শুক্রবার এই রাস্তাতেই মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র।
মহিলা সহকর্মীকে রাতে মোটরবাইকে করে বাড়ি পৌঁছে দিতে যাওয়ার সময়ে এক প্যাথলজি সেন্টারের কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠল কিছু যুবকের বিরুদ্ধে। খবর পেয়ে সেই সেন্টারের এক চিকিৎসক ঘটনান্থলে এলে তাঁকেও হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। শুক্রবার রাতে দুর্গাপুরের এ-জোনে নেতাজি সুভাষ বসু রোডে অভিযুক্ত যুবকেরা তাঁদের অপরিচিত বলে জানান আক্রান্তেরা। সেই রাতে থানায় গেলেও পুলিশ অভিযোগ নিতে চায়নি বলে দাবি করেন আক্রান্ত ব্যক্তি ও ওই চিকিৎসক। দুর্গাপুর থানার পুলিশ যদিও তা মানতে চায়নি। শনিবার পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয়।
দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের অম্বুজা কলোনির ওই প্যাথলজি সেন্টারের কর্মীটির বাড়ি ৫৪ ফুট লাগোয়া শ্রীনগরপল্লি এলাকায়। তিনি জানান, তাঁর এক মহিলা সহকর্মী শহরের বিজুপাড়ায় থাকেন। তাঁকে মোটরবাইকে করে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ বাড়ি পৌঁছতে যাচ্ছিলেন তিনি। নেতাজি সুভাষ বসু রোডে মোটরবাইকের সামনে একটি কুকুর চলে আসায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাঁরা দু’জনেই রাস্তায় পড়ে যান। তিনি অভিযোগ করেন, তখনই জনা কয়েক যুবক তাঁদের দিকে এগিয়ে আসেন। প্রথমে তাঁরা ভেবেছিলেন, তারা তাঁদের সাহায্য করতে আসছে। কিন্তু সামনে এসে তারা তাঁকে গালিগালাজ শুরু করলে ভুল ভাঙে। তার পরে তাঁকে মারধর করে ওই যুবকেরা। তাঁর কথায়, ‘‘ওদের বলি, আমরা দু’জন এক সঙ্গে কাজ করে। কিন্তু সে কথা তারা কানে তোলেনি।’’
তিনি জানান, এই ঘটনা চলার সময়ে তাঁর সহকর্মী মহিলা তাঁদের প্যাথলজি সেন্টারের এক চিকিৎসককে ফোন করে ঘটনাস্থলে ডাকেন। সেই চিকিৎসক খানিকক্ষণের মধ্যে ঘটনাস্থলে তাঁকেও ওই যুবকেরা গালিগালাজ, ধাক্কাধাক্কি করে বলে অভিযোগ। বেশ কিছু ক্ষণ ধরে এই ধস্তাধস্তি চলার পরে একটি পুলিশের গাড়ি আসতে দেখে হামলাকারীরা চম্পট দেয় বলে জানান ওই কর্মী। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই মহিলাকে তাঁর বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়। পরে থানায় যান ওই ব্যক্তি এবং চিকিৎসক, দু’জনেই। যেখানে ঘটনা ঘটেছে তার অদূরেই রয়েছে মহকুমাশাসক ও এসিপি-র বাংলো। সেখানে এই রকম একটি ঘটনায় হকচকিয়ে গিয়েছেন ওই ব্যক্তি।
ওই চিকিৎসক অভিযোগ করেন, থানায় গেলেও পুলিশ তাঁদের কাছ থেকে কোনও লিখিত অভিযোগ নিতে চায়নি। নানা অজুহাতে তাঁদের দীর্ঘ ক্ষণ বসিয়ে রাখা হয়। শেষে রাত ৩টে নাগাদ তাঁরা থানা থেকে চলে আসেন। দুর্গাপুর থানার পুলিশ যদিও এ কথা মানতে চায়নি। এক পুলিশ আধিকারিকের পাল্টা দাবি, ওই চিকিৎসকেরাই রাতে কোনও অভিযোগ করতে চাননি। শনিবার শ্রীনগরপল্লিতে আক্রান্ত ব্যক্তির বাড়ি গিয়ে পুলিশ অভিযোগপত্র নিয়ে এসেছে।
আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এডিসিপি (পূর্ব) অমিতাভ মাইতি বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। পুলিশ অভিযোগ নিতে চায়নি, এই খবরও কানে এসেছে। সার্কেল ইনস্পেক্টরকে তদন্ত করে দেখতে বলেছি।’’