খোট্টাডিহিতে সুরক্ষার অভাবের অভিযোগ

খনিগর্ভে দুর্ঘটনায় মৃত্যু কর্মীর

কোলিয়ারি সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বিকেল ৩টে নাগাদ ভূগর্ভে কয়লা কাটার জন্য প্রয়োজনীয় বিস্ফোরক নিয়ে যাচ্ছিলেন কপিলবাবু। সেই সময়ে একটি গাড়ি কয়লা বোঝাই করে কনভেয়ার বেল্টে রাখতে যাচ্ছিল। হঠাৎ কপিলবাবু সেটির নীচে চাপা পড়ে যান। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাণ্ডবেশ্বর শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:৪৭
Share:

সোমবার বিকেলে খনি চত্বরে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র

খনিগর্ভে কয়লার গাড়িতে চাপা পড়ে মৃত্যু হল এক কর্মীর। ইসিএলের খোট্টাডিহি কোলিয়ারির ২ নম্বর পিটে সোমবার ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম কপিল দুষাদ (৫২)। তিনি ছাতাধাওড়ার বাসিন্দা ছিলেন।

Advertisement

কোলিয়ারি সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বিকেল ৩টে নাগাদ ভূগর্ভে কয়লা কাটার জন্য প্রয়োজনীয় বিস্ফোরক নিয়ে যাচ্ছিলেন কপিলবাবু। সেই সময়ে একটি গাড়ি কয়লা বোঝাই করে কনভেয়ার বেল্টে রাখতে যাচ্ছিল। হঠাৎ কপিলবাবু সেটির নীচে চাপা পড়ে যান। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।

এর পরেই পাঁচটি শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্বে মৃতের নিকটাত্মীয়কে চাকরি, পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও সুরক্ষা আধিকারিকের বদলির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন খনিকর্মীরা। তাঁদের দাবি, এই খনিতে সুরক্ষা ব্যবস্থা বিপর্যস্ত। তাই বারবার দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন কর্মীরা। পুজোর দিন কয়েক আগে বোনাস পাওয়ার দিন ভূগর্ভে কয়লার চাঁই পড়ে দুই কর্মীর মৃত্যু হয়। তার পরেও সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে তৎপর হননি খনি কর্তৃপক্ষ, অভিযোগ তাঁদের।

Advertisement

এই কোলিয়ারির কেকেএসসি-র সভাপতি জগবন্ধু ঘোষ অভিযোগ করেন, খনিগর্ভে কর্মীদের যাতায়াতের পৃথক রাস্তা তৈরি করা হয়নি। কয়লা-সহ যন্ত্রপাতি ও গাড়ি নিয়ে যাওয়ার রাস্তাই কর্মীদের ব্যবহার করতে হয়। খনিগর্ভে মুক্ত বাতাস চলাচল করে না ঠিক ভাবে। তার জেরে গরমের মধ্যে কাজ করতে হয়। ছাই-ধুলো ওড়ে। তাতে অনেক সময় কর্মীদের দেখতে সমস্যা হয়। তার জেরেই মাঝে-মাঝে কর্মীরা পড়ে যান।

এ দিন যে গাড়িটিতে দুর্ঘটনা ঘটে, সেটির চালক অনুরাগ বাউরির বক্তব্য, ‘‘ছাই ও মাটির গুঁড়ো খনিতে বিস্ফোরণের সময়ে বেশি ওড়ে। তাতে গাড়ির সামনে কেউ রয়েছেন কি না, বোঝা মুশকিল হয়। আমিও বেশ কয়েক বার সুরক্ষা আধিকারিককে তা জানিয়েছে। কোনও ব্যবস্থা হয়নি।’’ তাঁর দাবি, এ দিন কপিলবাবুকে তিনি দেখতে পাননি। তার জেরেই এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে গিয়েছে। খনির সুরক্ষা আধিকারিক নন্দকিশোর মিনা কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

ঘটনার পরে কপিলবাবুর বাড়ি খনি লাগোয়া ছাতাধাওড়া এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। তাঁর স্ত্রী বিরোদেবী, তিন ছেলে মুকেশ, অখিলেশ, মিথিলেশ ও মেয়ে তেত্রীকে সামলাচ্ছিলেন প্রতিবেশীরা। বড় ছেলে মুকেশ বলেন, ‘‘আমরা চাই খনিতে সুরক্ষা ব্যবস্থা ঢেলে সাজা হোক। যাতে আর কারও এ ভাবে মৃত্যু না হয়।”

ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় বলেন, ‘‘দুর্ঘটনা নিয়ে তদন্ত হবে। সংস্থার বিধি মেনেই নিকটাত্মীয়ের চাকরি ও ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন