সাত সকালেই কলিং বেল। দরজা খুলে কালনার তেঁতুলতলা এলাকার বধূ পারমিতা দাস দেখেন দরজার সামনে গ্যাসওয়ালা। গাড়ি থেকে সিলিন্ডার নামানোর আগেই তিনি জানিয়ে দিলেন, পাঁচশো টাকার নোট চলবে না। পারমিতাদেবী ১০০ টাকার নোট নেই জানাতেই ধাঁ গ্যাসওয়ালা।
স্বস্তি নেই বাজারেও। বর্ধমান শহরে স্টেশন বাজার, তেঁতুলতলা বাজার থেকে পুলিশ লাইন, নীলপুর বাজার সর্বত্রই সব্জি-মাছ বিক্রেতাদের সঙ্গে খুচরো নিয়ে বাদানুবাদ চলল। সব্জি ব্যবসায়ীরা পাঁচশো, হাজার নিতে অস্বীকার করছেন, নিমরাজি ফল ব্যবসায়ীরাও। বিক্রেতাদের দাবি, ‘‘বড় নোট না নেওয়ায় চেনা খরিদ্দারও মুখ ফিরিয়ে চলে যাচ্ছেন। কিন্তু আমরাই বা কী করব!’’ মাছ বা মাংস ব্যবসায়ীদের ৫০০ বা ১০০০ টাকা নিতে দেখা যায়। তবে শর্ত একটাই, ৫০-১০০ টাকার মাছ নিলে হবে না, অন্তত তিন-সাড়ে তিনশো টাকার মাছ নিতে হবে।
কালনার বাজারে আবার খুচরো না থাকায় খালি থলে নিয়েই ফিরে যেতে হয় অনেককে। শিক্ষক কালীপদ দাস জানান, বাড়িতে হাজার পাঁচেক টাকা ছিল। সবই পাঁচশো টাকার নোট। একটা নিয়ে বাজার গেলেও সব্জি-মাছের দোকান কেউই টাকা ভাঙিয়ে না দেওয়ায় ফাঁকাই ফিরতে হল। শহরের রেজিস্ট্রি অফিসের সামনে লটারির টিকিট বিক্রি করেন কাশীনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। তার দোকানের সামনে ঝুলছে একটি বিজ্ঞপ্তি। তাতে লেখা, পুরস্কারের টাকা ৫০ এবং ১০০ টাকার নোটে দেওয়া হবে। কাশীনাথবাবুর দাবি, ‘‘সকাল থেকে টিকিট বিক্রি হচ্ছিল না। খরিদ্দারদের আশ্বস্ত করার পরে পরিস্থিতি কিছুটা ভাল হয়।’’