দুর্ঘটনার পরে পুলিশের উপর হামলা, গোলমালে গ্রেফতার ৩৯

পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে জনতা চড়াও হয়। পুলিশকর্মীদের হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেমারি শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৪:৩৯
Share:

রাস্তায় পুলিশ এবং র‌্যাফের টহল। —নিজস্ব চিত্র

দুর্ঘটনার পরে পুলিশের উপরে হামলা, গাড়ি জ্বালানোর ঘটনায় ৩৯ জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। মঙ্গলবার রাত থেকে মেমারির রাধাকান্তপুর ও আশপাশের গ্রামে তল্লাশি চালায় পুলিশ। বুধবার এলাকা ছিল সুনসান। দিনভর টহল দেয় পুলিশ ও র‌্যাফ।

Advertisement

মঙ্গলবার দুপুরে সাইকেলে স্কুলে যাওয়ার সময়ে মেমারির রাধাকান্তপুর বাজারের কাছে তিন পড়ুয়াকে পিছন থেকে ধাক্কা দেয় একটি ট্রাক। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীর। গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন নবম শ্রেণির এক ছাত্রী ও তার পঞ্চম শ্রেণিতে পড়া ভাই। দুর্ঘটনার পরেই এলাকাবাসীর একাংশ অভিযোগ করেন, পুলিশের তোলাবাজির হাত থেকে বাঁচতে দ্রুত গতিতে পালাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারায় ট্রাকটি।

পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে জনতা চড়াও হয়। পুলিশকর্মীদের হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় পুলিশের গাড়িতে। রাস্তা অবরোধ করেন বাসিন্দারা। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বিকেলে মহকুমাশাসক (বর্ধমান দক্ষিণ) অনির্বাণ কোলে বাসিন্দাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। সেখানে তর্কাতর্কি শুরু হলে মহকুমাশাসককে হেনস্থা করা হয়। এর পরেই তাড়া করে অবরোধ তুলে দেয় পুলিশ। অভিযোগ, পুলিশ লাঠি চালায়। কাঁদানে গ্যাসের শেলও ফাটায়।

Advertisement

পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করে। ৫৭ জনের নামে বেআইনি জমায়েত, রাস্তা অবরোধ, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট, পুলিশ আধিকারিকদের মারধর, খুনের চেষ্টা-সহ নানা ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। মঙ্গলবার রাতভর রাধাকান্তপুর, মল্লিকপুর, শঙ্করপুর, দেবপুর-সহ গোটা পাঁচেক গ্রামে অভিযান চালানো হয়। ৩৯ জনকে ধরা হয়। বুধবার ধৃতদের মধ্যে সাত জনকে পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠায় বর্ধমান আদালতে। বাকিদের জেল-হাজতে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে বাঁশ, ইট-পাথরের টুকরো, রড, শাবল, কাটারি, বেলচা উদ্ধার হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। ১৯টি ভাঙা মোটরবাইকও উদ্ধার হয়েছে।

এ দিন সকালে এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, রাধাকান্তপুর বাজারে শ’খানেক দোকানের সব ক’টিই বন্ধ। রাস্তায় যানবাহন চলছে কম। এলাকায় পুলিশ, র‌্যাফ, সিভিক ভলান্টিয়ারেরা টহল দিচ্ছে। পুলিশ পিকেটও রয়েছে। বিভিন্ন গাড়ি আটকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। ওই তিন পড়ুয়া যে স্কুলে পড়ত, সেই রাধাকান্তপুর উচ্চ বিদ্যালয় এ দিন বন্ধ ছিল।

এলাকার মহিলাদের অভিযোগ, পুলিশের তাণ্ডবে রাধাকান্তপুর-সহ আশপাশের গ্রামগুলি পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন দোকানেও ভাঙচুর করেছে পুলিশ। মহিলারাও বাড়ির বাইরে বেরোতে ভয় পাচ্ছেন। পুলিশ অবশ্য কোনও তাণ্ডব বা দোকান ভাঙচুরের কথা মানতে চায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন