অপরাধ কমাতে পূর্ব বর্ধমানের পাঁচটি থানা ওসির (অফিসার ইনচার্জ) বদলে আইসি (ইন্সপেক্টর ইনচার্জ) থানায় উন্নীত করার প্রস্তাব দিয়েছে জেলা পুলিশ। সঙ্গে আরও সাতটি থানা গড়ারও প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবটি নিয়ে বর্ধমানের প্রশাসনিক সভায় আলোচনাও করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
জেলা পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল বলেন, “বড় এলাকা, জনসংখ্যা বৃদ্ধির মতো বিষয়গুলি আলোচনা করে সাধারণ মানুষকে আরও ভাল পরিষেবা দিতেই সরকারের কাছে ওই প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।” জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটোয়া, কালনা মহকুমা ছাড়াও নাদনঘাট, মন্তেশ্বর ও মঙ্গলকোটকে আইসি থানায় উন্নীত করার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
গত মার্চের ওই প্রস্তাবে থানাগুলিকে উন্নীত করার জন্য কিছু কারণ দেখানো হয়েছে। যেমন, কাটোয়ায় দুটি পুরসভা ছাড়াও ১৮২টি গ্রাম রয়েছে। ওই থানা এলাকা ঘিরে রয়েছে গঙ্গা ও অজয়। তা ছাড়া কাটোয়া অপরাধপ্রবণ এলাকার মধ্যেও পড়ে। মঙ্গলকোটেও এলাকা বড়, তা ছাড়া নিয়মিত অপরাধমূলক ঘটনা ঘটে। অজয় পেরোলেই বীরভূম। বছর তিনেক আগে তৈরি নাদনঘাট থানাকেও আইসি পদে উন্নীত করার পিছনে জেলা পুলিশ কর্তারা নদিয়া-সীমান্তের গোলমালের আশঙ্কার কথা উল্লেখ করেছেন। মন্তেশ্বর থানা বড় হওয়ার জন্য সেটি উন্নীত করার কথা ভাবা হচ্ছে। এতে মানুষের সঙ্গে পুলিশের যোগাযোগ বাড়ানো যাবে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আইসি থানা হলে ১২ জন এসআই, ১৮ জন এএসআই ও তিরিশ জন কনস্টেবল থাকবে। ফলে এলাকায় নজরদারি বাড়াতে সুবিধা হবে।
এর সঙ্গেই মেমারি ভেঙে সাতগেছিয়া, আউশগ্রাম ভেঙে গুসকরা ও ছোড়া, বর্ধমান ভেঙে শক্তিগড় ও দেওয়ানদিঘিতে নতুন থানা তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কেতুগ্রাম ভেঙে কান্দরা ও কাটোয়া ভেঙে দাঁইহাটেও থানা তৈরির প্রস্তাব পাঠিয়েছে পুলিশ। জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জনসংখ্যা, জনঘনত্ব, অপরাধের সংখ্যা, ট্রাফিক, নতুন বাজার ও অফিস-সহ প্রায় কুড়িটি বিষয় সামনে রেখে পর্যালোচনা করার পরে এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
বর্ধমান থানা তিন ভাগ করার প্রস্তাবটি পুরনো। সম্প্রতি প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রী নিজেই শক্তিগড়কে থানা করার জন্য উৎসাহ দেখান। আউশগ্রামের ছোড়া ও গুসকরায় নতুন থানা ভবন তৈরিও হয়ে গিয়েছে। মেমারিতেও থানা দূরে হওয়ায় অসুবিধেয় পড়তে হয় বাসিন্দাদের। তা দূর করতে সাতগেছিয়ায় থানা তৈরির প্রস্তাব দিয়েছে পুলিশ।