প্রচারের প্রস্তুতি সারা, দাবি সব পক্ষের

আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের বিদায়ী সাংসদ বিজেপির। এ বারেও এই কেন্দ্রে প্রচারের ক্ষেত্রে কোনও রকম খামতি রাখতে চাইছেন না বিজেপি নেতৃত্ব। দলীয় সূত্রের খবর, দলের যুব সম্মেলন হয়েছে কয়েক দিন আগেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০১৯ ০১:৩৪
Share:

জোরকদমে: ইতিমধ্যেই লোকসভা ভোটের প্রস্তুতিতে শুরু হয়ে গিয়েছে নানা দলের দেওয়াল লিখন। বাঁ দিকে, দুর্গাপুরের সগড়ভাঙায়। ডান দিকে, আসানসোলে। নিজস্ব চিত্র

কারও ‘দেওয়াল-অধিকার’ করা সারা। কোনও দলের যুবকর্মীরা ইতিমধ্যেই জোরকদমে নেমে পড়েছেন মাঠে-ময়দানে। রবিবার লোকসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হওয়ার পরেই জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলিতে ভোট-প্রস্তুতি কার্যত তুঙ্গে উঠেছে। সব কটি দলের নেতৃত্বের কথায়, এখন শুধু অপেক্ষা দলীয় প্রার্থী ঘোষণার। প্রচারের প্রস্তুতির সব কাজই প্রায় সারা।

Advertisement

আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের বিদায়ী সাংসদ বিজেপির। এ বারেও এই কেন্দ্রে প্রচারের ক্ষেত্রে কোনও রকম খামতি রাখতে চাইছেন না বিজেপি নেতৃত্ব। দলীয় সূত্রের খবর, দলের যুব সম্মেলন হয়েছে কয়েক দিন আগেই। আসানসোল পুরসভার ১০৬টি ওয়ার্ডে কী ভাবে এবং কী প্রচার করবেন সেই যুবকর্মীরা, সেই সম্পর্কিত নির্দেশিকাও দেওয়া হয়ে গিয়েছে। জানা গিয়েছে, আসানসোল উত্তর, কুলটি, জামুড়িয়া-সহ বেশ কিছু এলাকায় বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন তাঁরা। এলাকায় মিছিল, সভাও করছেন তাঁরা।

পাশাপাশি, ভোট-প্রচারে যে সব ‘হেভিওয়েট’ নেতৃত্ব জেলায় আসবেন, তা চূড়ান্ত করার প্রস্তুতিও তুঙ্গে রয়েছে বলে জানান বিজেপি নেতৃত্ব। জোর প্রচার চলছে সোশ্যাল মিডিয়াতেও। ইতিমধ্যে, রবিবার থেকেই সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়কে রানিগঞ্জের চেলোদ, জামুড়িয়ার বেশ কিছু গ্রামে ঘুরে বেড়াতে দেখা গিয়েছে। দুর্গাপুরেও ‘মণ্ডলভিত্তিক’ বৈঠকগুলি হয়ে গিয়েছে। বিজেপির জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের বক্তব্য, ‘‘আমাদের প্রচার অত্যন্ত ভাল ভাবে চলছে। বিভিন্ন দল থেকে নাগাড়ে কর্মী, সদস্যেরা বিজেপি-তে যোগ দিচ্ছেন। এ বার প্রচারের গতি আরও বাড়বে।’’

Advertisement

• ভোট: ২৯ এপ্রিল
• মনোনয়ন জমা : ২-৯ এপ্রিল
• স্ক্রুটিনি: ১০ এপ্রিল
• প্রত্যাহারের শেষ দিন : ১২ এপ্রিল

তবে জেলার নানা প্রান্তের বাসিন্দাদের দাবি, ইতিমধ্যেই অন্য দলগুলির তুলনায় ‘দেওয়াল-অধিকার’ করায় অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে তৃণমূল। দু’-একটি জায়গায় এ-ও দেখা গিয়েছে, প্রার্থীর নামটুকু বাদ দিয়ে দেওয়াল লিখন সেরে ফেলেছে তৃণমূল। দলের যুব নেতৃত্বও প্রচার চালাচ্ছেন বলে জানান তৃণমূল নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, প্রচারে গণ সংগঠনগুলিকে বিশেষ ভাবে কাজে লাগানোয় জোর দেওয়া হচ্ছে। শনিবারই পাণ্ডবেশ্বরের কেন্দ্রায় যুব তৃণমূলের কর্মিসভা হয়। সেখানে বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি জানিয়েছিলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রতিটি এলাকায় দলের পাশাপাশি, বিভিন্ন গণ সংগঠনগুলিও কর্মিসভা করবে। বুথভিত্তিক কর্মিসভা করছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি ভি শিবদাসনও।

বারাবনিতে ইতিমধ্যেই দেখা গিয়েছে তৃণমূলের মোটরবাইক মিছিলও। ইতিমধ্যেই, মিটিং, মিছিলে তৃণমূল নেতৃত্ব জেলায় রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পক্ষেত্রের পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার ও বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। ভোট ঘোষণার পরে সেই ‘সুর’ আরও চড়বে বলে মনে করছেন তৃণমূলকর্মীরা। প্রস্তুতি প্রসঙ্গে ভি শিবদাসন বলেন, ‘‘দলের প্রার্থী কলকাতা থেকে নেত্রী ঘোষণা করবেন। আমাদের প্রস্তুতি প্রায় সারা। এ বার আসানসোলে আমরাই জিতব।’’

পাণ্ডবেশ্বর-সহ জেলার কিছু জায়গায় সিপিএমের দেওয়াল লিখন ইতিমধ্যেই দেখা গিয়েছে। তবে এলাকাবাসীর একাংশের মতে, সিপিএমের প্রচার বেশি দেখা যাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। আসানসোলের প্রাক্তন সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরী বলেন, ‘‘আমরা গোটা বছর ধরেই কাজ করি। ভোটের সময়ে সেই গতি কিছুটা বাড়ে। এ বারেও সেটাই হচ্ছে। আমরা ভোটের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত।’’ এআইসিসি সদস্য দেবেশ চক্রবর্তী অবশ্য জানান, এখনও সে ভাবে ভোটের প্রস্তুতি শুরু হয়নি। প্রার্থী বাছাইয়ের কাজও হয়নি। তবে জেলার প্রবীণ নেতা জানান, রাজ্যে যদি বাম-কংগ্রেস জোট হয় তবে আসানসোল ও বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রে সিপিএমরেই প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। যদিও তা নিয়ে এখনও আলোচনা চলছে বলে ওই নেতার দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন