খুনের কারণ কী, ধন্দে প্রতিবেশীরা

পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে নজরুল বড়। মেজো ভাই আমিনুল ইসলাম সৌদি আরবে কাজ করেন। ছোট ভাই মবিনুল বর্ধমানে টোটো চালান।

Advertisement

সৌমেন দত্ত

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৮ ০০:৫৪
Share:

তদন্তে আনা হল কুকুর। নিজস্ব চিত্র

এলাকার মানুষের বিপদে-আপদে পাশে থাকতেন তিনি। এমন একটি ছেলেকে খুন হতে হল কেন, বৃহস্পতিবার কৃষ্ণপুরের বাসিন্দাদের কাছে এটাই ছিল বড় প্রশ্ন। কী কারণ থাকতে পারে এমন ঘটনার, সে নিয়ে সংশয়ে এলাকাবাসী।

Advertisement

গ্রামের মাজারের কাছে একটি শীতবস্ত্রের দোকান খুলেছিলেন নজরুল ইসলাম বিশ্বাস। দু’হাজার টাকায় দোকানঘরটি ভাড়া নেন। পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দোকান বন্ধ করে রাতে বাড়ি ফিরে খাওয়া-দাওয়ার পরে ফোন হাতে বেরোতেন নজরুল। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে ফিরে আসতেন— কার্যত এটাই ছিল তাঁর রুটিন। বুধবার রাতে বেরিয়ে আর ফেরেননি। এ দিন সকালে বাড়ি থেকে প্রায় আড়াইশো মিটার দূরে পুকুরে তাঁর দেহ মেলে। পরিবারের দাবি, নজরুলের জ্যাকেট, ঘড়ি, মানিব্যাগ, মোবাইলের খোঁজ মেলেনি। পুলিশ জানায়, পুকুরে স্থানীয় এক যুবক নেমে খোঁজ করলেও সে সব পায়নি।

পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে নজরুল বড়। মেজো ভাই আমিনুল ইসলাম সৌদি আরবে কাজ করেন। ছোট ভাই মবিনুল বর্ধমানে টোটো চালান। দুই বোন জুঁই ও স্বপ্না স্কুলছাত্রী। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নজরুল এলাকায় তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তাঁর বাবা নুর ইসলাম বিশ্বাস দাবি করেন, ‘‘দলের মধ্যে বিবাদের জন্য ও গত দু’মাস রাজনীতি করছিল না। মন দিয়েছিল ব্যবসায়। দলমত নির্বিশেষে সবার ভাল চাইত।’’ বোন জুঁই খাতুন কাঁদতে-কাঁদতে বলে, ‘‘ভাল বলেই কি দাদাকে খুন হতে হল?’’ পরিজনেরা খুনের পিছনে রাজনীতি থাকতে পারে বলে মনে করলেও এলাকাবাসীর একাংশের ধারণা, প্রণয়ঘটিত কারণেও এমন ঘটে থাকতে পারে।

Advertisement

স্থানীয় কৃষ্ণপুর ইউথ ক্লাবের সম্পাদক ছিলেন নজরুল। এ দিন ক্লাবের সামনেই রাখা হয় তাঁর দেহ। এলাকার যুবক শেখ সুখচাঁদ, আজাহারউদ্দিন শেখরা বলেন, ‘‘বিভিন্ন গ্রামে রাতে ক্রিকেট খেলা হয়। দোকান বন্ধ করে খেলতে যেত নজরুল। বাড়ির লোকেরা ভেবেছিলেন, খেলতেই গিয়েছে।’’ মনেজা বিবি, স্বর্ণ মণ্ডলদের কথায়, ‘‘নজরুল খুব পরোপকারী ছেলে ছিল। রক্তদান থেকে কারও চিকিৎসার জন্য টাকা জোগাড়— সবেতেই ঝাঁপিয়ে পড়ত।’’

কেন খুন হতে হল এই যুবককে, ধন্দে পুলিশও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন