মাটির তলায় জলের টান কমছে। সেচ ব্যবস্থারও উন্নতি হয়নি। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের আওতায় থাকা সাতটি জেলায় মাটির নীচে জল সংরক্ষণ বৃদ্ধি এবং সেচ ব্যবস্থার উন্নতির জন্য নতুন প্রকল্প ‘ঊষরমুক্তি’ চালু করেছে রাজ্য। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামে এ বিষয়ে কর্মশালা হয়ে গিয়েছে। আজ, সোমবার পশ্চিম বর্ধমান ও বীরভূমে ব্লকের আধিকারিকদের নিয়ে কর্মশালা হবে দুর্গাপুরে।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, মূলত একশো দিনের প্রকল্পের মাধ্যমেই এই ‘ঊষরমুক্তি’র কাজের উদ্যোগ হয়েছে। সাহায্য করবে কেন্দ্রীয় সংস্থা ‘ভারত রুরাল লাইভলিহুড ফাউন্ডেশন’ (বিআরএলএফ) এবং এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। রাজ্যের একশো দিনের প্রকল্পের কমিশনার দিব্যেন্দু সরকার বলেন, “অনেকটা পিপিপি মডেলে কাজ হবে। একশো দিন প্রকল্প থেকে টাকার সংস্থান হবে। বছরে ন্যূনতম তিনশো কোটি টাকার কাজ হবে। আশা করছি, নতুন বছর থেকে কাজ শুরু হয়ে যাবে।”
প্রকল্প বাস্তবায়নে এত সময় লাগবে কেন? দিব্যেন্দুবাবু জানান, প্রকল্পের ব্যাপারে নির্দেশিকা থাকলেও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এই সাতটি জেলায় ঘুরে মানুষের সঙ্গে কথা বলে কী কাজ করতে হবে তার ধারণা তৈরি করে একটি প্রজেক্ট রিপোর্ট পাঠাবে। সেই মতো কাজ হবে। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ইঞ্জিনিয়ার, নদী-ভূমি-পরিবেশ বিশেষজ্ঞ-সহ ১০ জনের একটি কমিটি তৈরি করা হয়েছে। তাঁরাও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে গ্রামে-গ্রামে যাবেন। একশো দিনের কাজে দুই বর্ধমানের নোডাল অফিসার বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বলেন, “সাত জেলার ৫৪টি ব্লক বাছা হয়েছে। তার মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ১১টি ব্লকে কাজ শুরু হবে।” পশ্চিম বর্ধমানের জামুড়িয়া, কাঁকসা, বারাবনি, অন্ডাল, পাণ্ডবেশ্বর ও দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লককে এই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
প্রকল্পের নির্দেশিকা অনুযায়ী, ওই সাতটি জেলা দিয়ে বয়ে চলা অজয়, ময়ূরাক্ষী, দামোদর, দ্বারকেশ্বর, কাঁসাই, কোপাই, শিলাই ও সুবর্ণরেখা নদীর উৎসমুখগুলির পুনরুজ্জীবন করা হবে। সে জন্য নদীর সঙ্গে সংযুক্ত ছোট-ছোট নদী, বিভিন্ন সেচখালের সংস্কার হবে। দিব্যেন্দুবাবু বলেন, “নদী বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মতো এই কাজ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাতে নদীর স্রোত বাড়বে।” এ ছাড়াও নানা পদ্ধতিতে জল ধরে রেখে ভূগর্ভে পাঠানো হবে। দু’পাড়ে বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে নদীর ভাঙন রোধের পরিকল্পনাও রয়েছে।