বিজ্ঞাপনে ঢেকেছে গাছ, খুলে ফেলা হল হোর্ডিং

পেরেক দিয়ে গাছের গায়ে গর্ত করে বিজ্ঞাপনের বোর্ড টাঙানোর রেওয়াজ শহরে দীর্ঘদিনের। এর  আগে কয়েক বার তা খুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কয়েকদিনের মধ্যে সেই জায়গা দখল করেছে অন্য বোর্ড। ‘গ্রিন সিটি প্রজেক্ট’-এ শহর সাজিয়ে তোলার প্রক্রিয়া শুরুর পরে বৃহস্পতিবার থেকে ফের এক দফা গাছ থেকে বোর্ড খোলার উদ্যোগ শুরু হয়েছে দুর্গাপুরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৮ ০২:২০
Share:

সিটি সেন্টারে খুলে দেওয়া হচ্ছে ফ্লেক্স। শনিবার। নিজস্ব চিত্র

পেরেক দিয়ে গাছের গায়ে গর্ত করে বিজ্ঞাপনের বোর্ড টাঙানোর রেওয়াজ শহরে দীর্ঘদিনের। এর আগে কয়েক বার তা খুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কয়েকদিনের মধ্যে সেই জায়গা দখল করেছে অন্য বোর্ড। ‘গ্রিন সিটি প্রজেক্ট’-এ শহর সাজিয়ে তোলার প্রক্রিয়া শুরুর পরে বৃহস্পতিবার থেকে ফের এক দফা গাছ থেকে বোর্ড খোলার উদ্যোগ শুরু হয়েছে দুর্গাপুরে।

Advertisement

দুর্গাপুর শহরের প্রায় সর্বত্র দেখা যায়, গাছের গায়ে গর্ত করে পোঁতা পেরেকে ঝুলছে রকমারি বিজ্ঞাপনের বোর্ড ও ফ্লেক্স। গাছের ডালপালা থেকে গুঁড়ি, কিছুই বাদ যায় না। এমন বিজ্ঞাপন লাগানোর ঘটনা সব থেকে বেশি দেখা যায় শহরের বাণিজ্যকেন্দ্র সিটি সেন্টার এলাকায়। বন দফতরের কর্তাদের মতে, এর ফলে গাছগুলি শুকিয়ে মরে যেতে পারে। দূষণে জেরবার শহরে গাছের উপরে এমন অত্যাচারের বিরুদ্ধে শহরের বাসিন্দারা নানা সময়ে সরব হয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, পেরেকের প্রভাবে বেশ কিছু গাছ শুকিয়ে মরে গিয়েছে। মাঝে-মাঝে বোর্ড খোলায় উদ্যোগী হয়েছে বন দফতর। কিন্তু কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ায় ফের নতুন বোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছে বিজ্ঞাপনদাতারা।

কোনও গাছে বিজ্ঞাপন দিতে হলে সাধারণত বন দফতরের অনুমতি দরকার হয়। তা-ও গাছের গায়ে লোহা কিংবা পেরেক পোঁতার অনুমতি দেওয়া হয় না। বন দফতরের এক আধিকারিক জানান, কোনও অনুমতি না নিয়েই বেআইনি ভাবে গাছে-গাছে পেরেক পুঁতে বিজ্ঞাপনের বোর্ড ঝুলিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে যেমন গাছের ক্ষতি হচ্ছে, তেমনই পুরসভার রাজস্বও মার যাচ্ছে। তবে এই ধরনের বিজ্ঞাপন বন্ধ করার জন্য বন দফতরের হাতে কোনও নির্দিষ্ট আইন নেই বলে তাঁর দাবি। সেই সুযোগ নিয়ে থাকে বিজ্ঞাপনদাতারা। ওই আধিকারিকের মতে, এই ধরনের বিজ্ঞাপন বন্ধ করতে হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা জরুরি।

Advertisement

বন দফতর সূত্রে জানা যায়, দুর্গাপুরের বনাধিকারিক (ডিএফও) মিলনকুমার মণ্ডল সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে পুরসভার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি। এর পরেই বৃহস্পতিবার সিটি সেন্টার এলাকায় অভিযান হয়। পুরসভা ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কর্তাদের উপস্থিতিতে বনকর্মীরা হাজারেরও বেশি বোর্ড ও ফ্লেক্স গাছ থেকে খুলে দেন। পুরসভার তরফে ওই বোর্ড ও হোর্ডিংগুলিতে থাকা যোগাযোগের নম্বর সংগ্রহ করা হয়।

ডিএফও মিলনবাবু বলেন, ‘‘সিটি সেন্টার থেকে অভিযান শুরু হয়েছে। ধাপে-ধাপে সারা শহরেই তা হবে।’’ পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রিন সিটি প্রকল্পে রাজ্যের বরাদ্দ অর্থে শহরে সৌন্দর্যায়ন হচ্ছে। গাছের গায়ে এই ধরনের বিজ্ঞাপন সেখানে বেমানান। তাই পাকাপাকি ভাবে এমন বিজ্ঞাপন বন্ধের পদক্ষেপ শুরু হয়েছে। মেয়র দিলীপ অগস্তি জানান, বোর্ড ও ফ্লেক্স থেকে পাওয়া ফোন নম্বর ধরে ডেকে পাঠানো হবে বিজ্ঞাপনদাতাদের। সতর্ক করার পাশাপাশি জরিমানাও করা হবে। মেয়র বলেন, ‘‘এমন বেআইনি কাজ চলতে দেওয়া হবে না। শহর সুন্দর রাখতে কড়া নজরদারি চলবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন