এক মাসে জরিমানা তিন কোটির বেশি

পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের ক্রমাগত অভিযান চলছে। ভোটের সময়েও অভিযান বন্ধ থাকেনি। প্রতিটি থানাকে আরও বেশি সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।’’ বর্ষায় বালি তোলার বিষয়ে জেলা প্রশাসন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তার পরেও পুলিশ যথেষ্ট নজরদারি চালাচ্ছে বলে জানান ভাস্করবাবু।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৯ ০০:১৪
Share:

ভোট মরসুমে বালির বেআইনি গাড়ি আটকে জরিমানা আদায় খানিক কম হয়েছিল। কিন্তু, ভোট-পর্ব শেষ হতেই গতি পেয়েছে সেই আদায়। শুধু জুনেই ৯৪৫টি বালির গাড়ি আটকে জরিমানা বাবদ তিন কোটি ১৪ লক্ষ ৪৬ হাজার ২৯৫ টাকা আদায় করে সরকারকে দেওয়া সম্ভব হয়েছে, জানায় পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ। আর গত ছ’মাসে বালির গাড়ি থেকে ১৫ কোটি টাকা জরিমানা আদায় করেছে পুলিশ।

Advertisement

পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের ক্রমাগত অভিযান চলছে। ভোটের সময়েও অভিযান বন্ধ থাকেনি। প্রতিটি থানাকে আরও বেশি সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।’’ বর্ষায় বালি তোলার বিষয়ে জেলা প্রশাসন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তার পরেও পুলিশ যথেষ্ট নজরদারি চালাচ্ছে বলে জানান ভাস্করবাবু।

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর জানুয়ারিতে জরিমানা বাবদ ৩ কোটি ৬৬ লক্ষ ২৯ হাজার টাকা আদায় করা হয়। তার পরে থেকেই শুরু হয় লোকসভার ভোটের প্রস্তুতি। ওই পরিস্থিতিতে অতিরিক্ত বালিবোঝাই বা বেআইনি বালি নিয়ে যাতায়াত করা গাড়ি ধরতে পুলিশি ‘নজর’ খানিক কম ছিল, দাবি প্রশাসনেরই একটি সূত্রের। ফেব্রুয়ারিতে ৮৬৫টি গাড়ি আটক করে পুলিশ। রাজস্ব আদায় হয়, ২ কোটি ২৮ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা। পরের মাসে বেআইনি ভাবে বালি পাচার করার জন্য পুলিশ ৯৯৩টি গাড়ি ধরে। জরিমানা আদায় হয়, পৌনে তিন কোটি টাকা।

Advertisement

তার পরে ভোট-পর্ব শুরু হওয়ায় তার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে পুলিশ। এপ্রিল, মে-তে বালির বেআইনি গাড়ি ধরার সংখ্যাটা নেমে আসে যথাক্রমে ৬৫২ ও ৩৩০টি। প্রভাব পড়ে জরিমানা আদায়েও। এপ্রিল ও মে-তে তা ছিল যথাক্রমে মোটে ১ কোটি ৮৭ লক্ষ টাকা ও ৮৭ লক্ষ টাকা! লোকসভা ভোটের ব্যস্ততা কাটিয়ে পুলিশ ফের বেআইনি বালির কারবার বন্ধে নজর দেয়। এমনকি, বর্ষার মরসুমেও বছরের অন্য সময়ের মতোই নজরদারি চালায় পুলিশ। পুলিশের দাবি, এই ‘নজরের’ ফলেই জুনে জরিমানার ওই অঙ্ক ছুঁয়েছে।

জেলা পুলিশ জানায়, বর্ষায় গত ২১ জুন থেকে জেলায় বালি তোলা বন্ধ করেছে জেলা প্রশাসন। আগাম অনুমতি ছাড়া বালি মজুত করে বিক্রি করাও বেআইনি বলে প্রশাসন জেলার সমস্ত বালি ঘাটের ইজারাদারদের জানিয়েছে। কিছু দিন আগে ডিএসপি (‌হেডকোয়ার্টার) শৌভিক পাত্র ও শক্তিগড়ের অফিসার ইনচার্জ সুব্রত বেরা বিভিন্ন এলাকায় বালির ঘাটের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন।

পুলিশ সুপার জানান, জেলা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা ঠিক মতো মানা হচ্ছে কি না দেখতে প্রতিটি থানা কঠোর নজর রাখছে। জেলা প্রশাসন জানায়, গত আর্থিক বছরে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর, পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে স্রেফ ‘ওভারলোডেড’ থেকেই ১২ কোটি ৭৩ লক্ষ টাকা আদায় করেছিল। সে জন্য জেলা পরিষদের বন ও ভূমির স্থায়ী সমিতিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, একই বালির ঘাট থেকে পরপর তিনবার ‘ওভারলোডেড’ গাড়ি ধরা পড়লে সেই বালির ঘাটে হানা দেবে জেলা প্রশাসনের ব্লক স্তরে থাকা যৌথ কমিটি ও সংশ্লিষ্ট থানা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন