রক্তের উপাদান আলাদা হচ্ছে আসানসোলেই

গত ১৩ ফেব্রুয়ারি কৃষ্ণনগর থেকে এই কেন্দ্রটির উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিকাঠামো অনেক আগেই তৈরি হয়ে যাওয়ায় উদ্বোধনের পরের দিনই কেন্দ্রটি কাজ শুরু করে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০১৮ ০৪:৪৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

হাসপাতাল চত্বরেই ছেলেকে নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন বাবা। জানালেন, ছেলে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত। ছেলের চিকিৎসার জন্য প্রায়ই ছুটতে হতো কলকাতা। কিন্তু এখন সে সমস্যা মিটেছে।

Advertisement

আসানসোলের বাসিন্দা ওই ব্যক্তির মতো জেলার নানা প্রান্তের মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়েছে আসানসোল জেলা হাসপাতালের রক্তের পৃথকীকরণ কেন্দ্রটি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, চালু হওয়ার এক মাসের মধ্যেই সাফল্যের মুখ দেখতে শুরু করেছে কেন্দ্রটি।

হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের আধিকারিক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় জানান, রক্তের উপাদান পৃথকীকরণে সবথেকে বেশি উপকৃত হচ্ছে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুরা। দৈনিক গড়ে ২০ জন থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুকে লোহিত রক্তকণিকা দেওয়া হচ্ছে। যাঁরা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে, তাদের নিখরচায় ও যারা বাইরের কোনও হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে ভর্তি রয়েছে তাদের কাছ থেকে ইউনিট প্রতি তিনশো টাকা দাম নেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে দেওয়া হচ্ছে শ্বেত রক্তকণিকাও। অগ্নিদগ্ধ রোগীদের জন্য রক্তরসও আসানসোল জেলা হাসপাতাল থেকে নিয়মিত দেওয়া হচ্ছে। সঞ্জীববাবুর দাবি, ‘‘দুর্গাপুরেও আমাদের এখান থেকে রক্তের উপাদান পাঠানো হচ্ছে।’’

Advertisement

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, উপাদানগুলির মধ্যে লোহিত রক্তকণিকার চাহিদা সবথেকে বেশি। চাহিদা প্রায় নেই শ্বেত রক্তকণিকার। সংগৃহীত এক ইউনিট রক্তে অন্তত তিন জনের চাহিদা মিটছে বলেও জানা গিয়েছে।

গত ১৩ ফেব্রুয়ারি কৃষ্ণনগর থেকে এই কেন্দ্রটির উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিকাঠামো অনেক আগেই তৈরি হয়ে যাওয়ায় উদ্বোধনের পরের দিনই কেন্দ্রটি কাজ শুরু করে।

হাসপাতালের সুপার নিখিলচন্দ্র দাস জানান, শিল্পাঞ্চলে প্রতি মাসে ১৫ হাজার ইউনিট রক্ত প্রয়োজন। বছরভর শিবির হলেও জেলায় রক্তের চাহিদায় ঘটতি থাকে। কেন্দ্রটি চালু হওয়ায় এই ঘাটতি খানিকটা হলেও মিটবে বলে আশা চিকিৎসকদের। নিখিলবাবু বলেন, ‘‘এটি জেলার একমাত্র পৃথকীকরণ কেন্দ্র। ভবিষ্যতে আরও বেশি পরিমাণে রক্তের উপাদান পৃথকীকরণ করতে কারিগরি দক্ষতা বাড়াতে জোর দিচ্ছি।’’

হাসপাতালে এই কেন্দ্রটি চালু হওয়ায় খুশি এলাকার বাসিন্দারাও। তাঁরা জানান, এর ফলে দুর্ভোগের পাশাপাশি কমেছে খরচও। মন্ত্রী মলয় ঘটকও বলেন, ‘‘এলাকার প্রয়োজনে মুখ্যমন্ত্রী এই কেন্দ্রটি তৈরির অনুমতি দিয়েছেন। সেটি সাফল্যের সঙ্গে কাজ করায় জেলাবাসী উপকৃত হয়েছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন