পড়ে রয়েছে থার্মোকলের থালা, গ্লাস। কাটোয়ায়। নিজস্ব চিত্র।
উড়ে বেড়াচ্ছে থার্মোকলের থালা, প্লাস্টিকের গ্লাস। এ দিকে, ও দিকে ছড়িয়ে মাংসের হাড়, ডিমের খোসা। পড়ে রয়েছে উনুনের ছাই। চড়ুইভাতির মরসুমে এই চিত্র কাটোয়া ও কেতুগ্রামে অজয়ের চরে। প্লাস্টিক ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর বা এলাকা সাফাই, কোনও দিকেই স্থানীয় প্রশাসনের নজর নেই বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
প্রতি বছরই ডিসেম্বর থেকে ফ্রেব্রুয়ারি পর্যন্ত পিকনিকের জন্য ভিড় জমে কাটোয়ার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে অজয়ের বাঁধে। শুধু শহরের মানুষজন নন, দঁইহাট, শ্রীখণ্ড বা বল্লভপাড়া থেকেও অনেকে আসেন সপ্তাহান্তে চড়ুইভাতি করতে। আর তার পরেই বাঁধের ধারে জমিতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকে থার্মোকলেন পাতা, কাপ থেকে শুরু করে চিপসের প্যাকেট, আনাজের খোসা। একই ছবি কেতুগ্রামের চরখিতে কাশীরাম দাস সেতুর নীচে অজয়ের চরে। অভিযোগ, আবর্জনা শুধু চরে নয়, নদীতেও ফেলে যায় পিকনিকের দল।
কাটোয়ার ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দা উত্তম দাস, স্বপন দাসেরা বলেন, ‘‘শীতের কয়েক মাস প্রতি বছরই এ ভাবে এঁটো পাতা উড়তে থাকে। কখনও এ সব আবর্জনা সাফ করতে দেখি না পুরসভাকে।’’ তাঁদের ক্ষোভ, আবর্জনার দুর্গন্ধে এলাকায় টেকা দায় হয়ে পড়ে। কুকুর-বিড়ালে অনেক সময়ে উচ্ছিষ্ট খাবার মুখে করে বসতির মধ্যে টেনে নিয়ে আসে। তাতে এলাকাও নোংরা হয় বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।
এলাকার স্কুল শিক্ষক টোটোন মল্লিকের মতে, ‘‘প্লাস্টিক পচনশীল না হওয়ায় মাটিতে মিশে উর্বরতা নষ্ট করে। মাটির উপকারী ভাইরাস মরে যায়। তা ছাড়া গবাদি পশু প্লাস্টিক খেয়ে ফেললে তা খাদ্যনালী বন্ধ করে দিতে পারে।’’ স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দিন পনেরো আগেই ৪০ মাইক্রনের চেয়ে পাতলা প্লাস্টিক ব্যবহারে মহকুমা প্রশাসন নিষেধাজ্ঞা জারি করছে। কিন্তু সেই রকম প্লাস্টিক ছড়িয়ে রয়েছে পিকনিকের জায়গায়। সাফ করার দিকেও হুঁশ নেই সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের।
কাটোয়ার পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘মাঝে-মাঝেই বাঁধ এলাকা সাফসুতরো করা হয়।’’ বিডিও (কেতুগ্রাম ২) অরিজিৎ দাসের আশ্বাস, অজয়ের চর পরিষ্কার রাখতে বিল্লেশ্বর পঞ্চায়তকে নির্দেশ দেওয়া হবে।