যুবক মৃত, অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে ক্ষোভে ভাঙচুর

পুলিশ ও খনি সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার দুপুর ১২টা নাগাদ নরসমুদা খনি আবাসন এলাকায় সজনে গাছে ডাঁটা পাড়তে উঠেছিল ওই কোলিয়ারির কর্মী ভিখারি সিংহের ছেলে বিশাল সিংহ (২৪)।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৯ ০৩:১৯
Share:

ভাঙচুর নরসমুদা খনির অফিসে। নিজস্ব চিত্র

গাছ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখম হয়েছিলেন এক খনিকর্মীর ছেলে। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে খনি কর্তৃপক্ষের কাছে অ্যাম্বুল্যান্স চান স্থানীয় বাসিন্দারা। অভিযোগ, অ্যাম্বুল্যান্স খারাপ থাকায় সেটি মেলেনি। গাড়ি ভাড়া করে ওই যুবককে হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেরি হয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসকেরা ছেলেটিকে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনার জেরে ক্ষুব্ধ জনতা ভাঙচুর চালাল হিরাপুরের নরসমুদা খনি কার্যালয়ে। সোমবার প্রায় আট ঘণ্টা খনির উৎপাদন বন্ধ রেখে বিক্ষোভও দেখানো হয়। পুলিশ এবং সিআইএসএফ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছেও পরিস্থিতি পুরোপুরি আয়ত্তে আনতে পারেনি। পরে খনি কর্তৃপক্ষের তরফে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হলে বিক্ষোভ থামে। খনির কাজ শুরু হয়।

Advertisement

পুলিশ ও খনি সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার দুপুর ১২টা নাগাদ নরসমুদা খনি আবাসন এলাকায় সজনে গাছে ডাঁটা পাড়তে উঠেছিল ওই কোলিয়ারির কর্মী ভিখারি সিংহের ছেলে বিশাল সিংহ (২৪)। তাঁর মৃত্যুর খবর পৌঁছনোর পরেই সে দিন সন্ধ্যায় খনি কার্যালয়ে চড়াও হন এলাকার কিছু বাসিন্দা। ভাঙচুর চালানো হয় ম্যানেজারের চেম্বার-সহ নানা দফতরে।

খনি সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকালে আবার কোলিয়ারিতে ভিড় জমান শ’খানেক মানুষ। তাঁদের বাধায় কর্মীরা কাজে যোগ দিতে পারেননি। কয়লা তোলার জন্য খাদানে নামতে পারেননি কেউ। কোলিয়ারি চত্বর অশান্ত হয়ে ওঠে। খবর পেয়ে পৌঁছয় হিরাপুর থানার পুলিশ এবং সিআইএসএফ বাহিনী। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করলেও ফল হয়নি। শেষ পর্যন্ত দুপুর ২টো নাগাদ ইসিএলের সোদপুর এরিয়া কার্যালয়ের আধিকারিকেরা ওই বাসিন্দাদের সঙ্গে বৈঠক করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

Advertisement

কোলিয়ারির ম্যানেজার নন্দদুলার সিংহ বলেন, ‘‘ভাঙচুরের ঘটনায় আমরা হিরাপুর থানায় অভিযোগ করেছি। বিক্ষোভের জেরে বেশ কিছুক্ষণ খনির উৎপাদন বন্ধ ছিল।’’ কোলিয়ারি সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিদিন এই খনি থেকে প্রায় তিনশো টন কয়লা তোলা হয়। বিক্ষোভের জেরে এ দিন প্রায় দেড়শো টন কয়লা উৎপাদন মার খেয়েছে।

কোলিয়ারির শ্রমিক সংগঠনের নেতারা রবিবারের ঘটনার জন্য খনি কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করেছেন। তাঁদের প্রশ্ন, কোলিয়ারিতে খারাপ অ্যাম্বুল্যান্স কেন মজুত করে রাখা হয়েছে? এই পরিস্থিতিতে খনিতে কাজ করার সময়ে কোনও শ্রমিক দুর্ঘটনায় পড়লে তাঁকেও তো হাসপাতালে নিয়ে যেতে সমস্যা হত, দাবি শ্রমিক নেতাদের। আইএনটিইউসি নেতা স্বরোজ সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘আমরা খনি কর্তৃপক্ষের কাছে একটি নতুন অ্যাম্বুল্যান্স রাখার দাবি তুলেছি।’’ অ্যাম্বুল্যান্স খারাপ ছিল, সে কথা অবশ্য মানতে চাননি কোলিয়ারির ম্যানেজার নন্দদুলালবাবু। তিনি দাবি করেন, ‘‘অ্যাম্বুলেন্সটি স্টার্ট নিতে দেরি করেছে। কিন্তু বিকল ছিল না।’’ তবে কয়েক দিনের মধ্যেই একটি নতুন অ্যাম্বুল্যান্স কোলিয়ারিতে আনা হবে বলে খনি কর্তৃপক্ষের আশ্বাস।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন