গণধর্ষণে অভিযুক্তেরা কি বহিরাগত

এলাকাটি, আসানসোলের রেকিট ও কোলম্যান এলাকায়। এই এলাকাতেই বুধবার রাতে চার মাসের এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক যুবক-সহ দু’জনের বিরুদ্ধে।

Advertisement

সুশান্ত বণিক

আসানসোল শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৮ ০১:৫০
Share:

—প্রতীকী ছবি

এলাকায় বেড়েছে বহিরাগতদের আনাগোনা। তারা নানা অপরাধমূলক কাজকর্মও ঘটাচ্ছে।— এমনই অভিযোগ এলাকার কাউন্সিলর ও স্থানীয় বাসিন্দাদের।

Advertisement

এলাকাটি, আসানসোলের রেকিট ও কোলম্যান এলাকায়। এই এলাকাতেই বুধবার রাতে চার মাসের এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক যুবক-সহ দু’জনের বিরুদ্ধে। ওই দু’জন স্থানীয় না বহিরাগত, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে পুলিশের অন্দরেও।

আসানসোল উত্তর থানার উত্তর ধাদকা এলাকায় রেকিট ও কোলমেন মূল রাস্তা থেকে এক দিকে বাঁক নিলেই সোজা চলে যাওয়া যাবে একটি এলাকায়। সেখানেই থাকেন ওই মহিলা। বৃহস্পতিবার সকালে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, নানা জটলায় রাতের ওই অভিযোগের কথা তুলে বাসিন্দাদের ক্ষোভ। তবে প্রকাশ্যে কেউই মুখ খোলেননি। যদিও কয়েক জন, মূল অভিযুক্ত কুলদীপ সিংহ ওরফে কাল্লুর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন।

Advertisement

পুলিশ জানায়, অভিযুক্তের এর আগে পুলিশের খাতায় নাম ছিল না। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সম্প্রতি একাধিক গোলমালের ঘটনায় মূল মাথা ওই যুবক। আরও অভিযোগ, পাড়়ার মহিলাদের নানা ভাবে উত্ত্যক্ত করা, মারপিট এবং বহিরাগতদের এলাকায় এনে নেশা করতে দেখা গিয়েছে ওই যুবককে। এলাকাবাসী জানান, বিষয়টি তাঁরা এলাকার কাউন্সিলর শ্যাম সোরেনকেও জানিয়েছেন। এলাকার নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে বাসিন্দারা অভিযোগ জানিয়েছেন পুলিশকেও। কাউন্সিলর শ্যামবাবুরও ক্ষোভ, ‘‘কিছু বহিরাগত নানা অপকর্ম চালাচ্ছে। পুলিশকে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েও লাভ হচ্ছে না। তবুও আবার বলব।’’ বহিরাগতদের আনাগোনা বন্ধের জন্য আরও পুলিশি সক্রিয়তার দাবি জানিয়েছেন বিজেপি-র জেলা সহ-সভাপতি প্রশান্ত চক্রবর্তীও।

যদিও এলাকার নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে কোনও রকম নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ স্বীকার করেনি পুলিশ। পুলিশের দাবি, অভিযুক্তেরা দ্রুত ধরা পড়বে।

তবে এই অভিযোগের কথা সামনে আসতেই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সমাজের নানা স্তরের মানুষ। আসানসোল পুরসভার মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারির কথায়, ‘‘এমন ঘটনা কোনও ভাবেই কাম্য নয়। পুলিশ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে। এ সব ক্ষেত্রে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অভিযুক্তদের বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রেখে বিচার প্রক্রিয়া চালানোর পরামর্শ দেন। আমিও সেই দাবিই করছি।’’

সিপিএমের পশ্চিম বর্ধমান জেলা কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পার্থ মুখোপাধ্যায় আবার সরব হয়েছেন রাজ্যের নারী-নিরাপত্তার পরিস্থিতি নিয়ে। তাঁর কথায়, ‘‘নারীরা ওই এলাকার মতো গোটা রাজ্যেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। আমরা দোষীদের কঠোর শাস্তি চাইছি।’’

শহরের বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও এই ঘটনায় সরব হয়েছেন। শহরের একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা নিবেদিতা আচার্যের কথায়, ‘‘এমন ঘটনা ক্ষমা করা যায় না। এমন ঘটনায় ওই মহিলা যেন দ্রুত বিচার পান, এটাই এখন একমাত্র চাওয়া।’’ শহরের চিকিৎসক তথা সাহিত্যকর্মী অরুণাভ সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘সমাজে নারীর স্থান সবার আগে। এমন ঘটনাকে ধিক্কার জানানোর জন্য কোনও ভাষা যথেষ্ট নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন