গলসির বিধানের চিকিৎসায় পাশে কলকাতা

ডিসেম্বর, ২০১৮। ষষ্ঠ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষায় সবাই এসেছে। অনুপস্থিত শুধু বিধান রুইদাস। পূর্ব বর্ধমানের শালডাঙা নেতাজি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা তার বাড়িতে গিয়ে দেখেন, বিধান হাঁটতে পারছে না।

Advertisement

অর্পিতা মজুমদার

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০১৯ ০১:২৬
Share:

বিধান রুইদাসের মা’কে তুলে দেওয়া হচ্ছে আর্থিক সাহায্য। নিজস্ব চিত্র

ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত স্কুল পড়ুয়াকে বাঁচাতে এর আগে পথে নেমেছিলেন শিক্ষকেরা। সঙ্গে ছিল, পড়ুয়ারাও। এ বার গলসি ১-র চাকতেঁতুল পঞ্চায়েতের সাঁকুড়ি গ্রামের বছর এগারোর বিধান রুইদাস নামে ওই পড়ুয়ার পাশে দাঁড়ালেন কলকাতা পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার উদয়ন দে। তিনি জানান, বিধানের চিকিৎসার জন্য পুরসভার কাউন্সিলর, কর্মচারী, ঠিকাদার প্রমুখের কাছ থেকে তিনি মোট ৭৫ হাজার টাকা সংগ্রহ করেন। শনিবার কলকাতায় সেই টাকার ‘ডিমান্ড ড্রাফ্ট’ বিধানের মা রেখাদেবীর হাতে তুলে দেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।

Advertisement

ডিসেম্বর, ২০১৮। ষষ্ঠ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষায় সবাই এসেছে। অনুপস্থিত শুধু বিধান রুইদাস। পূর্ব বর্ধমানের শালডাঙা নেতাজি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা তার বাড়িতে গিয়ে দেখেন, বিধান হাঁটতে পারছে না। তড়িঘড়ি তাকে চেন্নাই নিয়ে যাওয়া হয়। ধরা পড়ে, ব্লাড ক্যানসার। হাসপাতাল জানায়, বিধানকে ‘কেমোথেরাপি’ দিতে হবে। তার জন্য আগামী আড়াই বছরে প্রায় দশ লক্ষ টাকা প্রয়োজন, জানান বিধানের বাবা তপন রুইদাস। পেশায় দিনমজুর তপনবাবু জানিয়েছিলেন, ওই টাকা জোগাড় করা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। তাই সাহায্য চেয়ে হাইস্কুলের পাশাপাশি, ছেলের পুরনো স্কুল মুন্সেফপুর অবৈতনিক প্রাথমিক স্কুলে যোগাযোগ করেন। এর পরেই স্কুল পড়ুয়া ও শিক্ষকেরা চিকিৎসায় সাহায্য করতে চেয়ে পথে নামেন। ছাপানো পোস্টারে বার্তা দেওয়া হয়, ‘বিধান ভয় পেয়ো না।’ এগিয়ে আসে প্রাথমিক স্কুলের বুদবুদ চক্রও।

এই খবরই সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হলে বিষয়টি নজরে পড়ে, জানান উদয়নবাবু। এর পরেই তিনি নিজে এবং কলকাতা পুরসভা থেকে অর্থ সংগ্রহ করেন। শনিবার এক অনুষ্ঠানে বিধানের মা রেখাদেবীর হাতে সেই অর্থ তুলে দেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপবাবু। উপস্থিত ছিলেন কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (সড়ক ও কারিগরি) রতন দে, ১০ নম্বর বরো চেয়ারম্যান তপন দাশগুপ্ত প্রমুখ।

Advertisement

বিধানের যে হাসপাতালে চেন্নাইয়ের যে বেসরকারি চিকিৎসা চলছে, সেই হাসপাতালের আধিকারিককে বিধানের চিকিৎসা ঠিক ভাবে করার জন্য ও পরিবারের কথা চিন্তা করে চিকিৎসার ব্যয় সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করার আর্জি জানিয়েছেন মন্ত্রী, খবর পরিবার সূত্রে।

কিন্তু কেন এই সাহায্য? উদয়নবাবু বলেন, ‘‘দেখলাম, এক জনকে বাঁচাতে ছোটরাও পথে নেমেছে। এই পরিস্থিতিতে আমাদের চুপ করে বসে থাকাটা ঠিক নয়। বিধানকে সুস্থ করাটা আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব।’’ আর বিধানের মা বলেন, ‘‘আমরা ভাবতেই পারিনি, এ ভাবে দূর থেকেও মানুষ আমাদের পাশে দাঁড়াবেন। সবার শুভেচ্ছা, ভালবাসায় ছেলে নিশ্চয় সুস্থ হয়ে উঠবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন