প্রতীকী ছবি।
ফের তৃণমূলের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি পদে ফেরানো হল দুর্গাপুর পুরসভার প্রাক্তন মেয়র ও বিধায়ক অপূর্ব মুখোপাধ্যায়কে। প্রায় সাড়ে চার বছর পরে দায়িত্বে এলেন তিনি। অপূর্ববাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘কঠিন সময়ে দল আমাকে দায়িত্ব দিল। আমার দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করব।’’ দলের জেলা চেয়ারম্যান মলয় ঘটক বলেন, ‘‘দল যখন যাঁকে যোগ্য মনে করে, তাঁকে দায়িত্ব দিয়ে থাকে। দল নিশ্চয়ই অপূর্ব মুখোপাধ্যায়কে যোগ্য মনে করেছে। সে জন্য তাঁকে দায়িত্ব দিয়েছে।’’
তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে দলের সঙ্গে জড়িয়ে অপূর্ববাবু। ২০০১-এ তিনি সিপিএমকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো তৃণমূলের বিধায়ক হন। ২০০৬-এ অবশ্য তিনি সিপিএম প্রার্থী বিপ্রেন্দু চক্রবর্তীর কাছে হেরে যান। ফের বিধায়ক হন ২০১১-তে। পরের বছর তিনি দুর্গাপুরের মেয়র হন। ২০১৬-তে বিধানসভা নির্বাচনে বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থীর কাছে হেরে যাওয়ার পর পরেই অপূর্ববাবুকে জেলা সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
দলীয় সূত্রের খবর, এর পরেই অপূর্ববাবু কার্যত নিষ্ক্রিয় হয়ে যান। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাম্প্রতিক সময়ে জেলা সফরে এসে অপূর্ববাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কাঁকসায় দলীয় সংগঠনে নজর দেওয়া ও পুরসভায় গিয়ে জনসংযোগ বাড়ানোর নির্দেশ দেন দলনেত্রী। দলীয় সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, জিতেন্দ্র তিওয়ারি তাঁর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোয় দলের অন্দরে অপূর্ববাবুর নাম ঘোরাফেরা করতে শুরু করে পরবর্তী জেলা সভাপতি হিসেবে। শেষ পর্যন্ত রবিবার এ দিন দলের তরফে আট জনের কমিটি ঘোষণা করা হয়। জেলা সভাপতি হিসেবে নাম রয়েছে অপূর্ববাবুর।
তবে দীর্ঘদিন কেন নিজেকে ‘আড়ালে’ রেখেছিলেন অপূর্ববাবু? তিনি বলেন, ‘‘নিজে সিদ্ধান্ত নিয়েই আলাদা করে রেখেছিলাম নিজেকে। আমার হাত থেকে তৃণমূলের পতাকা কেড়ে নেওয়ার ক্ষমতা কারও নেই।’’ দুর্গাপুরের সংগঠনে কি আশু রদবদল হবে? অপূর্ববাবুর দাবি, ‘‘পুরনো কর্মীদের অনেকেই বলছিলেন, তাঁদের গুরুত্ব দেওয়া হয় না। সেই ক্ষোভ এ বার কেটে যাবে। আমি মনে করি সবাই অপরিহার্য। দলের দায়িত্ব যাঁরা সামলাচ্ছেন তাঁরা তো আছেনই। আরও হয়তো কাউকে কাউকে দায়িত্ব দিতে হতে পারে।’’
তবে দুর্গাপুরে বিজেপির সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেন অপূর্ববাবু। তিনি বলেন, ‘‘দুর্গাপুরের মাটি শক্ত মাটি। হাওয়া দিয়ে বিজেপি বেরোতে পারবে না দুর্গাপুরে।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের মন্তব্য, ‘‘উনি নতুন দায়িত্বে এসেছেন। কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করার জন্য এমন বলতে হচ্ছে। বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল সাফ হয়ে যাবে।’’