নজর টানতে কার্তিকের ‘থাকা’য় বদল

এলাকার বণিক সম্প্রদায়ের হাত ধরে প্রথম ‘থাকা’ পুজোর প্রচলন হয়। কিন্তু দিন বদলের সঙ্গে সঙ্গে থাকার গঠনশৈলীতেও এসেছে বদল। কাটোয়ার বিভিন্ন পুজো কমিটি এ বার দর্শকের নজর কাড়তে সাবেক থাকার মধ্যেও অভিনবত্ব আনার চেষ্টা করছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাটোয়া শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৬ ০০:৪৯
Share:

কাটোয়া খড়ের বাজারের ‘থাকা’।

এলাকার বণিক সম্প্রদায়ের হাত ধরে প্রথম ‘থাকা’ পুজোর প্রচলন হয়। কিন্তু দিন বদলের সঙ্গে সঙ্গে থাকার গঠনশৈলীতেও এসেছে বদল। কাটোয়ার বিভিন্ন পুজো কমিটি এ বার দর্শকের নজর কাড়তে সাবেক থাকার মধ্যেও অভিনবত্ব আনার চেষ্টা করছেন।

Advertisement

আঞ্চলিক ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, ১৯৩০ সাল থেকে কাটোয়ায় কার্তিক পুজোর প্রচলন হয়। আর এই থাকা রীতিটির জন্ম হয় আজ থেকে সাত দশকেরও আগে। লোক-গবেষক তারকেশ্বর চট্টরাজের মতে, ১৯৪০ সালে গজানন মাড়োয়ারি নামে এক ব্যবসায়ীর উদ্যোগে লবনগোলায় প্রথম থাকায় কার্তিক আরাধনার সূত্রপাত হয়।

থাকার বৈশিষ্ট্য কেমন? লোক গবেষকদের মতে, এই থাকা আসলে পিরামিডের মতো দেখতে একটি বাঁশের কাঠামো, যেখানে থাকে থাকে মাটির পুতুল সাজানো থাকে। আর সেই পুতুলের মাধ্যমে মনসাপুরাণ ও শিবপুরাণের বিভিন্ন প্রচলিত কাহিনি ফুটিয়ে তোলা হয়। প্রচলিত থাকার দু’ধারে থাকে সখী আর মাথায় কাত্যায়ণী। কাটোয়ার বাসিন্দা পাঁচুগোপাল বক্সির ‘কাটোয়ার কার্তিক লড়াইয়ের উৎস সন্ধানে’ প্রবন্ধ থেকে জানা যায়, কাটোয়ায় বর্তমানে তিন ভাবে কার্তিকের উপস্থাপনা করা হয়— বিরাট বা মাঝারি আকারের কার্তিকের মৃন্ময় মূর্তি, কিংবা নানা আকারের বিভিন্ন দেবদেবীর মূর্তি এবং থিম পুজো ও থাকা।

Advertisement

ঠাকুর দেখতে ভিড়। বুধবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

দর্শকের নজর টানতে এ বার থাকায় বেশ কিছু অভিনবত্ব এনেছে কয়েকটি পুজো কমিটি। যেমন, পশারিপট্টি ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের থাকায় দু’ভাগে ভৈরবী অবতার ও মহাপ্রভুর রাসলীলার ছবি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। খড়েরবাজারের থাকায় রয়েছে ঘটোৎকচের যুদ্ধ। তবে তঁতিপাড়ার সাতভাই ক্লাবের সাবেক থাকায় একই আদলের সাতটি কার্তিক রয়েছে। বিভিন্ন পুজো কমিটির সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, থিম পুজোর যুগে থাকার সংখ্যা কমেছে। এ বার শহরে ১০টি থাকা পুজো রয়েছে।

আজ, বৃহস্পতিবার বের হবে শোভাযাত্রা। মহকুমা প্রশাসন সূত্রে খবর, ৬২টি ক্লাবকে শোভাযাত্রার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলিতে ৮টি পুলিশ বুথ ও প্রায় চারশো পুলিশকর্মীও থাকছেন। এ ছাড়াও প্রয়োজনীয় অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা এবং অ্যাম্বুল্যান্সও থাকছে। পুরপ্রধান অমর রামের দাবি, ‘‘পুজোর দিন শহর পরিচ্ছন্ন রাখতে বিভিন্ন পদক্ষেপ করছে পুরসভা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন