আউশগ্রামের স্কুলে চলছে অঙ্কের পাঠ। নিজস্ব চিত্র
নানা কাজের পরে ফেলে দেওয়া হয় কার্ডবোর্ড, থার্মোকলের টুকরো বা পলিথিনের পাইপ। পড়ুয়াদের অঙ্ক শেখাতে সে সবকেই হাতিয়ার করেছেন আউশগ্রামের সিলুট-বসন্তপুর হাইস্কুলের শিক্ষক। ফেলে দেওয়া ওই সব জিনিস নিয়ে এসে তিনি স্কুলে তৈরি করেছেন ‘গণিত গবেষণাগার’। সেখানে হাতেকলমে অঙ্ক শিখছে পড়ুয়ারা।
ওই শিক্ষক শেখ সামসুল আলম জানান, অঙ্ক নিয়ে অনেক পড়ুয়ার মধ্যেই ভীতি থাকে। তাই ব্ল্যাকবোর্ডের বাইরে অঙ্ক শেখানোর পরিকল্পনা করেছেন তিনি। যে কোনও অঙ্ক কী ভাবে সহজে বোধগম্য ও আকর্ষণীয় করে তোলা যায়, সেই ভাবনা থেকেই এই কাজ করছেন তিনি। স্কুলেরই একটি ঘরে তৈরি করেছেন ওই গবেষণাগার। আর এ জন্য নানা সংস্থা পুরস্কৃতও করেছে তাঁকে।
১৯৯৭ সালে শিক্ষক হিসেবে এই স্কুলে যোগ দেন আউশগ্রামের ভেদিয়ার বাসিন্দা সামসুল। তিনি বলেন, ‘‘গোড়ায় দেখতাম, ভয়ে অনেক ছাত্রছাত্রী অঙ্কের ক্লাসে আসতেই চাইছে না। তা দেখেই বিষয়টি কী ভাবে তাদের কাছে আকর্ষণীয় করে তোলা যায়, তা ভাবতে শুরু করি।’’ তিনি জানান, এ নিয়ে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করেছেন তিনি। এখন অঙ্ক শেখার মজা পড়ুয়াদের জানাতে নানা স্কুল থেকেও ডাক আসে তাঁর।
দশম শ্রেণির পড়ুয়া জেসমিন খাতুন, আফরিন সুলতানা, মানস দত্তেরা বলে, ‘‘স্যার যে ভাবে অঙ্ক শেখান তা সহজে বুঝতে পারি, মনে থাকে। স্যারের ক্লাস করে বোঝা যায় অঙ্কে কেমন মজা আছে।’’ অভিভাবক শেখ আলাল হুদা, শেখ নওসাদরাও জানান, ছেলেমেয়েরা অঙ্কে ভয় কাটিয়ে উঠেছে এ ভাবে পঠনপাঠনের দৌলতে। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক পার্থসারথি মোল্লা বলেন, ‘‘এখন অঙ্কের ক্লাসের টানেই ছাত্রছাত্রীরা স্কুল কামাই করতে চায় না।’’