বসল ভৈরবের মূর্তি, সরকারি স্বীকৃতি চায় পরিবার

ভৈরববাবু যাত্রায় প্রায় তিনশো পালা লিখেছেন। মন্তেশ্বরে ভাগরা-মূলগ্রামে বাড়ি এখনও তাঁর অ্যাসবেস্টসের ছাউনি দেওয়া মাটির আদি বাড়িটি রয়েছে। তার পাশেই মূর্তিটি বসানো হল। এ ব্যাপারে উদ্যোগী হন স্বপনবাবু। রবিবার ছিল ভৈরব গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্মদিন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৭ ০৬:৩০
Share:

ভাগরা-মূলগ্রামে মূর্তির উদ্বোধন। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

যাত্রার পালাকার ভৈরব গঙ্গোপাধ্যায়ের আবক্ষ মূর্তি তৈরি হল তাঁর গ্রাম মন্তেশ্বরের ভাগরা-মূলগ্রামে। রবিবার ছিল ভৈরববাবুর জন্মদিন। মূর্তি উদ্বোধনে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা যাত্রাশিল্পী স্বপন দেবনাথ, জেলা সভাধিপতি দেবু টুডু। এসেছিলেন ভৈরববাবুর স্ত্রী ও পাঁচ ছেলেমেয়েও।

Advertisement

ভৈরববাবু যাত্রায় প্রায় তিনশো পালা লিখেছেন। মন্তেশ্বরে ভাগরা-মূলগ্রামে বাড়ি এখনও তাঁর অ্যাসবেস্টসের ছাউনি দেওয়া মাটির আদি বাড়িটি রয়েছে। তার পাশেই মূর্তিটি বসানো হল। এ ব্যাপারে উদ্যোগী হন স্বপনবাবু। রবিবার ছিল ভৈরব গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্মদিন।

১৯৩৪ সালে জন্ম হয় ভৈরবাবুর। প্রয়াত হন ১৯৯৮ সালে। মূলগ্রামেই অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন তিনি। ১৯৬৫ সালে তাঁর লেখা ‘নাচমহল’ যাত্রা মঞ্চস্থ করে ‘সত্যম্বর’ অপেরা। তা দর্শকদের সমাদর কুড়োয়। এ ছাড়া ‘মা, মাটি, মানুষ’, ‘গান্ধারী জননী’, ‘সাত টাকার সন্তান’, ‘ভিখারি ঈশ্বর’, ‘অচল পয়সা’, ‘ঠিকানা পশ্চিমবঙ্গ’, ‘দেবী সুলতানা’-সহ বহু যাত্রা লিখেছেন তিনি। পরে পাকাপাকি ভাবে কলকাতার বাসিন্দা হয়ে যান।

Advertisement

ভৈরববাবুর এক ছেলে মেঘদূত গঙ্গোপাধ্যায় এখন যাত্রার পালাকার। ‘ভৈরব অপেরা’ নামে একটি যাত্রার দলও চালান তিনি। তিনি বলেন, ‘‘বাবাকে কার্যত ভুলতে বসেছিলেন মানুষ। স্বপনবাবু যে পদক্ষেপ করেছেন, তাতে আমরা কৃতজ্ঞ। তবে ভৈরব গঙ্গোপাধ্যায়ের কোনও সরকারি স্বীকৃতি চাই। তাঁর নামে কোনও পুরস্কার, গ্রন্থাগার বা যাত্রামঞ্চ তৈরি করলে খুশি হব।’’ পরিবারের সদস্যদের দাবি, সরকার নানা শিল্পীকে স্বীকৃতি দিয়েছে। কিন্তু তাঁরা কোনও সাহায্য পাননি। ভৈরববাবুর স্ত্রী ছায়াদেবী বলেন, ‘‘সরকারি সাহায্য পেলে এই শেষ বয়সে আমার সুবিধে হবে।’’

পরিবারের দাবির বিষয়টি নিয়ে সরকারের নজরে আনার আশ্বাস দেন মন্ত্রী স্বপনবাবু। তিনি বলেন, ‘‘ভৈরববাবু তাঁর লেখায় সমাজের কথা, গ্রামের মানুষের কথা বলতেন। গ্রামে তাঁর নামে একটি যাত্রামঞ্চ গড়া নিয়ে স্থানীয় বিধায়ক সৈকত পাঁজার সঙ্গে কথা হয়েছে।’’ জেলা সভাধিপতি দেবুবাবু বলেন, ‘‘মূর্তি বসানোর ব্যাপারে অনেক দিন ধরেই আলোচনা হচ্ছিল। ভৈরববাবুর জন্মদিন উপলক্ষে এই দিনটি বেছে নেওয়া হয়।’’

এ ছাড়া এই গ্রামে জলের সমস্যা মেটানোর জন্যও আর্জি জানান মেঘদূতবাবু। জেলা সভাধিপতি সে ব্যাপারে পদক্ষেপের আশ্বাস দেন। এ দিন গ্রামে ভৈরব অপেরার তরফে একটি যাত্রাপালারও আয়োজন করা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন