জন্মের পর নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন ছিল সদ্যোজাত মেয়েটি। কিন্তু অসুস্থ হয়ে পড়ায় ভিন্ জেলা থেকে আসতে পারেননি বাবা-মা। এ দিকে বিল ছাড়িয়ে গিয়েছে তিন লক্ষ টাকা। পরে পরিবারের লোকজন এসে টাকা দিতে অক্ষমতার কথা জানালে প্রায় ৭০ হাজার টাকা ছাড় দিয়েই শিশুকে বাড়ি পাঠাল নার্সিংহোম।
এমনই চিত্র দেখা গেল বর্ধমানের ভাঙকুঠিতে ‘কিশলয়’ নামে ওই নার্সিংহোমে। এই ঘটনা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া পদক্ষেপের ফল বলে মনে করছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। বর্ধমানের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) প্রণব রায় বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগেই পরিস্থিতি পাল্টাচ্ছে।’’
হুগলির গোঘাটের বাসিন্দা মৌমিতা দে-র স্বামী রামকৃষ্ণ দে জানান, প্রসবের সময়ে তাঁদের কাছে টাকা ছিল না। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে তা জানানোর পরেও তাঁরা চিকিৎসা শুরু করেন। জন্মের পর থেকেই শিশুটি শ্বাসকষ্ট-সহ নানা রোগে ভুগছিল। তাকে রাখা হয় নিওনেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে, যার দৈনিক ভাড়া ছ’হাজার। হুগলির গোঘাটের ওই কৃষক দম্পতি জমি বিক্রি করে কিছু টাকা মেটান।
রামকৃষ্ণবাবু জানান, প্রসবের পরে মেয়েকে ভেন্টিলেশন থেকে বের করতেই সংক্রমণ হয়। ফের তাকে এনআইসিইউ-য়ে ভর্তি করাতে হয়। এর মধ্যে চিকেন পক্সে আক্রান্ত হন রামকৃষ্ণবাবু। পরে মৌমিতাদেবীরও চিকেন পক্স হয়। ফলে, তাঁরা আর নার্সিংহোমে আসতে পারছিলেন না।
শিশুটির চিকিৎসা অবশ্য সে জন্য বন্ধ হয়নি। শনিবার তাকে নিতে নার্সিংহোমে আসেন রামকৃষ্ণবাবুর মা কবিতাদেবী। চিকিৎসার বিল দাঁড়ায় ৩ লক্ষ ১০ হাজার টাকা। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ ৭০ হাজার টাকা ছাড় দেওয়ায় হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন রামকৃষ্ণবাবুরা। তিনি বলেন, ‘‘ওঁরা প্রথম দিন থেকে আমাদের বিশ্বাস করেছেন। সমস্যা শুনে পরে বা কিস্তিতে টাকা দিতে বলেছেন। বিলে ছাড় দিয়েছেন। আমরা এতে কৃতজ্ঞ।’’