দমকল কেন্দ্র আজও তৈরি হয়নি জামুড়িয়ায়।—ফাইল চিত্র।
এলাকায় রয়েছে গোটা পঁচিশ নানা রকম কারখানা। এ ছাড়া প্রাচীন বড় পাইকারি বাজার। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে অনেক বারই। কিন্তু বারবার দাবি জানিয়েও কোনও দমকল কেন্দ্র তৈরি হয়নি জামুড়িয়ায়।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, জামুড়িয়ায় বারোটি স্পঞ্জ আয়রন কারখানা রয়েছে। এ ছাড়া পাঁচটি সিমেন্ট কারখানা, ন’টি রিফ্যাক্টরি (বর্তমানে ৬টি বন্ধ), দু’টি প্লাস্টিক, তিনটি ইস্পাত ও একটি বিস্কুট কারখানা আছে। এ ছাড়া চাল, ডাল, তেলজাত সামগ্রীর বড় পাইকারি বাজার রয়েছে এলাকায়।
শিল্পতালুক সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস ছয়েক আগে একটি স্পঞ্জ আয়রন কারখানার এক কোটি টাকা মূল্যের যন্ত্রে আগুন ধরে যায়। দমকল আসার আগেই নষ্ট হয়ে যায় সেটি। জামুড়িয়া বণিকসভার সম্পাদক অজয় খেতান জানান, জামুড়িয়ায় পনেরো হাজার কোটি টাকা শিল্পে বিনিয়োগ হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা হরিপুর, দোমহানিকে কেন্দ্র করে জামুড়িয়ায় একটি দমকল কেন্দ্র তৈরির জন্য শেষ বার ৬ জুন জেলাশাসকের কাছে লিখিত ভাবে জানিয়েছি। জামুড়িয়া থেকে হরিপুর ১২ কিলোমিটার ও দোমহানি ৮ কিলোমিটার রাস্তা। এখানে দমকল কেন্দ্র হলে পাণ্ডবেশ্বরেও সুবিধা হবে।’’ তিনি জানান, জামুড়িয়ায় ১ নম্বর বরো অফিসের পাশে সরকারি জমি ফাঁকা পড়ে রয়েছে। সেখানে সহজে কেন্দ্র গড়া যেতে পারে।
শিল্পপতি অশোক সান্থালিয়া দাবি করেন, ‘‘আসানসোল ও রানিগঞ্জে দু’টি দমকল কেন্দ্রই শহরের প্রধান বাজারে। বাজারের যানজট কাটিয়ে ২ নম্বর জাতীয় সড়কে দমকলের ইঞ্জিন পৌঁছতেই আধ ঘণ্টা পেরিয়ে যায়।’’ চুরুলিয়ার লোদা গ্রামে ১৯৮৩ সালে পুড়ে যায় ১৯টি বাড়ি। বছর তিনেক আগে সত্তর গ্রামে তিনটি বাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে যায় দমকলের ইঞ্জিন পৌঁছনোর আগেই। প্রায় দু’বছর জামুড়িয়া বাজার বেনিয়াপট্টিতে একটি দোতলা বাড়ির নীচের তলায় শর্ট সার্কিট হয়ে আগুন ধরে যায়। বাড়িটির মালিক নির্মল কেশরী জানান, প্রায় ঘণ্টা দেড়েক সময় লেগেছিল আসানসোল থেকে দমকলের ইঞ্জিন আসতে। ততক্ষণে আসবাব-সহ সব সামগ্রী পুড়ে যায়। এলাকার সিপিএম নেতা মনোজ দত্ত বলেন, ‘‘১৯৯৬ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত আমাদের তিন জন বিধায়ক বিধানসভায় সরব হয়েছেন। কিন্তু দমকল কেন্দ্র তৈরি হয়নি।’’
পশ্চিম বর্ধমানের অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) প্রলয় রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘জামুড়িয়ায় দমকল কেন্দ্রের জায়গা নির্দিষ্ট করা হয়েছে। প্রক্রিয়া চলছে।’’