Damodar River

Damodar River: পাকা সেতু চেয়ে অবস্থানে দুই জেলার বাসিন্দারা

অবস্থানরত বাসিন্দারা জানান, ‘দামোদর বিহারীনাথ সেতুবন্ধন কমিটি’ গড়ে তুলে গত প্রায় সাত বছর ধরে এই দাবি জানিয়ে আসছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বার্নপুর  শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০২২ ০৭:২১
Share:

অস্থায়ী সেতুর সামনে দাঁড়িয়ে পশ্চিম বর্ধমান ও বাঁকুড়া জেলার বাসিন্দাদের একাংশ। নিজস্ব চিত্র

দামোদর নদের উপরে একটি পাকা সেতু নির্মাণ করতে হবে— এই দাবিতে সোমবার বার্নপুর রিভারসাইড এলাকার নেহরুপার্ক লাগোয়া দামোদর নদের তীরে অবস্থান-বিক্ষোভ করলেন পশ্চিম বর্ধমান ও বাঁকুড়া জেলার কয়েকশো বাসিন্দা। তাঁদের দাবি, এই সেতু নির্মাণ করা হলে, দুই জেলার মধ্যে যোগাযোগ সহজ হবে। প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে চলে এই কর্মসূচি। কর্মসূচির নেতৃত্বে ছিল ‘দামোদর বিহারীনাথ সেতু বন্ধন কমিটি’।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পশ্চিম বর্ধমান ও বাঁকুড়া জেলার দামোদর তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দা, যাঁরা নিয়মিত নদ পেরিয়ে যাতায়াত করেন তাঁদের একাংশ এ দিন অবস্থানে যোগ দেন। সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত চলে অবস্থান-বিক্ষোভ। অবস্থানরত বাসিন্দারা জানান, ‘দামোদর বিহারীনাথ সেতুবন্ধন কমিটি’ গড়ে তুলে গত প্রায় সাত বছর ধরে এই দাবি জানিয়ে আসছেন। কমিটির সভাপতি তথা পশ্চিম বর্ধমান জেলার তৃণমূল নেতা সুবল চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ওই এলাকায় দামোদর নদের উপরে থাকা একটি কাঠের অস্থায়ী সেতু পেরিয়ে বাসিন্দাদের যাতায়াত করতে হচ্ছে। ফি বছর বর্ষায় সেতুটি জলের তোড়ে ভেঙে যায়। তখন বাসিন্দাদের যাতায়াত পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় অথবা ঝুঁকি নিয়ে খেয়া পারাপার করতে হয়। সুবল বলেন, “বহু বছর ধরে এই নদের উপরে আমরা পাকা সেতু নির্মাণের দাবি তুলেছি। কিন্তু সে দাবি পূরণ করা
হচ্ছে না।”

সোমবার এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, কাঠের পাটাতন বসিয়ে একটি নড়বড়ে সেতু পেরিয়ে বাসন্দারা যাতায়াত করছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, বাঁকুড়ার দিকে ঈশ্বরদা, দিঘি, শালতোড়া, কেশপুর, ভিতরডি, সরাগডি-সহ প্রায় ৩০টি গ্রাম এবং পশ্চিম বর্ধমানের বার্নপুর, কালাঝরিয়া, আসানসোল-সহ একাধিক এলাকার বাসিন্দারা এই সেতু পেরিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করেন। স্থানীয়েরা জানালেন, মেজিয়া বা ডিসেরগড় সেতু পেরিয়েও আসানসোল, বার্নপুরের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়। সে ক্ষেত্রে ডিসেরগড় সেতু ধরলে তাঁদের প্রায় ৬০ কিলোমিটার ও মেজিয়া সেতু ধরলে প্রায় ৬৫ কিলোমিটার রাস্তা পেরোতে হবে। অন্য দিকে, ওই কাঠের সেতু ধরলে মাত্র আট কিলোমিটার রাস্তা পেরিয়ে আসানসোল ও বার্নপুরের মধ্যে যাতায়াত করা যাবে। শালতোড়ার বাসিন্দা সীমা পাল বলেন, “আমি রোজই আসানসোলের কলেজে পড়তে যাই। বর্ষাকালে সেতুটি ভেঙে গেলে, তখন কলেজে যাওয়া হয় না। ফলে, পাকা সেতু তৈরি করা হলে উপকৃত হব।” একই সমস্যার কথা জানান বার্নপুরের বাসিন্দা তথা শালতোড়ার দোকান মালিক সুভাষ সরকারও।

Advertisement

সেতুর বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে মহকুমাশাসক (বাঁকুড়া) সুশান্ত ভক্ত বলেন, “আমার তেমন কিছু জানা নেই। খোঁজ নেব।” তবে সেতু নির্মাণের বিষয়ে ইতিমধ্যে রাজ্যের মন্ত্রী তথা আসানসোল উত্তরের বিধায়ক মলয় ঘটক উদ্যোগী হয়েছেন বলে পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। দফতরের ইঞ্জিনিয়ারেরা এলাকায় গিয়ে প্রাথমিক পর্যবেক্ষণও করেছেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আধিকারিক জানিয়েছেন।

এ দিকে, বর্তমানে ওই কাঠের অস্থায়ী নড়বড়ে সেতুটি কে নির্মাণ করে দিয়েছে, সে প্রশ্নের উত্তরে শালতোড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুস্মিতা কবিরাজ বলেন, “এই এলাকায় দামোদর নদের খেয়া পারাপারের জন্য প্রতি বছর পঞ্চায়েত সমিতির তরফে দরপত্র ডাকা হয়। এ বারও তা করা হয়েছে। যাঁরা দরপত্র পেয়েছেন, তাঁরাই খেয়া পারাপারের পরিবর্তে অস্থায়ী কাঠের সেতু বানিয়ে লোকজনকে পারাপার করাচ্ছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন