ট্রাক্টরের ধাক্কায় মৃত প্রৌঢ়, কয়লা পাচার নিয়ে ক্ষোভ

বেআইনি কয়লা বোঝাই ট্রাক্টরের ধাক্কায় এক প্রৌঢ়ের মৃত্যুতে ধুন্ধুমার হল জামুড়িয়ার চুরুলিয়ায়। পথ অবরোধ, পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জামুড়িয়া শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:৪৫
Share:

শোকার্ত পরিজনেরা। নিজস্ব চিত্র।

বেআইনি কয়লা বোঝাই ট্রাক্টরের ধাক্কায় এক প্রৌঢ়ের মৃত্যুতে ধুন্ধুমার হল জামুড়িয়ার চুরুলিয়ায়। পথ অবরোধ, পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। পুলিশের মদতেই এলাকায় অবৈধ কয়লা পাচারের রমরমা চলছে বলে তাঁদের অভিযোগ। শেষে ট্রাক্টরের মালিক মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার পরে বিক্ষোভ থামে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার ভোরে দুর্ঘটনাটি ঘটে চুরুলিয়া পঞ্চায়েতের শৈলবালা বালিকা বিদ্যালয়ের পিছনে। স্থানীয় মাজিপাড়ার বাসিন্দা অশোক মাজির (৫৬) ছোট মেয়ের বিয়ে ২০ ফেব্রুয়ারি। এ দিন ভোর সওয়া ৫টা নাগাদ তিনি বিগুলিতে বড় মেয়ের শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছিলেন সাইকেলে চড়ে। কয়লা বোঝাই ট্রাক্টরের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। মৃতদেহ আটকে রেখে অবরোধ শুরু করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। নেতৃত্বে ছিলেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা ব্রজনারায়ণ রায়।

চুরুলিয়া ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে বিক্ষোভ বেড়ে যায়। বাসিন্দারা পুলিশকে ঘিরে ধরে অভিযোগ করেন, তাদের মদতেই এ ভাবে কয়লা পাচার হচ্ছে। বন্ধ থাকা একটি বেসরকারি খনির জয়নগর মৌজা ও বারাবনির একটি বেসরকারি খনির বিগুলি মৌজা থেকে দিনরাত কয়লা কাটছে দুষ্কৃতীরা। ট্রাক্টর, গরুর গাড়ি, সাইকেলে করে তা পাচার করা হচ্ছে। বেআইনি কয়লা যাচ্ছে জামুড়িয়ার দরবারডাঙায় একটি গুল ফ্যাক্টরি ও অজয় পেরিয়ে বীরভূমে। কয়লা বোঝাই ট্রাক্টরের কাছে পাঁচশো, গরুর গাড়ি কাছে তিনশো ও সাইকেলের কাছে পঞ্চাশ টাকা করে নিয়ে পুলিশকর্মীদের একাংশ ছেড়ে দেন বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। অবিলম্বে এ সব বন্ধ করতে হবে দাবি তুলে পুলিশকে আটকে রাখে জনতা। ট্রাক্টরের মালিককে এসে মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে বলেও দাবি করা হয়।

Advertisement

সকাল ৯টা নাগাদ জামুড়িয়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। তাদের ঘিরেও বিক্ষোভ দেখান বাসিন্দারা। শেষ পর্যন্ত সকাল ১০টা নাগাদ ট্রাক্টরটির মালিক ঘটনাস্থলে পৌঁছে এলাকাবাসীর দাবি মতো মৃতের পরিবারের হাতে ক্ষতিপূরণের ৫ লক্ষ টাকার চেক তুলে দিলে বিক্ষোভ থামে। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়না-তদন্তের জন্য আসানসোল জেলা হাসপাতালে পাঠায়।

পুলিশের বিরুদ্ধে কয়লা পাচারে মদতে অভিযোগের কথা মানতে চাননি পুলিশ কমিশনারেটের এডিসিপি (সেন্ট্রাল) জে মার্সি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এই অভিযোগ ঠিক নয়। পুলিশ নিরন্তর অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। কয়লা উদ্ধারের খতিয়ান দেখলেই তা বোঝা যাবে।’’ পুলিশের দাবি, সরু রাস্তায় দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছে। মৃতের পরিবার যাতে বিমাজনিত সুবিধা দ্রুত পেতে পারেন সেই চেষ্টা করা হচ্ছে। ট্রাক্টরের চালকের খোঁজ চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন