টাকা পড়ে, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নকশা জমা দেয়নি পুরসভা

পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল প্রায় তিন বছর আগে। বছর দুয়েক আগে টাকাও চলে এসেছে। কিন্তু এখনও এলাকায় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরির নকশা জমা দিতে পারেনি পুরসভাগুলি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৬ ০০:১৮
Share:

আলমগঞ্জে পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্র। নিজস্ব চিত্র।

পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল প্রায় তিন বছর আগে। বছর দুয়েক আগে টাকাও চলে এসেছে। কিন্তু এখনও এলাকায় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরির নকশা জমা দিতে পারেনি পুরসভাগুলি।

Advertisement

জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা জানান, এ মাসে নির্মাণ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পুরোটাই অথৈ জলে। আর পুরসভাগুলির দাবি, জায়গা বাছাই ও পুরসভার বাস্তুকার সমূহের মাধ্যমে নকশা তৈরি বাধ্যতামূলক হওয়াই দেরির কারণ। কয়েকটি ক্ষেত্রে নকশা জমা পড়লেও কাজ শুরু করা যায়নি বলে তাঁদের দাবি।

২০১৩ সালে গ্রামাঞ্চলের মতো বর্ধমান, আসানসোল ও দুর্গাপুর শহরে স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেয় ন্যাশনাল আরবান হেলথ মিশন। ঠিক হয়, বর্ধমান শহরে ৫টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র হবে ও আলমগঞ্জের মাতৃসদনকে উন্নীত করা হবে। আরেকটি নতুন প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রও তৈরি হবে। শহরের বড়নীলপুরের সুকান্তপল্লি, খালাসিপাড়া, পিরবাহারাম, গুডশেড রোড, মিরছোবা স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে উন্নীত করার জন্য ও কাঞ্চননগরে নতুন স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরির জন্য নাম পাঠায় বর্ধমান পুরসভা। ওই আর্থিক বছরেই পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে উন্নীত করে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র পরিকাঠামো গড়ে তোলার অনুমোদন দেয় এনইউএইচএম। ১০ লক্ষ টাকা করেও দেওয়া হয়। এ ছা়ড়াও আলমগঞ্জের মাতৃসদন উন্নীত করার জন্য ৫০ লক্ষ টাকা ও পরের বছর কাঞ্চননগরে, কাটোয়ার সাহেববাগানে ও বর্ধমান- কাটোয়া রোডের ধারে নতুন প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরির জন্য ৭৫ লক্ষ টাকা দেয় এনইউএইচএম। কালনার ঘাটপাড়াতেও প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ার কথা রয়েছে। তবে অনুমোদন মিললেও কাজ যে এগোয়নি তা বলছে জেলা স্বাস্থ্য দফতরই।

Advertisement

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায় বলেন, “শহরের নিচুতলা পর্যন্ত স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দিতে এই উদ্যোগ করা হয়েছিল। স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি হলে নিয়মিত টিকাকরণ, বিশেষ অভিযান চালানোও সম্ভব হতো।” জানা গিয়েছে, ওই সব কেন্দ্রে স্থায়ী ও অস্থায়ী চিকিৎসক, ল্যাব-টেকনিশিয়ান ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মী দেবে স্বাস্থ্য দফতর। স্থানীয় মহিলাদের নিয়ে, আশা কর্মীকে সচিব করে তৈরি ‘মহিলা আরোগ্য সমিতি’ ওই কেন্দ্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে। কিন্তু অনুমোদন পাওয়ার পরেও গুডশেড রোডের স্বাস্থ্যকেন্দ্র উন্নীতকরণের কোনও নকশা বা আলমগঞ্জের মাতৃসদনের জন্যও কোনও প্রকল্প জমা পড়েনি। কাটোয়া ও কালনা পুরসভাও টাকা পাওয়ার দু’বছর পরেো কোনও নকশা জমা দেয়নি।

কেন? বর্ধমানের পুরপ্রধান স্বরূপ দত্তের দাবি, ‘‘নানা সমস্যার জন্য সামান্য দেরি হচ্ছে।” কাটোয়ার পুরপ্রধান অমর রাম আবার বলেন, “ই-টেন্ডার পদ্ধতির জন্য দেরি হচ্ছে।” অথচ ন্যাশনাল আরবান হেলথ মিশনের বিভিন্ন বৈঠকের গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এ বছর ডিসেম্বরের মধ্যে ভবন তৈরি থেকে বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ সম্পূর্ণ হয়ে যাওয়া উচিত। তাহলে কী স্বাস্থ্য দফতরের নজরেরও অভাব ছিল? জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক (এনইউএইচএম) মুস্তাক আহমেদ বলেন, “ব্লকগুলির স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সরাসরি আমাদের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়। কিন্তু পুরসভাগুলি সেভাবে চলে না বলেই সমস্যা দেখা দিয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন