MLA fund

ফেরত যাচ্ছে বিধায়ক তহবিলের টাকা

প্রশাসনের একটি সূত্রের খবর, বিধায়ক উন্নয়ন প্রকল্প বাবদ ‘খাতায়কলমে’ যত টাকা রয়েছে, সরকারি কোষাগারে তা মিলছে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২০ ০১:২৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

গত পাঁচ বছরে ‘বিধায়ক এলাকা উন্নয়ন প্রকল্প’ (বিইইউপি) বাবদ পূর্ব বর্ধমান জেলা ৪৮ কোটি টাকা পেয়েছে। তার মধ্যে ব্যাঙ্কে পড়ে রয়েছে প্রায় সাড়ে ১২ কোটি টাকা। রাজ্য অর্থ দফতরের নির্দেশে, বিধানসভা ভোটের আগে উন্নয়নের সেই টাকা ফেরত দিতে হচ্ছে জেলা প্রশাসনকে।

Advertisement

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, অর্থ দফতরের নতুন নিয়মে ‘বিইইউপি’-র জন্য বরাদ্দ অর্থ সেই আর্থিক বছর খরচ না হলে অর্থ দফতরে ফেরত পাঠাতে হবে। সরকারি কোষাগারের অ্যাকাউন্টে পড়ে থাকলেও তা ফেরত দিতে হবে। প্রশাসনের কর্তাদের দাবি, চালু কাজের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম। তবে ওই টাকা ফেরত চেয়ে ফের আবেদন করলে নতুন আর্থিক বছরে তা ফেরত দেওয়া হবে বলে অর্থ দফতর জানিয়েছে। চলতি বছরের ৩ এপ্রিল অর্থ দফতর প্রতিটি জেলায় ওই নির্দেশ পাঠিয়ে সে সপ্তাহেই আগের বছরে সরকারি কোষাগার বা ব্যাঙ্কে পড়ে থাকা টাকা ফেরত দিতে বলে।

এখন ওই টাকা ফেরত পাঠানো হচ্ছে কেন? জেলা প্রশাসনের এক কর্তার দাবি, ‘‘আমাদের কাছে কোনও কারণে চিঠি এসে পৌঁছয়নি। চিঠি হাতে পেতেই অর্থ দফতরের নির্দেশ কার্যকর করছি। একই সঙ্গে ‘বিইইউপি’ থেকে উন্নয়নের কাজ চলছে দাবি করে ওই টাকা জেলাকে দেওয়ার জন্যও চিঠি দেওয়া হয়েছে।’’ জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সাল থেকে পড়ে থাকা মোট প্রায় ১২ কোটি ৪২ লক্ষ টাকা রাজ্য অর্থ দফতরে ফেরত দেওয়া হচ্ছে। অর্থ ফেরতের তালিকায় শীর্ষ রয়েছে মঙ্গলকোটের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর তহবিল (এক কোটি ১৫ লক্ষ)। তার পরেই রয়েছে ভাতারের বিধায়ক সুভাষ মণ্ডল, কেতুগ্রামের বিধায়ক শেখ সাহানেওয়াজ, বর্ধমান উত্তরের বিধায়ক নিশীথ মালিকদের তহবিলের টাকা। তৃণমূল ছেড়ে সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া মন্তেশ্বরের সৈকত পাঁজার তহবিলের ৫৫ লক্ষ ও বিশ্বজিৎ কুণ্ডুর তহবিলের ৮১ লক্ষ টাকা ফেরত যাচ্ছে।

Advertisement

ওই বিধায়কদের দাবি, এটি পুরোপুরি প্রশাসনিক বিষয়, তাঁদের জানা নেই। বিজেপির অন্যতম জেলা সাংগঠনিক (বর্ধমান সদর) সম্পাদক সৌম্যরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবশ্য অভিযোগ, ‘‘এটি যেমন প্রশাসনিক অকর্মণ্যতা, তেমনই বিধায়কদের এলাকার উন্নয়ন করার ক্ষেত্রে নিষ্ঠার অভাব। সে জন্যই উন্নয়নের টাকা ফেরত যাচ্ছে।’’ মেমারির তৃণমূল বিধায়ক নার্গিস বেগম, খণ্ডঘোষের বিধায়ক নবীনচন্দ্র বাগেরা পাল্টা দাবি করেন, ‘‘বিধায়কদের এলাকা উন্নয়ন প্রকল্প থেকে যে কাজ হচ্ছে, তা মানুষ দেখতে পাচ্ছেন।’’

প্রশাসনের একটি সূত্রের খবর, বিধায়ক উন্নয়ন প্রকল্প বাবদ ‘খাতায়কলমে’ যত টাকা রয়েছে, সরকারি কোষাগারে তা মিলছে না। জেলা পরিকল্পনা দফতর ওই প্রকল্পের টাকার খোঁজ শুরু করেছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, দু’টি দল গঠন করে পরিকল্পনা দফতর ও নাজিরখানার নথি খুঁজে দেখা হচ্ছে। প্রশাসনের এক কর্তার দাবি, ‘‘গরমিল হয়েছে, এখনই এ কথা বলা যাচ্ছে না। ঠিক তথ্য অনুসন্ধানের জন্য নথিপত্র খুঁজে দেখা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন