তিন মাসেও খোলেনি বীরভানপুর শ্মশানের বিশ্রমাগারটি। নিজস্ব চিত্র।
শ্মশানযাত্রীদের জন্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বিশ্রামাগারের উদ্বোধন হয়ে গিয়েছে তিন মাস আগে। কিন্তু তারপরেও শীতাতপ নিয়ন্ত্রক যন্ত্রের পাহারাদার ঠিক না হওয়ায় তা ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এমনই হাল বীরভানপুর শ্মশানের বিশ্রামাগারটির।
শ্মশানযাত্রীরা দীর্ঘদিন ধরেই একটি ভাল বিশ্রামগারের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। তাঁদের অভিযোগ ছিল, বিশ্রামাগার না থাকায় রোদ-বৃষ্টিতে ভোগান্তির মুখে পড়তে হয়। শেষমেশ দীর্ঘদিনের দাবি মেনে পুরসভা শীততাপ নিয়ন্ত্রিত বিশ্রামাগার তৈরি করে দেয়। প্রশাসনের সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস তিনেক বিশ্রামাগারটির উদ্বোধনও হয়। কিন্তু তারপরেও সেটি তালাবন্ধ পড়ে রয়েছে বলে জানান শ্মশানযাত্রীরা।
তালা খোলেনি কেন বিশ্রামাগারের? প্রশাসনের সূত্রে জানা গিয়েছে, শীতাতপ নিয়ন্ত্রক যন্ত্রের পাহার কে দেবে, তা নিয়ে টালবাহানার জেরেই বিশ্রামাগারটি খোলা হয়নি। পুরসভার পূর্ত দফতরের মেয়র পারিষদ প্রভাত চট্টোপাধ্যায় জানান, পাহারার জন্য প্রথমে চার জন বন্দুকধারী রাখা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। পরে মেয়র পারিষদদের বৈঠকে ঠিক হয়, বন্দুকধারী নয়, লাঠিধারী নিরাপত্তারক্ষী রাখা হবে। কারণ, ওই নির্জন জায়গায় দুষ্কৃতীরা নিরাপত্তারক্ষীদের কাছ থেকে বন্দুক ছিনতাই করে নিতে পারে। সে ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সমস্যা দেখা দিতে পারে। এরপরে পুরসভা লাঠিধারী নিরাপত্তারক্ষী চেয়ে দরপত্র ডাকলে দু’টি সংস্থা যোগ দেয়। এ ক্ষেত্রেও তৈরি হয় জটিলতা। কারণ নিয়ম অনুয়ারে, ই-টেন্ডারে তিনটি সংস্থার যোগদান বাধ্যতামূলক।
বীরভানপুরে দামোদরের পাড়ে আশিসনগর কলোনি ও বিদ্যাসাগর কলোনি লাগোয়া এলাকার এই বহু পুরনো শ্মশানঘাটটি নিয়ে বিতর্ক অবশ্য নতুন নয়। বাসিন্দাদের দাবি মেনে ২০০২ সালে পুরসভা বৈদ্যুতিক চুল্লি তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়। বড় পাকা ভবনও তৈরি করা হয়। কিন্তু চুল্লি সরবরাহের বরাত নিয়ে একটি সংস্থা পুরসভার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করে। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ফের দরপত্র ডাকা হয়। এরপরেও অন্য এক আবেদনকারী হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন। শেষ পর্যন্ত ২০০৫ সালে বিষয়টির সমাধান হয়। কেন্দ্রীয় সরকারের ‘ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট অফ স্মল অ্যান্ড মিডিয়াম টাউনস’ প্রকল্পের অধীনে প্রায় এক কোটি টাকা খরচে দু’টি বৈদ্যুতিক চুল্লি নির্মাণ করা হয়। ২০০৭ সালে চুল্লির উদ্বোধন করেন তৎকালীন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য।
এলাকাবাসীর আশঙ্কা, বিশ্রামাগারটি নিয়েও জটিলতা তৈরি হবে না তো। যদিও প্রভাতবাবু বলেন, ‘‘নতুন করে দরপত্র ডাকা হয়েছে। চলতি মাসেই চালু করা যাবে বিশ্রামাগারটি।’’