হেলমেটের মান পরীক্ষায় পুলিশ

বর্ধমান শহরে প্রতিদিন বিনা হেলমেটে মোটরবাইক চালানোর বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। হেলমেটের মান সম্পর্কে সতর্কও করা হচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৭ ০২:১৬
Share:

বর্ধমানের রাস্তায়। নিজস্ব চিত্র

ঘটনা ১— পুলিশ ও মোটরবাইক চালকদের কথা কাটাকাটি চলছিল পারবীরহাটা মোড়ে। তারই মধ্যে বাস-টোটোর ফাঁক গলে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন এক যুবক। কিন্তু মাঝ রাস্তায় স্ত্রী-ছেলেকে নিয়ে পড়ে যাওয়ার জোগাড়। তাঁদের বাঁচিয়েই হেলমেটের খোঁজ নিলেন ট্র্যাফিক পুলিশের অফিসার। হেলমেট দেখাতে পারলেন না যুবক। এমনকী, লাইসেন্সও নেই। ২১০০ টাকা গুনাগার দিতে হল ওই যুবককে।

Advertisement

ঘটনা ২— উল্লাস মোড়ের কাছে দ্রুত গতিতে ছুটে যাচ্ছিলেন মোটরবাইক আরোহী। আটকালেন ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী। তিনি জানালেন, হেলমেটের গুণমান পরীক্ষা করা হবে। হেলমেট দেখে সন্তুষ্ট হলেন না তিনি। সতর্ক করে ওই আরোহীকে বললেন, ‘‘আইএসআই ছাপ দেওয়া হেলমেট পরবেন। হেলমেটটা পুলিশের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য নয়, মাথা রক্ষার কাজে লাগে।”

বর্ধমান শহরে প্রতিদিন বিনা হেলমেটে মোটরবাইক চালানোর বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। হেলমেটের মান সম্পর্কে সতর্কও করা হচ্ছে। জাতীয় সড়কেও অভিযান চালাচ্ছে জেলা পুলিশ। তারা জানায়, জাতীয় সড়ক তো বটেই, শহরের ভিতরেও দুর্ঘটনা লেগে রয়েছে। প্রাণহানিও ঘটছে। উপযুক্ত মানের হেলমেট না থাকায় মোটরবাইক চালক ও আরোহীদের বিপদে পড়তে হচ্ছে। আবার ভাল মানের হেলমেট থাকায় বিপত্তি থেকে বাঁচার উদাহরণও রয়েছে বহু।

Advertisement

কয়েক দিন আগে মাথায় হেলমেট থাকা সত্ত্বেও মোটরবাইক দুর্ঘটনায় পরপর বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়। শহরে বাইক-দৌরাত্ম্যও রয়েছে। তাতেই নড়েচড়ে বসে পুলিশ। জেলা পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল বলেন, ‘‘আমরা প্রতিদিনই কড়া নজরদারি চালাই। এখন হেলমেটের গুণাগুণ নিয়েও অভিযান চালাচ্ছি।’’ বর্ধমান শহরের বিভিন্ন ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ কর্মসূচি ঘোষণার পরে হেলমেট কেনার প্রবণতা বেড়েছে। তবে মাথা বাঁচানোর চেয়ে পুলিশের হাত থেকে বাঁচার জন্যই হেলমেট কিনতেন মোটরবাইক আরোহীরা। গুণগত মান পরীক্ষা শুরু হতে ‘আইএসআই’ ছাপ দেওয়া হেলমেট কেনা শুরু করেছেন অনেকে।

বর্ধমান শহরের ট্র্যাফিক ওসি চিন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, পুলিশ সুপারের নির্দেশে ভাল মানের হেলমেট না পরলে এখন সতর্ক করা হচ্ছে। পরে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হেলমেট না থাকলে আইনমাফিক জরিমানা আদায় করা হচ্ছে। জেলা পুলিশের দাবি, রাজ্যের মধ্যে পূর্ব বর্ধমানে হেলমেট নিয়ে সচেতনতা শিবির ও জরিমানা আদায় সবচেয়ে বেশি হয়েছে। তাই আগের তুলনায় এখানে হেলমেট পরার প্রবণতাও বেড়েছে বলে মনে করছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন