বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ
Dengue

অ্যালাইজা পরীক্ষা এক যন্ত্রে, ‘চাপ’

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ল্যাবরেটরিতে একটি মাত্র অ্যালাইজা যন্ত্রে ডেঙ্গি নির্ণায়ক পরীক্ষা করা হচ্ছে। গত জুলাইয়ে যেখানে ১৫৮ জনের রক্ত পরীক্ষা করা হয়েছে, সেপ্টেম্বরে সেখানে ৩২৬ জনের পরীক্ষা হয়। গত মাসে  ৫১১ জনের পরীক্ষা হয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৭ ০০:৪৭
Share:

বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ। ছবি: সংগৃহীত।

একটা অ্যালাইজা যন্ত্র। তার ভরসাতেই ডেঙ্গির জীবাণুর খোঁজে নেমেছে পূর্ব বর্ধমান জেলা স্বাস্থ্য দফতর।

Advertisement

প্রতিদিন জ্বরাক্রান্ত প্রচুর রোগী বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। লাগোয়া পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, হুগলি জেলা ছাড়াও ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দাদের একাংশ এই হাসপাতালের উপরে নির্ভরশীল। এই বিস্তীর্ণ এলাকায় অ্যালাইজা পরীক্ষার মাধ্যমে ডেঙ্গি নির্ণয় হয় শুধু বর্ধমান মেডিক্যালে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায় বলেন, “অ্যালাইজা পরীক্ষা ছাড়া ডেঙ্গি হয়েছে বলে কোনও রিপোর্ট আমরা মানছি না।”

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ল্যাবরেটরিতে একটি মাত্র অ্যালাইজা যন্ত্রে ডেঙ্গি নির্ণায়ক পরীক্ষা করা হচ্ছে। গত জুলাইয়ে যেখানে ১৫৮ জনের রক্ত পরীক্ষা করা হয়েছে, সেপ্টেম্বরে সেখানে ৩২৬ জনের পরীক্ষা হয়। গত মাসে ৫১১ জনের পরীক্ষা হয়েছিল। অ্যালাইজা পরীক্ষায় যথাক্রমে ওই দুই মাসে ১৩ ও ৮০ জনের ‘ডেঙ্গি পজেটিভ’ মিলেছিল। চলতি মাসে সোমবার পর্যন্ত প্রায় ৪৫০ জনের রক্ত পরীক্ষা হয়েছে, তার মধ্যে ৯৭ জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে।

Advertisement

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের চিন্তা, প্রতিদিন যে ভাবে দুই বর্ধমান, বীরভূম, হুগলি ও ঝাড়খণ্ডের মানুষ জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হচ্ছেন, তাতে ডেঙ্গির জীবাণু নির্ণয়ের ‘চাপ’ শেষ পর্যন্ত সামাল দেওয়া যাবে কি? আজ, মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে সেই উত্তরই খুঁজবে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।

হাসপাতালের এক শীর্ষ কর্তার দাবি, “একটি অ্যালাইজা যন্ত্রে ডেঙ্গি নির্ণয় করা হয়। এখন আট-দশ দিনের ‘কিট’ মজুত রয়েছে। খুব দ্রুত কিট সরবরাহ করার জন্য স্বাস্থ্য দফতরকে বলা হয়েছে।” হাসপাতালের ডেপুটি সুপার অমিতাভ সাহা এ দিনই ‘কিট’ কেনার আবেদন করেছেন।

হাসপাতাল সুপার উৎপল দাঁ অবশ্য বলেছেন, “আমাদের কাছে অনেকগুলো অ্যালাইজা যন্ত্র রয়েছে। প্রয়োজন হলে ওই যন্ত্রগুলিও ব্যবহার করা হবে।” জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, আসানসোল ও সিউড়ি জেলা হাসপাতালে অ্যালাইজা যন্ত্র থাকলেও, তিন দিনের বেশি জ্বরে ভোগা রোগীকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ‘রেফার’ করে দেওয়া হয়। ফলে, বর্ধমান মেডিক্যালের উপরে ‘চাপ’ তৈরি হয়।

বর্ধমান শহর ও লাগোয়া এলাকায় বেসরাকরি হাসপাতাল ও নার্সিংহোম রয়েছে ৭৫টি। বেসরকারি ল্যাবও রয়েছে শতাধিক। তার পরেও সরকারি ব্যবস্থার উপর নির্ভরশীল থাকতে হয় কেন? এক বেসরকারি ল্যাবের কর্ণধার বলেন, “অ্যালাইজা যন্ত্রের দাম কোটি টাকার কাছাকাছি। তার উপরে তা চালানোর জন্য বিশেষজ্ঞ কর্মী রাখতে হবে, যা বর্ধমানের মতো জায়গাতে রাখা লাভজনক নয়।” বেসরকারি হাসপাতালের এক কর্ণধারের কথায়, “একটি কিটে ৯৪ জনের রক্ত পরীক্ষা করা যায়। এক-একটা কিটের দাম প্রায় সাড়ে সাত হাজার টাকা। কম রোগী থাকলে অ্যালাইজা পরীক্ষার খরচ বেড়ে যাবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন