প্রতীকী ছবি।
৩৬৫ দিনও হয়নি। তার মধ্যেই চাঁদা ও তোলাবাজির অভিযোগকে কেন্দ্র করে অন্তত তিনটি অপরাধমূলক কাজকর্মের ঘটনা সামনে এসেছে দুর্গাপুরের নানা প্রান্তে। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, এমন ‘জুলুমবাজি’ বন্ধে পুলিশ তেমন সক্রিয়তা না থাকাতেই সমস্যা বাড়ছে।
৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭। সগড়ভাঙায় কয়েক জন যুবক দুর্গাপুজোর জন্য ট্রাক পিছু চালকদের কাছ থেকে পাঁচশো টাকা করে চাঁদা দাবি করে। তা না মানায় হরবিন্দ সিংহ নামে এক ট্রাক চালককে মারধর ও ট্রাকে ভাঙচুর চালানো হয়। এর পরে ওড়িশার বাসিন্দা নিরঞ্জন সাউ নামে এক ট্রাক চালককে রড, বাঁশ দিয়ে মারধর, ট্রাকে ভাঙচুর, এমনকি তাঁর গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে চাঁদা আদায়কারীদের বিরুদ্ধে। কোনও ক্রমে রাস্তা লাগোয়া নালায় ঝাঁপ দিয়ে প্রাণ বাঁচান নিরঞ্জনবাবু। তাঁর পিঠ ও হাতের একাংশ পুড়ে যায়। এই ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
৭ মে ২০১৮। ওই দিন সকালে দুর্গাপুরের কোকআভেন থানার স্টেশন রোডে একটি পেট্রল পাম্প লাগোয়া এলাকায় খুন হন পার্কিং জোনের কর্মী বিষ্ণু থাপা (৪০)। অভিযোগ, কয়েক দিন ধরে দীপক সাউ নামে এক যুবক সেখানে গিয়ে ৩০ হাজার টাকা টাকা দাবি করে। ওই দিন দীপক এলে তাকে আটকে আগ্নেয়াস্ত্র কেড়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন পার্কিং জোনের কর্মীরা। কিন্তু দীপক আচমকা গুলি চালাতে শুরু করলে বিষ্ণুর মাথায় ও বিপুল শেখ নামে এক কর্মীর হাতে গুলি লাগে। সম্প্রতি পুলিশ দীপককে ধরে।
আপাতত, সবশেষের ঘটনাটি ১৬ অগস্টের। পুজোয় চাহিদামতো চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় একটি ক্লাবের সঙ্গে জড়িত এক ব্যবসায়ী অনিল চৌধুরীর ছেলেকে মারধর, দোকান ভাঙচুর ও গুলি ছোড়়ার অভিযোগ ওঠে ওই ক্লাবেরই সদস্য কয়েক জনের বিরুদ্ধে। ডিএসপি টাউনশিপের এ-জোনের গুরুনানক রোড লাগোয়া ডি-সেক্টর মার্কেট এলাকার ঘটনা। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে শুক্রবার সত্যজিৎ সরকার ওরফে নাড়ু নামে পাড়ারই এক জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের দাবি, ধৃতের কাছ থেকে একটি পিস্তল ও ১৮ রাউন্ড গুলি মিলেছে। যদিও শনিবার আদালতে যাওয়ার পথে ওই ব্যক্তি তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেন। এ দিন শুভজিৎকে আদালতে তোলা হলে ধৃতের ১৪ দিনের জেল-হাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক মোদী জানান, সব ক’টি ঘটনাতেই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছে। চাঁদায় জুলুম রুখতে বিশেষ নজরদারি চালানো ও অভিযোগ পেলেই কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।