হুড়মুড়িয়েই যাতায়াত ফুট ওভারব্রিজে

Advertisement

সৌমেন দত্ত

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৮ ০৭:০৭
Share:

বর্ধমান স্টেশনের ফুট ওভারব্রিজে যাত্রীর ভিড়। নিজস্ব চিত্র

প্রতিদিন গড়ে লাখ দে়ড়েক যাত্রী যাতায়াত করে। পাশাপাশি দু’টি প্ল্যাটফর্মে ট্রেন এসে দাঁড়ালে হুড়োহুড়ি পড়ে যায় যাত্রীদের মধ্যে। ধাক্কাধাক্কি, মাঝে-মধ্যে ছোটখাট দুর্ঘটনাও ঘটে বর্ধমান স্টেশনের এই ফুট ওভারব্রিজে। সাঁতরাগাছি স্টেশনে পদপিষ্ট হয়ে দু’জনের মৃত্যুর ঘটনার পরে নিত্যযাত্রীদের দাবি, বর্ধমান স্টেশনেও ফুট ওভারব্রিজ নিয়ে রেলের সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।

Advertisement

বর্ধমান স্টেশন কর্তৃপক্ষ জানান, মঙ্গলবার রাতেই বিষয়টি নিয়ে অন্তর্বর্তী বৈঠক করা হয়েছে। পাশপাশি দু’টি প্ল্যাটফর্মে ট্রেন দাঁড় করানোর ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।

বর্ধমান স্টেশনে আটটি প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। হাওড়া মেন, কর্ড, আসানসোল, রামপুরহাট, আজিমগঞ্জ-সহ নানা লাইনের প্রচুর লোকাল ট্রেন চলে। সেই সঙ্গে রাজধানী-সহ বহু গুরুত্বপূর্ণ সুপারফাস্ট ট্রেন বর্ধমানের উপর দিয়ে যাতায়াত করে। ফলে, দক্ষিণবঙ্গের গুরুত্বপূর্ণ এই স্টেশনে সব সময়েই যাত্রীর চাপ থাকে।

Advertisement

বুধবার দুপুরে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, অনেক যাত্রী এক সঙ্গে ফুট ওভারব্রিজের সিঁড়ি দিয়ে যাতায়াত করছেন। তাঁদের অনেকেই জানান, একে পুজোর ছুটি চলছে, তার উপরে এ দিন লক্ষ্মীপুজো থাকায় স্টেশন তুলনায় ফাঁকা। তাঁদের দাবি, ‘অফিস টাইমে’ ফুট ওভারব্রিজে হুড়োহুড়ি করে যাতায়াত করতে হয়। নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, ট্রেনের সময় আগে থেকে ঘোষণা করা হয় না বলে যাত্রীদের একাংশ এই ওভারব্রিজের উপরেই দাঁড়িয়ে থাকেন। মাঝে-মধ্যে সিঁড়ির সামনে বা ফুট ওভারব্রিজে হকারদের বিকিকিনিও শুরু হয়ে যায়। সে কারণে ট্রেন ধরার সময়ে বিপাকে পড়েন যাত্রীরা।

গুসকরার বাসিন্দা তথা সিপিএম নেতা আলমগীর মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘পাশাপাশি দু’টি ট্রেন দাঁড়িয়ে থাকলে প্ল্যাটফর্মে দাঁড়ানোর জায়গা থাকে না। ওভারব্রিজে উঠতে গিয়ে বয়স্ক মানুষজন ঠেলাঠেলিতে পড়ে যান।’’ যাত্রীরা জানান, ওই ভিড়ের মধ্যে কুলিরা মাল নিয়ে ওভারব্রিজে যাতায়াত করে। তার ফলে বিপদ আরও বাড়ে। বয়স্ক যাত্রী জয়ন্ত মণ্ডল, সঞ্জিত চন্দ্রদের বক্তব্য, ‘‘সাঁতরাগাছির ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে রেল আমাদের মতো প্রবীণদের জন্য কিছু একটা ব্যবস্থা করুক। তা না হলে বর্ধমান স্টেশনেও যে কোনও দিন দুর্ঘটনা ঘটবে।’’

বর্ধমানের কাঁটাপুকুরের বাসিন্দা বীথি দত্তসামন্ত, হুগলির ধনেখালির নাসিমা খাতুনেরা বলেন, ‘‘ফুট ওভারব্রিজের সিঁড়িতে যাওয়া-আসার জায়গার মধ্যে কোনও ডিভাইডার নেই। তাই ইচ্ছেমতো যাতায়াত করেন সকলে। তাতে ঠেলাঠেলি আরও বেশি হয়। সিঁড়ি থেকে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও বেশি।’’ যাত্রীরা জানান, ভিড় এড়াতে অনেকে লাইন পারাপার করেও বিপদ ডেকে আনছেন। এখন আবার ফুট ওভারব্রিজের কাছে খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। তাতে সমস্যা আরও বেড়েছে। যাত্রীদের অভিযোগ, ওই জায়গায় আরপিএফ বা পুলিশ রাখা হয় না।

রেল সূত্রে জানা যায়, ভিড় এড়ানোর জন্যই ২০০৮ সালে প্রায় ২০ ফুট চওড়া নতুন ফুট ওভারব্রিজটি তৈরি করা হয়েছিল। যাত্রীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার ফলে ওই ওভারব্রিজও সংকীর্ণ বলে মনে হচ্ছে। তবে সম্প্রতি ওভারব্রিজটি পরীক্ষা করে ইঞ্জিনিয়ররা ‘ফিট’ শংসাপত্র দিয়েছেন। তবে ১ থেকে ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে চলন্ত সিঁড়ি বসানোর কাজ চলছে। স্টেশন ম্যানেজার স্বপন অধিকারী বলেন, ‘‘আমরা বারবার ঘোষণা করে যাত্রীদের সতর্ক করছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন