মুলটি

পুজোর বাজেট ছেঁটে চিকিৎসায় সাহায্য

প্যান্ডেল বাঁধা শেষের পথে। অলি-গলি যখন আলোয় সেজে উঠছে, তখনই আঁধার নেমেছে জুড়ে কাটোয়া ২ ব্লকের মুলটি গ্রামে। গ্রামের ছেলে সুমন সেন তখন কলকাতার নার্সিংহোমে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। তাঁই পুজোর চাঁদা নয়, গ্রামের ছেলের চিকিৎসার জন্য চাঁদা তুলছেন তাঁরা।

Advertisement

সুচন্দ্রা দে

কাটোয়া শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৬ ০০:০০
Share:

প্যান্ডেল বাঁধা শেষের পথে। অলি-গলি যখন আলোয় সেজে উঠছে, তখনই আঁধার নেমেছে জুড়ে কাটোয়া ২ ব্লকের মুলটি গ্রামে। গ্রামের ছেলে সুমন সেন তখন কলকাতার নার্সিংহোমে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। তাঁই পুজোর চাঁদা নয়, গ্রামের ছেলের চিকিৎসার জন্য চাঁদা তুলছেন তাঁরা। পুজোর জৌলুস কমিয়ে সেই টাকা অসুস্থ সুমনের পরিবারের হাতে তুলে দিতে রাতদিন এক করে দিচ্ছেন গ্রামের ক্লাবের জনা পঁচাত্তর সদস্য।

Advertisement

প্রতি বছরের মতোই এ বারও পুজোর আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মুলটি তরুণ সঙ্ঘ। তার কিছুদিন আগে থেকেই সেন পাড়ার বছর পঁচিশের যুবক সুমন কলকাতার হাসপাতালে ভর্তি। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মাস তিনেক আগে একবার ট্রেকার থেকে পড়ে গিয়ে কোমরে আঘাত লেগেছিল সুমনের। তারপর সব ঠিক হয়ে গেলেও বিশ্বকর্মা পুজোর সময় থেকে আচমকা জ্বর, পেটে যন্ত্রনা শুরু হয়। আল্টাসোনোগ্রাফিতে জানা যায় যে পেটে ও বুকে জল জমেছে। তারপর বর্ধমান, সেখান থেকে কলকাতার পিজি, সেখান থেকে আর এক হাসপাতালে ছুটোছুটি। আপাতত ভেন্টিলেশনে রয়েছেন একটি রং কোম্পানির কর্মী সুমন। বাড়িতে বাবা মায়ের দেখভাল করছেন বোন পপিতা। তিনি জানান, দাদা অসুস্থ হওয়ার পর থেকেই রোজগার বন্ধ। তার মধ্যে চিকিৎসার খরচ। বাবা-মায়ের শরীরও ক্রমশই খারাপ হয়ে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।

এ সব দেখেই ক্লাব কর্তৃপক্ষ ঠিক করে যেটুকু হয়েছে, আর নয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় প্যান্ডেল তৈরির কাজ। ঠিক হয় মাইক, আলো কিছুই থাকবে না এ বার। দুর্গা পুজোর টাকা কাটছাঁট করে সুমনকে সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন তাঁরা। গ্রামের টুটুল সেন, প্রসূন চট্টোপাধ্যায়, সন্দীপ সেনদের দেখা যায় পাশের শ্রীবাটি, ওকড়শা, সিঙ্গি গ্রামে গিয়ে বাড়ি বাড়ি চাঁদা তুলতে। এমনকী, স্কুলগুলোতেও সাহায্যের জন্য ঢুঁ মারছেন ক্লাবের সদস্যরা। তরুণ সঙ্ঘের সম্পাদক দেবকুমার চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ও যাতে সুস্থ হয় তার জন্যই আমাদের পথে নামা। অন্য বার যেখানে ৮০ হাজার টাকা বাজেট হয় পুজোর, সেখানে এ বার খুবই কম টাকায় পুজো সারছি।’’ সুমনের পরিবারের লোকেরাও জানান, ক্লাবের সদস্যদের এমন উদ্যোগে তাঁরা কৃতজ্ঞ।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন