আগেই দুই সিভিক ভলান্টিয়ারকে ধরা হয়েছিল। এ বার সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব ছড়ানোর অভিযোগে আরও এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
ধৃত বনমালী হালদারের বাড়ি নাদনঘাট পঞ্চায়েতের ধোবা এলাকায়। তার ‘ফেসবুক’ ও ‘হোয়াটসঅ্যাপ’ অ্যাকাউন্ট থেকে গুজবে ইন্ধন জোগানোর মতো পোস্ট শেয়ার করা হয়েছে বলে পুলিশের দাবি। কালনার এসডিপিও প্রিয়ব্রত রায় বলেন, ‘‘ধৃত তিন জনের বিরুদ্ধেই প্রমাণ মিলেছে। তিন জনকেই বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে এরা ওই চক্রের মাথা নয়। এদের জিজ্ঞাসাবাদ করে মূল পান্ডাদের খোঁজখবর করা হবে।’’
বেশ কয়েক দিন ধরেই ‘ফেসবুক’, ‘হোয়াটসঅ্যাপে’ কিছু ‘শেয়ার’ করা ‘পোস্ট’ বা ‘মেসেজ’ ঘুরছে যে—বিভিন্ন এলাকায় ছেলেধরা, ডাকাত, জঙ্গি ঘুরছে। বাড়িতে ঢুকে মহিলাদের শ্লীলতাহানিও করছে। সেই গুজবের জেরে উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়া, হুগলি ও বর্ধমানের কিছু জায়গায় বেশ কিছু ঘটনাও ঘটে গিয়েছে। কালনার বারুইপাড়ায় ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে প্রাণ গিয়েছে এক কীটনাশক বিক্রেতার। ধাত্রীগ্রামে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর হয়েছে। সোমবারেও মন্তেশ্বরে ছেলেধরা সন্দেহে হেনস্থা করা হয়েছে এক তরুণীকে। গাইঘাটা, নদিয়াতেও জঙ্গি সন্দেহে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি সামলাতে পাল্টা পোস্ট শেয়ার করছেন প্রশাসনের কর্তারা। মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের উদ্যোগেও একসঙ্গে ৫০০ জন মিলে হোয়াটসঅ্যাপে গুজব বিরোধী পোস্ট শেয়ার করা হয়। স্কুল পড়ুয়া, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, পঞ্চায়েত সদস্য, জনপ্রতিনিধিরাও প্রচার, মিছিল, লিফলেট বিলি করছেন। তবে গুজব ছড়ানোর কারণ বা উৎস কোথায় তার কোনও সুরাহা করতে পারেনি পুলিশ।
পুলিশ জানায়, ধৃত অন্য দুই সিভিক ভলান্টিয়ারের মধ্যে কামালউদ্দিন শেখের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে হাবড়ার এক বন্ধুর কাছ থেকে শেয়ার করা একটি পোস্ট মিলেছে। কামালউদ্দিনের মোবাইল বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। ধোবার সিভিক ভলান্টিয়ার বনমালী এ দিন একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে ছিলেন। নাদনঘাট থানার পুলিশ একটি অভিযানে নামা হবে বলে তাকে থানায় ডেকে নেয়। তারপরে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তবে গুজব ছড়ানোর উদ্দেশ্য পুলিশের কাছে এখনও স্পষ্ট নয়। পুলিশের দাবি, কয়েক ঘণ্টা মধ্যে হাজার হাজার মোবাইলে মেসেজগুলি ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে আসল প্রেরক কে তার খোঁজ করা জটিল।
আপাতত মহকুমা পুলিশের চারটি থানা মিলে একটি দল গড়ে বিষয়টির উপর নজর রাখা হচ্ছে। স্থানীয় ‘সোর্স’ থেকে খবর জোগাড় করে কারা এই ধরনের গুজব ছড়াচ্ছেন তা দেখা হচ্ছে বলে পুলিশের দাবি।