন ক্লাব তৈরি হয়েছে। ক্লাবের অদূরেই ডি-সেক্টর মার্কেট। সেখানেই দোকান রয়েছে ক্যাটারিং ব্যবসায়ী অনিল চৌধুরী ও তাঁর ভাইপো ঋকের। পুজোর জন্য সম্প্রতি তাঁদের কাছে ক্লাবের কয়েক জন মোটা টাকা চাঁদা দাবি করে। অনিলবাবুরা জানান, চাহিদামতো চাঁদা দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেওয়া হয়।

অভিযোগ, এর পরে বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় ক্লাবেরই সদস্য বলে পরিচিত কয়েক জন যুবক দোকানে আসে ও অনিলবাবুর খোঁজ করে। সেই সময়ে দোকানে ছিলেন অনিলবাবুর ছেলে ও তাঁর ভাইপো। ঋক জানান, আচমকা ওই দলটি কাকার নামে কটূক্তি করে। ঋকের অভিযোগ, ‘‘কটূক্তির প্রতিবাদ করায় কাকার ছেলেকে ওই যুবকেরা মারধর করে। ভাঙচুর চালায় দোকানে। আমাকে দোকান বন্ধ করতে বলে।’’ যুবকদের কথামতো দোকানের শাটার নামিয়েও দেওয়া হয়। শাটার অর্ধেকটা নামানো হয়েছে, এমন সময়ে ফের শুরু হয় গোলমাল। ঋকের অভিযোগ, ‘‘অন্তত তিন রাউন্ড গুলি ছো়ড়ে ওই যুবকেরা। দু’টো গুলি শাটারে লাগে। একটা গুলি আমার পাশ গিয়ে বেরিয়ে যায়।’’ ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় আসে দুর্গাপুর থানার পুলিশকর্মীরা। তদন্তকারীরা জানান, ঘটনায় জড়িত সন্দেহে রাতেই পাঁচ জনকে আটক করা হয়েছে। এলাকায় আসেন ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রাজীব ঘোষ।

Advertisement

কিন্তু কেন এমন ঘটনা? এলাকাবাসীর একাংশ জানান, স্থানীয় ওই যুবকেরা অধিকাংশই মত্ত ছিল। তাদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ না থাকলেও ওই যুবকেরা প্রায়শই পাড়ায় নানা বিষয়ে ‘দাদাগিরি’ করে। রাজীববাবুও বলেন, ‘‘যেখানেসেখানে বেআইনি ভাবে মদ বিক্রি করা হচ্ছে। এর ফলে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। পুলিশকে বিষয়টি দেখার জন্য আর্জি জানানো হয়েছে।’’ শুক্রবার সকালে এলাকায় যান মেয়র পারিষদ পবিত্র চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘আমি ছত্তীসগঢ়ে ছিলাম। গভীর রাতে ফিরেছি। শুনেছি চাঁদা তোলা নিয়ে গোলমাল ঘটেছে। এটা চাঁদা তোলার কোনও পদ্ধতি হতে‌ পারে না। পুলিশ উপযুক্ত পদক্ষেপ করুক।’’ একই দাবি জানিয়েছেন অনিলবাবু।

ঘটনার পরে ওই ব্যবসায়ী অবশ্য থানায় লিখিত অভিযোগ জানাননি। তবে পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মামলা শুরু করেছে। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক মোদী বলেন, ‘‘ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সত্যজিৎ সরকার নামে এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতের কাছ থেকে একটি পিস্তল মিলেছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন