চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ, মৃত্যু দু’জনের

গোলমালের মধ্যেই আসানসোলের রেলপার এলাকা থেকে নার্সিংহোমে আনা হয় বিনোদকুমার দাসকে (৪৫)। পরিবারের তরফে রিঙ্কু দাস অভিযোগ করেন, ‘‘জরুরি বিভাগে বেশ কিছুক্ষণ ডাকাডাকির পরে চিকিৎসক আসেন।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০১৮ ০৬:৪০
Share:

ভাঙচুরের পরে। নিজস্ব চিত্র

গাফিলতির অভিযোগে এক শিশুর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে গোলমাল শুরু হয়েছিল নার্সিংহোমে। কিছুক্ষণের মধ্যেই ফের আরও এক জন ব্যক্তির মৃত্যু হয়। এ ক্ষেত্রেও চিকিৎসায় গাফলতির নালিশ ওঠে। এর পরেই নার্সিংহোমে রোগীর পরিজনেরা ভাঙচুর চালান বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার রাতে আসানসোলের সেনর‌্যালে রোডের একটি নার্সিংহোমের ঘটনা।

Advertisement

মঙ্গলবার দুপুর তিনটে নাগাদ আসানসোলের ইএসআই হাসপাতাল থেকে আসানসোলের কুমারপুরের বাসিন্দা ছ’মাসের শিশুকন্যা খুশি ঘোষকে নার্সিংহোমে স্থানান্তরিত করানো হয়। শিশুটির বাবা অক্ষয়বাবু পুলিশকে জানান, মেয়ের শারীরিক অবস্থা খারাপ থাকায় তাকে সঙ্গে সঙ্গে ‘আইসিইউ’-তে পাঠানো হয়। অক্ষয়বাবুর অভিযোগ, ঘণ্টাখানেক বাদে তিনি মেয়ের খোঁজ করেন। কিন্তু হাসপাতালের তরফে কিছুই জানানো হয়নি। আবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ তাঁরা মেয়ের কথা জানতে চান। চিকিৎসকেরা ওই শিশুর স্বাস্থ্যপরীক্ষা করে জানান, খুশি মারা গিয়েছে। অক্ষয়বাবুর অভিযোগ, ‘‘প্রথম থেকেই বুঝতে পারছিলাম আইসিইউ-তে চিকিৎসায় গাফিলতি হচ্ছে।’’ অভিযোগ, নার্সিংহোমের সামনের দরজার কাচ ভেঙে ফেলেন পরিজনেরা। খবর পেয়ে পুলিশও চলে আসে।

গোলমালের মধ্যেই আসানসোলের রেলপার এলাকা থেকে নার্সিংহোমে আনা হয় বিনোদকুমার দাসকে (৪৫)। পরিবারের তরফে রিঙ্কু দাস অভিযোগ করেন, ‘‘জরুরি বিভাগে বেশ কিছুক্ষণ ডাকাডাকির পরে চিকিৎসক আসেন।’’ অভিযোগ, রোগীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরে তাঁকে মৃত ঘোষণা করে জরুরি বিভাগের ঘর থেকে বের করে দেওয়া হয়। এর পরে বিনোদবাবুর পরিবারের লোক জনও আগের গোলমালে যোগ দেন বলে অভিযোগ।

Advertisement

অভিযোগ, পুলিশের সামনেই নার্সিংহোমে ভাঙচুর চালানো হয়। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদেরও নিগ্রহ করা হয় বলে অভিযোগ। পরিস্থিতির সামল দিতে ঘটনাস্থলে আসে বিশাল পুলিশ বাহিনী ও কমব্যাট ফোর্স। চলে আসেন আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এডিসিপি ‌(‌সেন্ট্রাল) সায়ক দাস। তিনি মৃতের পরিজনদের লিখিত অভিযোগ জানানোর পরামর্শও দেন। কিছুক্ষণ পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। ওই নার্সিংহোমের জনসংযোগ আধিকারিক শুভব্রত চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘প্রাথমিক ভাবে চিকিৎসায় কোনও রকম গাফিলতি মেলেনি। ভাঙচুরের ঘটনায় অভিযোগ জানানো হয়নি। তবে পুলিশ পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখছে।’’ প্রশাসন বা স্বাস্থ্য দফতরেও কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। পশ্চিম বর্ধমানের অতিরিক্ত জেলাশাসক (স্বাস্থ্য) কস্তুরী বিশ্বাস বলেন, ‘‘অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখব।’’ স্বাস্থ্য দফতরেও কেউ অভিযোগ করেননি বলে জানিয়েছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস হালদার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন