কয়েক ঘণ্টার ব্যবধান। প্রথমে ফোনে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে কারখানা ছাড়লেন কর্মীরা। তার পরে শাসকদলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব এবং জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপের ফলে বিক্ষোভকারী ও কারখানা কর্তৃপক্ষের মধ্যে হল বৈঠক। দু’পক্ষেরই দাবি, বৈঠকে খুলেছে জট। তবে এ সবের মধ্যে মঙ্গলবারও দিনভর উৎপাদন বন্ধ থাকল কুলটি ওয়াগন কারখানায়।
সোমবার আসানসোল পুরসভার ৬৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর আখতার হুসেনের নেতৃত্বে ছাঁটাই হওয়া এক দল ঠিকাকর্মী কারখানার গেটে বিক্ষোভ দেখান। তার জেরে ওই দিন উৎপাদন বন্ধ হয়। এ দিন গেটে বিক্ষোভ না হওয়ায় কাজে যোগ দেন শ্রমিকদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, বেলা বাড়তেই, সকাল সাতটা-সাড়ে সাতটা নাগাদ বিভিন্ন নম্বর থেকে কাজে যোগ দেওয়া শ্রমিকদের মোবাইলে ফোন আসতে শুরু করে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই শ্রমিকদের অভিযোগ, বিক্ষোভকারীদের একাংশই ফোনে প্রাণনাশের হুমকি দেন।
ফলে মাঝপথে কাজ ফেলে চলে যেতে হয় তাঁদের।
পরিস্থিতির সামাল দিতে এর পরেই কারখানা কর্তৃপক্ষ রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক ও জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হন। তৃণমূল সূত্রের খবর, দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের নির্দেশে বেলা সাড়ে তিনটে নাগাদ কারখানা কর্তৃপক্ষ ও ওই কাউন্সিলর বৈঠকে বসেন। বৈঠকের শেষে আখতার বলেন, ‘‘কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরা সহমত হয়েছি। বিক্ষোভ তুলে নিচ্ছি। আগামীকাল থেকে কাজ শুরু হবে।’’ কারখানার মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক কে চন্দ্রশেখর বলেন, ‘‘দাবিগুলি পুনর্বিবেচনার আশ্বাস দিয়ে কাজ চালুর শর্ত দিয়েছি। আজ, বুধবার থেকে কাজ শুরু হবে।’’
তবে কারখানা কর্তৃপক্ষের, এই দু’দিনে সংস্থার কোটি টাকার উপরে ক্ষতি হয়েছে। নভেম্বরের মধ্যে নতুন, পুরনো মিলিয়ে প্রায় ছ’শো ওয়াগন তৈরি করতে হবে। উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে কি না, তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। তৃণমূলের জেলা শিল্পাঞ্চল সভাপতি ভি শিবদাসন এ দিন অবশ্য বলেন, ‘‘আমাদের সরকারের নীতি, আন্দোলনের নামে কারখানা বন্ধ চলবে না। এ ক্ষেত্রেও খবর পাওয়া মাত্রই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’’