কালনার সাধপুকুর জুনিয়র হাইস্কুলে চলছে ক্লাস। নিজস্ব চিত্র
পরিকাঠামোর হাল ফেরাতে স্কুল ‘দত্তক’ নিয়েছিলেন প্রশাসনের কর্তা। কিন্তু তার পরেও ভোল পাল্টায়নি কালনা ২ ব্লকের সাধপুকুর জুনিয়র হাইস্কুলের। স্কুলের মেঝেতে বসেই এখনও ক্লাস করছে পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়ারা।
কাছাকাছি উচ্চ বিদ্যালয় না থাকায় ২০১০ সালে সাধপুকুর এলাকায় অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ওই স্কুলটি তৈরি হয়। এখন সাধপুকুর ছাড়াও রুকুসপুর, ধর্মডাঙা ও রুস্তমপুরের ছেলেমেয়েরা এই স্কুলে পড়তে আসে। ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৮৮। আছেন ৫ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা। তবে পরিকাঠামো ভাল নয় গ্রামের এই স্কুলটিক। দোতলা স্কুলটিতে রয়েছে চারটি ক্লাসঘর ও একটি স্টাফরুম। তবে বেশির ভাগ ঘরের দেওয়ালে এখনও প্লাস্টার হয়নি। ফলে, ঘরগুলি বেশ স্যাঁতস্যাঁতে। সব থেকে দুর্দশা পঞ্চম শ্রেণিতে পড়া ১৩ জন ছাত্রছাত্রীর। তাদের জন্য নেই বসার টেবিল-বেঞ্চ। শীতেও ঠান্ডা মেঝেতে বসে ক্লাস করতে হয় তাদের।
স্কুল সূত্রে জানা যায়, এখনও কোনও কম্পিউটার মেলেনি। নেই কমিউনিটি হল। ফলে, কোনও অনুষ্ঠান করা যায় না। স্কুলের জন্য নেই কোনও খেলার মাঠ। বার্ষিক ক্রীড়ায় পড়ুয়ারা যোগ দিতে পারে না। একশো দিনের প্রকল্পে বৃক্ষরোপণ-সহ নানা কর্মসূচি নেওয়া হয় বহু স্কুলেই। কিন্তু এই প্রকল্পে কোনও কাজ এখনও পর্যন্ত এই স্কুলটিতে হয়নি।
চলতি বছরে স্কুলটিতে উন্নয়নমূলক কাজ করার জন্য ‘দত্তক’ নেন কালনা ২ বিডিও মিলন দেবগড়িয়া। জুলাইয়ের মাঝামাঝি তিনি স্কুলটি ঘুরে দেখেন। স্কুলের তরফে বিডিও-কে সমস্যাগুলি জানানো হয়। তবে তার পরেও অবস্থার কোনও পরিবর্তন হয়নি। প্রধান শিক্ষিকা প্রিয়াঙ্কা প্রধান বলেন, ‘‘স্কুল তহবিলে উন্নয়ন করার মতো তেমন অর্থ নেই। বিডিও যখন স্কুলে এসেছিলেন তাঁকে সমস্যার কথা জানানো হয়েছিল।’’
বৃহস্পতিবার কালনা ২ ব্লকে প্রশাসনিক কাজকর্ম দেখতে আসেন জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব। তিনি স্কুলটির বিষয়ে বিডিও মিলনবাবুর কাছে জানতে চান। বিডিও বলেন, ‘‘তহবিলে অর্থ না থাকার কারণে স্কুলটির সমস্যা মেটানো যায়নি। টাকা এলেই স্কুলের সমস্যা মেটানো হবে।’’ জেলাশাসক জানান, জেলার প্রায় একশোটি স্কুল সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে। সে জন্য ছ’কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে। চলতি আর্থিক বছরে তা পেয়ে যাবে জেলা, আশা তাঁদের।