শনিবার গুসকরা ফাঁড়ির সামনে। নিজস্ব চিত্র
দলীয় কর্মীদের কেন আটক করা হয়েছে, তা জানতে চাওয়ায় পুলিশের বিরুদ্ধে লাঠি চালানোর অভিযোগ করল বিজেপি। তার জেরে দলের কয়েক জন কর্মী জখমও হয়েছেন বলে দাবি। পুলিশ যদিও লাঠি চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছে। শনিবার গুসকরার ঘটনা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতে আউশগ্রামের বিল্বগ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার তকিপুর থেকে তিন বিজেপি কর্মীকে আটক করে গুসকরা ফাঁড়ির পুলিশ। এর পরে শনিবার সকাল ৯টা থেকে গুসকরা শহর ও লাগোয়া এলাকার বিজেপি কর্মীরা ২বি জাতীয় সড়কের ধারে ইটাচাঁদায় প্রস্তাবিত গুসকরা থানা ভবনের সামনে জড়ো হন। গুসকরা ফাঁড়ির এক পুলিশ আধিকারিক ভবন থেকে বাইরে বার হতে গেলে শ’দেড়েক বিজেপি নেতা-কর্মী তাঁর পথ আটকে বিক্ষোভ দেখান বলে পুলিশ জানায়।
এর পরেই ওই আধিকারিকের সঙ্গে বিজেপি কর্মীদের বচসা বাধে। পুলিশ জানায়, ওই আধিকারিককে যেতে দেওয়ার জন্য বিক্ষোভকারীদের অনুরোধ করা হয়। তাতে বিশেষ লাভ হয়নি বলেই জানা গিয়েছে। বিজেপির অভিযোগ, এর পরেই পুলিশকর্মীরা লাঠি হাতে জমায়েত ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। লাগোয়া মাঠ দিয়ে বিজেপি কর্মীদের ছুটতেও দেখা যায়। বিজেপির দাবি, পুলিশের লাঠিতে দলের গুসকরা নগর সভাপতি মনোরঞ্জন মণ্ডল-সহ প্রায় দশ জন নেতা, কর্মী জখম হয়েছে। তাঁদের গুসকরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়। পুলিশ জানায়, দু’জন বিক্ষোভকারী ও প্রায় চল্লিশটি মোটরবাইক, সাইকেল আটক করা হয়েছে।
বিজেপির জেলা নেতা সুশান্ত বিশ্বাসের অভিযোগ, এলাকায় শান্তিরক্ষার নাম করে কোনও কারণ ছাড়া দলের কর্মীদের ধরে আনছে পুলিশ। তাঁর কথায়, ‘‘তকিপুর থেকে কেন দলের কর্মীদের ধরা হয়েছে, তা জানতে চেয়েছিলাম। গুসকরার ওই পুলিশ আধিকারিক ফাঁড়ি থেকে বেরনোর সময়ে সেই কথা জিজ্ঞাসা করা হয়। কিন্তু তিনি লাঠি চালানোর নির্দেশ দেন।’’ যদিও ডিএসপি (ডিএনটি) অভিজিৎ পাল চৌধুরী বলেন, ‘‘পুলিশ লাঠি চালায়নি। কিছু লোকজন ওখানে জমায়েত করেছিলেন। তাঁদের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কিতে তিন জন পুলিশকর্মী জখম হন। তার পরে পুলিশ লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে যায়।’’ তখনই ছুটে পালাতে গিয়ে কয়েক জন জখম হন বলে পুলিশের দাবি।
পুলিশ জানিয়েছে, তকিপুরে দলীয় অফিস ভাঙচুর ও অগ্নি-সংযোগের অভিযোগ করে তৃণমূল। এ ছাড়াও ওই এলাকায় কয়েক জনের বিরুদ্ধে দলের নেতা, কর্মীদের হুমকি, দোকান খুলতে না দেওয়ারও অভিযোগ করে তৃণমূল। ওই সমস্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতেই ওই তিন জনকে ধরা হয়। বিজেপি যদিও যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
পুলিশ পরে আরও জানায়, যে তিন জনকে তকিপুর থেকে এবং যে দু’জনকে এ দিন আটক করা হয়েছিল, পরে তাঁদের ছেড়েও দেওয়া হয়।