যত দিন যাচ্ছে কেরলে আটকে পড়া পূর্ব বর্ধমানের শ্রমিকদের নামের তালিকা ততই বড় হচ্ছে।
গত তিন দিন ধরে জেলার একাধিক বিডিও একটি তালিকা তৈরি করছেন। শুরুতে কাটোয়া, কালনার পাঁচশো শ্রমিকের তালিকা হলেও মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত সেই তালিকায় সব ব্লকের নাম উঠে এসেছে। আর শ্রমিকের সংখ্যা আড়াই হাজার পেরিয়ে গিয়েছে। ওই সংখ্যা বাড়বে বলে মনে করছেন বিডিওরা।
এমনিতে জেলা প্রশাসনের কাছে ভিন রাজ্যে কাজে যাওয়া শ্রমিকদের নিয়ে কোনও তথ্যই থাকে না। ফলে নানা কারণেই বারবার সমস্যায় পড়েন ব্লক অফিসের কর্মীরা। এ বার বন্যা-কবলিত কেরলে আটকে থাকা শ্রমিকদের পরিজনদের চাপে ব্লক স্তরের আধিকারিকরা খোঁজখবর নিতে শুরু করেন।
আজ, ইদুজ্জোহা। উৎসবকে সামনে রেখে অনেকেই ঘরে ফিরে এসেছেন। কিন্তু এখনও অনেক শ্রমিকই জলবন্দি হয়ে আটকে রয়েছেন কেরলে। অনেকের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করতে না পারায় উদ্বেগ বাড়ছে পরিজনেদেরও। রাজ্য সরকার ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছে, ওই সব শ্রমিকদের বাড়িতে পৌঁছনোর জন্য বাসের ব্যবস্থা করা হবে। বিদায়ী জেলা সভাধিপতি দেবু টুডু বলেন, “বর্ধমান ২, ভাতার-সহ বিভিন্ন ব্লকের কর্তারা তথ্য সংগ্রহের কাজে নেমেছেন। এখনও পর্যন্ত দু-আড়াই হাজার শ্রমিকের নাম-মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে রাজ্যের স্বরাস্ট্র দফতরে পাঠানো হয়েছে। তালিকায় ওই শ্রমিক কোথায় কাজ করছেন, তার ঠিকানাও যতটা সম্ভব দেওয়া হয়েছে।’’
জেলা প্রশাসনের এক কর্তার দাবি, “রাজ্য থেকে একটি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর দেওয়া হয়েছে। কেউ আমাদের কাছে এলে আমরা ওই নম্বর দিয়ে যোগাযোগ করতে বলছি।’’ কালনার মহকুমা শাসক নীতিশ ঢালির দাবি, “পঞ্চায়েতের মাধ্যমে আটকে থাকা শ্রমিকদের সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’’ কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় জানান, শ্রমিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কাটোয়ার মহকুমাশাসক সৌমেন পালও জানান, ইদ উপলক্ষে যাঁরা বাড়ি ফিরে এসেছেন তাঁদের থেকে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।
কেরলের এর্ণাকুলাম জেলার আথানি শহরে আটকে পড়েছেন বর্ধমান ও বাঁকুড়ার সাত যুবক। তাঁদের মধ্যে বুদবুদের বেলেডাঙার শেখ মুজফ্ফর হোসেন মঙ্গলবার ফোনে বলেন, “বানভাসী রাজ্যে এখনও বেঁচে আছি এখানকার স্থানীয় মানুষদের জন্যই।”