শক্তিগড়ে উদ্ধার হওয়া কচ্ছপ। নিজস্ব চিত্র
ট্রেন ছেড়ে কচ্ছপ পাচার করা হচ্ছিল জাতীয় সড়ক দিয়ে। শক্তিগড়ের বড়শুলের কাছে একটি গাড়ি আটকে ১৯টি বস্তায় মোট ৫০১টি কচ্ছপ উদ্ধার হল সোমবার সকালে। ‘ওয়াইল্ড লাইফ কন্ট্রোল ব্যুরো’ এবং বর্ধমান বন দফতর যৌথ ভাবে এই অভিযান চালায়। কচ্ছপ পাচারের অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃত পরিতোষ রায়, অহঙ্কর রায়ের বাড়ি নয়াদিল্লির বিকাশপুরিতে। এ দিন আদালতে তোলা হলে তাদের ১৪ দিন জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।
বর্ধমানের দায়িত্বে থাকা বনাধিকারিক (দুর্গাপুর) মিলন মণ্ডল বলেন, ‘‘বিশেষ সূত্রে খবর পেয়ে তাড়া করে কচ্ছপগুলিকে উদ্ধার করা হয়েছে। সেগুলিকে পূর্বস্থলীর চুপিতে ছাড়া হবে।’’ পরপর বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে ট্রেনে কচ্ছপ পাচারের ঘটনা ধরা পড়ে যায় সম্প্রতি। ১৫ জানুয়ারি দুর্গাপুরে দুন এক্সপ্রেস থেকে ৬৮৯টি কচ্ছপ উদ্ধার হয়। এর পরে উত্তরপ্রদেশ থেকে জাতীয় সড়ক ধরে কচ্ছপ পাচারের চেষ্টা চলছিল বলে অনুমান বনকর্তাদের।
বন দফতর সূত্রে জানা যায়, ‘ওয়াইল্ড লাইফ কন্ট্রোল ব্যুরো’র কাছে এই পাচারের বিষয়ে খবর ছিল। বন দফতরের কর্মীদের নিয়ে গলসির কাছে সংস্থার লোকজন অপেক্ষা করছিল। এ দিন সকালে গলসি পার হতেই তাঁরা গাড়ির পিছু নেন। বড়শুলের উড়ালপুলের উপরে গাড়িটি আটকে কচ্ছপ উদ্ধার ও দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। বন দফতর জানায়, উদ্ধার হওয়া কচ্ছপগুলি ‘গ্যাঞ্জেস সফট শেলড টার্টেল’ প্রজাতির। গঙ্গা ও তার অববাহিকায় এই কচ্ছপ পাওয়া যায়।
পুলিশ ও বন দফতর সূত্রে জানা যায়, উত্তরপ্রদেশের সুলতানপুর থেকে গাড়ি ভাড়া করে ১৯টি বস্তায় কচ্ছপগুলি নিয়ে আসছিল ধৃতেরা। ধৃতেরা সম্পর্কে বাবা-ছেলে। তারা রবিবার দিল্লি থেকে ট্রেনে সুলতানপুর আসে। সেখানে খোলা বাজার থেকে কচ্ছপ কিনে ট্রেনে ওঠার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু দুন এক্সপ্রেসে নজরদারি রয়েছে জানার পরে গাড়ি ভাড়া করে রওনা দেয়। কিন্তু গন্তব্যে পৌঁছনোর কয়েক কিলোমিটার আগে ধরা পড়ে যায়।
বনকর্তারা জানান, মূলত দু’টি জায়গায় কচ্ছপ ‘হাতবদল’ করে পাচারকারীরা— ডানকুনি ও হাওড়া। সেখান থেকে কচ্ছপগুলি বাংলাদেশ-সহ নানা দেশে পাচার হয় বলে খবর রয়েছে। ট্রেনে কচ্ছপ আনা হলে ব্যান্ডেল, নৈহাটি হয়ে বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত পাচার হয়ে থাকে। বন দফতরের দাবি, কলকাতার বিভিন্ন বাজারেও এই কচ্ছপ বিক্রি হয়।