গ্রামে চাটাই বিছিয়ে আড্ডায় ভোট-প্রচার

দোচালা মাটির বাড়ি। এক চিলতে রোয়াকে চাটাই বিছিয়ে জোর আড্ডা জমিয়েছেন গ্রামবাসীরা ও মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। চা-জল সহযোগে গল্পের ঢঙে গ্রামবাসীরা মন্ত্রীকে বিভিন্ন অভাব-অভিযোগের কথা জানাচ্ছেন।

Advertisement

কেদারনাথ ভট্টাচার্য

মন্তেশ্বর শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৬ ০১:১৯
Share:

গ্রামবাসীদের নিয়ে চলছে আলাপ-আলোচনা। নিজস্ব চিত্র।

দোচালা মাটির বাড়ি। এক চিলতে রোয়াকে চাটাই বিছিয়ে জোর আড্ডা জমিয়েছেন গ্রামবাসীরা ও মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। চা-জল সহযোগে গল্পের ঢঙে গ্রামবাসীরা মন্ত্রীকে বিভিন্ন অভাব-অভিযোগের কথা জানাচ্ছেন। উত্তর দিচ্ছেন মন্ত্রীও। সঙ্গে আবেদন, মন্তেশ্বরের উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী সজল পাঁজাকে ভোট দেওয়ার। আড্ডায় উঠে এল প্রয়াত বিধায়ক থেকে ঘরের হেঁসেল, সব প্রসঙ্গই— সোমবার থেকে এমনই ‘চাটাই বৈঠকে’র আয়োজন করছে তৃণমূল।

Advertisement

মন্তেশ্বরের আসানপুর। মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ৩টে। চাটাই বিছিয়ে সবে খাওয়া-দাওয়া সেরে আড্ডার মেজাজে জড়ো হয়েছেন গ্রামবাসীদের একাংশ। রয়েছেন বাড়ির মহিলারাও। খানিক বাদে মোটরবাইকে চড়ে হাজির হলেন মন্ত্রী। সঙ্গে সঙ্গে এক বাসিন্দা বলে উঠলেন, ‘‘প্রয়াত বিধায়ক সজল পাঁজা ভোটের সময়ে জল প্রকল্প বানানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সেটা তো এখনও হল না।’’ মন্ত্রী স্বপনবাবুর চটজলদি জবাব, ‘‘সজল অকালে চলে গিয়েছেন। ওঁর অসমাপ্ত কাজের তালিকা রয়েছে। সে সব শেষ করবে সৈকত।’’

হাটপাড়ায় ‘চাটাই বৈঠক’ শেষ হওয়ার মুখে উপস্থিত মহিলাদের হেঁসেলেরও খবর নিয়ে গেলেন মন্ত্রী। সন্ধ্যায় বৈঠক শেষ হওয়ার মুখে মন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আর দেরি করব না। মা-মেয়েরা এ বার রান্না চাপাবেন যে।’’ বৈঠকে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মুখে কন্যাশ্রী, যুবশ্রী-সহ রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের বিষয়েও বলতে শোনা যায়।

Advertisement

তৃণমূল সূত্রের খবর, সোমবার থেকে মন্তেশ্বর পঞ্চায়েতের লোহার, ভারুচা, মাইচপাড়া, আসানপুর, হাটপাড়া-সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় এমন চাটাই-প্রচার শুরু হয়েছে।

আচমকা এমন প্রচারের উদ্যোগ কেন? উপনির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হওয়ার পরেই দলের জেলা সভাপতি (গ্রামীণ) স্বপন দেবনাথ বার্তা দেন, দরকারে বিধানসভা এলাকার প্রতিটি বাড়িতে দশ বার করেও যেতে হবে। সেই মতো প্রচারের শুরু থেকেই সভা-মিছিল-বাড়ি বাড়ি প্রচারে জোর দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। ভোট প্রচারে নামানো হয়েছিল দলের চিকিৎসক সংগঠনের সদস্যদেরও। কিন্তু বিভিন্ন কর্মসূচিতে বাড়ির মহিলাদের যোগদান আরও বাড়াতেই এমন পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি। স্বপনবাবু এ দিন জানিয়ে দেন, এমন চাটাই-বৈঠকের জন্য বিধানসভা এলাকার ১৭টি পঞ্চায়েত এলাকার নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ ধরনের বৈঠকের সুফলও মিলছে বলে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের দাবি। লাউড স্পিকারহীন এমন বৈঠকের সুফল তৃণমূলের ঘরে কতখানি উঠল, তা জানতে অবশ্য অপেক্ষা ২২ নভেম্বর, ফলপ্রকাশের দিন পর্যন্ত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন